কাভার্ডভ্যানে ফাঁকা গুলি, অগ্নিসংযোগ
Published: 15th, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানা থেকে বের হওয়া সুতাবোঝাই কাভার্ডভ্যানে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া বড়চালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে ওই কাভার্ডভ্যানের সামনের অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধনুয়া বড়চালা এলাকার পাশে নয়নপুরে রিদিশা গ্রুপের মালিকানাধীন ফর্মুলা-১ স্পিনিং লিমিটেড কারখানার অবস্থান। কয়েকদিন ধরে ওই কোম্পানির কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির স্থানীয় দুটি পক্ষের বিরোধ চলছে। কাভার্ডভ্যানে করে ঝুট নেওয়া হচ্ছে– এমন ধারণা থেকে হামলা হতে পারে। এদিন সকালেই কারখানা থেকে ঝুটবোঝাই দুটি গাড়ি বের হয়েছিল।
কাভার্ডভ্যানের চালকের আসনে ছিলেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফর্মুলা-১ স্পিনিং লিমিটেড কারখানার নিজস্ব কাভার্ডভ্যান ভর্তি করে সুতা নিয়ে যাচ্ছিলেন। ধনুয়া বড়চালা দাখিল মাদ্রাসার মোড় ছাড়িয়ে একটু সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে কাভার্ডভ্যানের গতিরোধ করা হয়। এ সময় হামলাকারীরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সঙ্গে সঙ্গে কাভার্ডভ্যানের সামনের অংশে অগ্নিসংযোগ করে। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে হামলাকারীরা চলে যায়। এ সময় তিনিসহ আশপাশের লোকজন আতঙ্কে দৌড়ে পালিয়ে যান।
ফর্মুলা-১ স্পিনিং লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘কারখানা থেকে আমাদের নিজস্ব কাভার্ডভ্যানে করে সুতা নেওয়া হচ্ছিল। দুর্বৃত্তরা এ কাভার্ডভ্যানে আক্রমণ চালিয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কাভার্ডভ্যানের আগুন নিয়ন্ত্রণ করি। চারটি ককটেলের খোসা উদ্ধার করে বালতিতে রাখি। পাশাপাশি পুলিশে খবর দেই।’
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই ঝামেলা চলছে। কারখানা থেকে ঝুট বের করা হচ্ছে এমন খবরে কোনো এক পক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কারা ঘটিয়েছে জানা যায়নি, জানতে তদন্ত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজির প্রতিবাদকারীর নামে মামলা দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা
ফেসবুক পোস্টে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের শাহিন মিয়ার নামে মানহানির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর ফারুক।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) মামলার দায়িত্বে থাকা কোতোয়ালী থানার তদন্ত অফিসার এসআই মো. শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি। এখন তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি জানা যাবে।”
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী মিলে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে ‘খাওন দাওন’ নামে একটি খাবারের দোকান চালু করেন। প্রাথমিকভাবে ব্যবসা ভালো চললেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষার কারণে সাময়িকভাবে দোকান বন্ধ রাখা হয়। এ সুযোগে জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ বিন হাসিম ও ওমর ফারুক দোকানের জায়গা দখলের চেষ্টা করেন এবং প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ জানান নৃবিজ্ঞান বিভাগের দোকানী ভুক্তভোগীরা।
শাহীন মিয়া ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “প্রতিদিন নাকি খাওন-দাওন নামে দোকানের শিহাবসহ পাঁচ বন্ধুর কাছে ৫০০ টাকা করে চেয়েছেন। শিহাব নিজেও একজন ছাত্রদলের কর্মী। এই ছেলেটা জুলাই আন্দোলনের সামনের সারির একজন যোদ্ধা। অথচ তার কাছেই আজ ছাত্রদলের অন্য গ্রুপের লোকেরা চাঁদা দাবি করে। কতটা ছোটলোক হলে একজন সিনিয়র তার ছোট ভাইয়ের কাছে চাঁদা দাবি করে!! একজন রানিং ব্যাচের শিক্ষার্থীর কাছে চাঁদা দাবি করে এমন একজন, যার এখন ছাত্রত্ব নেই।”
তিনি আরো লিখেছেন, “ছাত্রদল ক্ষমতায় আসার আগেই এরা নিজের দলের লোকজনের কাছেই চাঁদাবাজি শুরু করছে। তাহলে যারা সাধারণ, তারা কতটা নিরাপদ এদের কাছে!!?”
পোস্টের বিষয়ে শাহীন মিয়া বলেন, “পোস্ট করার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ওমর ফারুক ভাই (আমি তাকে চিনিও না ভালো করে) আমার নামে পুলিশে মানহানির অভিযোগ দায়ের করেছেন । অথচ অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল শিহাবের। কারণ ওর দোকান উঠিয়ে দিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “১০০ বার চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলবো। তাতে যদি আমার ফাঁসি হয় হবে; মাথা পেতে মেনে নেব।”
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিহাব বলেন, “জুলাইয়ে পরে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ছোটখাটো ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেই। আমরা নিজের জমানো প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়ে শুরু করি। আমরা নভেম্বর থেকে শুরু করেছি। মাঝখানে আমাদের পরীক্ষা ও ফিল্ডওয়ার্ক ছিল। এরপর আবার রোজা চলে আসে। এই সময়ের মধ্যে আমাদের একজনকে কল দিয়ে প্রতিদিনের ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর ফারুক বলেন, “আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেন তারা। আমি এজন্যই মানহানির অভিযোগ করেছি। সুষ্ঠু তদন্ত করবে পুলিশ। আমি বিষয়টা দেখতে চাই এবং মামলার বিষয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেব।”
গত ২৭ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের দোকান দখল, চাঁদাবাজির অভিযোগে ওমর ফারুককে শোকজ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী