ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ৫ আগস্ট–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য যুগপৎভাবে সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ সামনে এনেছে। তাই জটিলতা আছে গণতান্ত্রিক উত্তরণের। এমন এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে। আর সংলাপ শুধু আলোচনার স্বার্থে নয়। নিজেদের মধ্যে সংলাপ হতে হবে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ নিয়ে এ প্রত্যাশার কথা বলেছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা খোলাখুলিভাবে বাংলাদেশের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় ঢাকায় জাতিসংঘের দপ্তরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সম্ভাবনা এবং উদ্বেগ নিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন। অপতথ্য আর বিভ্রান্তিকর তথ্যের দৌরাত্ম্য কীভাবে বাংলাদেশের জন্য বিরাট প্রশ্নচিহ্ন ছুড়ে দিয়েছে, সে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য জুলাই-আগস্টে রক্ত দেওয়ার পরও শ্রমিকদের অধিকারের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে।

আলোচনায় এ বিষয়ও এসেছে যে দীর্ঘদিনের দুঃশাসনের ফলে কাঠামোগত পরিবর্তন হলেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের জনগণের এসব অংশের লোকজনের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

আন্তোনিও গুতেরেস আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জটিল। তবে ব্যবসা, বিনিয়োগের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবু বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কিছু বিষয়ে তাঁর আরও জানা প্রয়োজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি যে জটিল, তিনি এবার বাংলাদেশ সফরে এসে মতবিনিময়ের পর বুঝেছেন। তাই তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে।

আলোচনায় বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশে এসেছে, তাদের মধ্যে সংখ্যাগুরু মুসলমান। কিন্তু এর মধ্যে সংখ্যায় অল্প হলেও বৌদ্ধ এবং হিন্দু রোহিঙ্গাও রয়েছে, যারা মিয়ানমার ত্যাগ করেছে। তাদের মানবাধিকারের বিষয়ও যেন বিবেচনায় নেওয়া হয়।

একজন আলোচক বলেন, এখন সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে যেসব সুপারিশ এসেছে, সেগুলোতে যথাযথভাবে বহুমাত্রিক দৃষ্টির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তাই আদিবাসী ও অনেক সংখ্যালঘু নাগরিকদের ভয় হচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় সংবিধানে আবারও এক ভাষার, এক সংস্কৃতির এবং এক ধর্মের ভাবধারা প্রতিফলিত হতে যাচ্ছে।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাসরিন হক, তাসনীম সিদ্দিকী, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, শহিদুল আলম, কল্পনা আক্তার, আয়েশা কবীর, কল্পনা আক্তার প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক পর স থ ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের গণধোলাই দিয়ে প্রশাসন থেকে তাড়াতে হবে: কর্নেল অলি

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আওয়ামী ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের লোকজনকে এখনও সরাতে পারেনি। দুর্নীতিবাজ-লুটেরা কর্মকর্তাদের গণধোলাই দিয়ে প্রশাসন থেকে তাড়াতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। শেখ হাসিনার আত্মীয়-স্বজনসহ আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে গিয়ে সেখানে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে। তারা মুসলমান নন এবং এ দেশের নাগরিকও নন, ভবিষ্যতে তাদের এদেশে আর আসতে দেওয়া হবে না। 

শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়ায় রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপি’র ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশে কর্নেল অলি বলেন, ক্ষমতার লোভ না করে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করলে একদিন ক্ষমতা নিজে এসে হাতে ধরা দেবে। আওয়ামী লীগের লোকজন যাতে দলে ঢুকে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

পটিয়া উপজেলা এলডিপি’র সভাপতি মনছুর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপি’র সভাপতি এয়াকুব আলী। এলডিপি নেতা আবদুল কুদ্দুস ও আইয়ুব আলীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, চন্দনাইশ উপজেলা এলডিপির সভাপতি মোতাহের মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম, চন্দনাইশ পৌরসভা এলডিপির সভাপতি আইনুল কবির, এলডিপির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আহমদ নবী, এলডিপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ জাফর, বাশঁখালী পৌরসভা এলডিপির সভাপতি আনিসুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা এলডিপির সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী, পটিয়া পৌরসভা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, দোহাজারী পৌরসভা এলডিপির সভাপতি লিয়াকত আলী, পটিয়া পৌরসভা এলডিপির সহ-সভাপতি সামশুল আলম সিকদার, পটিয়া উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর সাদেক হোসেন, সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ পৌরসভা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, পটিয়া পৌরসভা এলডিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. রিজুয়ান আজাদ, গাজী আমির হোসেন, সদস্যসচিব মুজিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশিদ, আমিনুল হক তানিম, নাদেরুজ্জামান, সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ