Samakal:
2025-03-16@14:05:12 GMT

বড় লোকসানের শঙ্কায় আলুচাষি

Published: 15th, March 2025 GMT

বড় লোকসানের শঙ্কায় আলুচাষি

গত বছর আলুর দাম বেশি পাওয়া গিয়েছিল। এবারও এমন দাম মিলবে বলে আশা ছিল কৃষক মো. ইয়াসিন শেখের। সে জন্য চলতি মৌসুমে বেশি দামে আলুবীজ কেনেন। জমি ভাড়ার জন্যও খরচ হয় বাড়তি টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮ বিঘা জমিতে তিনি আলু চাষ করেন। কিন্তু এ মৌসুমে তাঁর জমিতে উৎপাদিত আলুর আকার হয়েছে ছোট। দরও মিলছে কম। আনুষঙ্গিক নানা কারণ বিশ্লেষণ করে সিরাজদীখানের গোবরদী গ্রামের ইয়াসিন শেখ বলেন, মনে হচ্ছে এ বছর লোকসানে পড়তে হবে। 
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলাজুড়ে আলু তোলার উৎসবের মধ্যেই ইয়াসিনের মতো হাজারো চাষির কপালে দরপতন নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা গেছে। তারা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে আলু চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় উঁচু জমিতে আলুর ফলন ভালো হয়নি। পরিপূর্ণ হতে না পাওয়া আলু আকারেও হচ্ছে ছোট। তবে লামি (নিচু) জমিতে ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। যদিও গত বছরের তুলনায় এ বছর আলু চাষ বেশি হয়েছে। আলু বীজ, জমি খরচ, হিমাগারে সংরক্ষণ ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাজার দর অনুযায়ী বিক্রি করতে গিয়ে আলুতে লোকসান হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জমি থেকে ডায়মন্ড, এস্টারিক্স জাতের আলু জমিতে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫ টাকা দরে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সিরাজদীখানের ৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর ২২৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। 
গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আলু তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে কৃষককে। অনেকে আলু বস্তাবন্দি করে বিক্রি বা সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার ১০টি হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৭৩ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন। অথচ এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪৩ মেট্রিক টন। চাষিরা অতিরিক্ত আলু বাড়িতে প্রাকৃতিকভাবেই সংরক্ষণ করেন। অনেক চাষি জমিতেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। 
উপজেলার পশ্চিম রশুনিয়া গ্রামে জাহাঙ্গীর আলম এবার আমি ১৬০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেন। প্রতি বিঘায় ৮০ বস্তা আলু হয়েছে (১ বস্তায় ৫৫ কেজি)। গত বছরের তুলনায় আলু কম হয়েছে ৩০ বস্তা। হিমাগারে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি বস্তা আলু জাহাঙ্গীর বিক্রি করেছেন ৯০০-৯৫০ টাকায়। এ হিসাবে তাঁর লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ লাখ টাকা। 
বড়পাউলদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুম শেখ বলেন, ‘এবার আমি ৬০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৮০ মণ ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে বিক্রি করতে হলে বিঘা প্রতি লোকসান হবে ৪০ হাজার টাকা। ৬০ বিঘা জমিতে প্রায় ১৬ লাখ টাকার মত লোকসান হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরের চেয়ে আবাদি জমির পরিমাণ ও উৎপাদন বেড়েছে। যদিও এ বছর সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে কৃষকের সেচ খরচ বেশি গুণতে হয়েছে। তবে আলু আকারে ছোট হয়েছে। তাঁর আশা, এবার কৃষক কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল গত বছর উপজ ল এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত: গোলাম পরওয়ার

অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের ‘রোডম্যাপ’ (রূপরেখা) ঘোষণা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, অহেতুক কোনো বিলম্ব না করে জাতির আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন, সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পূর্ণ করে অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত।

আজ রোববার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সঠিক উত্তরণ ও সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যয়বিচারের যে মূল লক্ষ্য, সেটা অর্জনের জন্য সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন।’

জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, অন্তত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে অবিলম্বে একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে নির্বাচনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা প্রয়োজন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৫–১৬ বছরে জাতির প্রতি যারা অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়েছে; নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা চালিয়েছে; তাদের বিচারের জন্য যে ট্রাইব্যুনাল হয়েছে; যে আইন হয়েছে; এটাকে আরও ত্বরান্বিত করে জাতির সামনে সেই বিচারও দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন। যাতে জনগণ জানে, ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে মুক্ত হওয়া গণতন্ত্রের এই অভিযাত্রা আর কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

এই আস্থা অর্জনের জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিচারের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যারা প্রকৃত অপরাধী, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা হয়েছে, তাদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা উচিত বলে মনে করে জামায়াত। দলটির সেক্রেটারি জেনারেলের ভাষ্য, এ ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে।

প্রতিটি দলের ছোটখাটো কিছু মতপার্থক্য থাকতেই পারে, উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা–উত্তর এই বাংলাদেশে শান্তি–কল্যাণের জন্য মৌলিক বিষয়গুলোতে যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি জাতীয় ঐক্যের স্পিরিট (চেতনা) নিয়ে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে জাতিকে সংঘবদ্ধ রাখতে পারি, সবার কাছে সেই আহ্বান জানাচ্ছি।’

ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ