Samakal:
2025-04-14@09:51:38 GMT

বড় লোকসানের শঙ্কায় আলুচাষি

Published: 15th, March 2025 GMT

বড় লোকসানের শঙ্কায় আলুচাষি

গত বছর আলুর দাম বেশি পাওয়া গিয়েছিল। এবারও এমন দাম মিলবে বলে আশা ছিল কৃষক মো. ইয়াসিন শেখের। সে জন্য চলতি মৌসুমে বেশি দামে আলুবীজ কেনেন। জমি ভাড়ার জন্যও খরচ হয় বাড়তি টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮ বিঘা জমিতে তিনি আলু চাষ করেন। কিন্তু এ মৌসুমে তাঁর জমিতে উৎপাদিত আলুর আকার হয়েছে ছোট। দরও মিলছে কম। আনুষঙ্গিক নানা কারণ বিশ্লেষণ করে সিরাজদীখানের গোবরদী গ্রামের ইয়াসিন শেখ বলেন, মনে হচ্ছে এ বছর লোকসানে পড়তে হবে। 
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলাজুড়ে আলু তোলার উৎসবের মধ্যেই ইয়াসিনের মতো হাজারো চাষির কপালে দরপতন নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা গেছে। তারা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে আলু চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় উঁচু জমিতে আলুর ফলন ভালো হয়নি। পরিপূর্ণ হতে না পাওয়া আলু আকারেও হচ্ছে ছোট। তবে লামি (নিচু) জমিতে ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। যদিও গত বছরের তুলনায় এ বছর আলু চাষ বেশি হয়েছে। আলু বীজ, জমি খরচ, হিমাগারে সংরক্ষণ ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাজার দর অনুযায়ী বিক্রি করতে গিয়ে আলুতে লোকসান হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জমি থেকে ডায়মন্ড, এস্টারিক্স জাতের আলু জমিতে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫ টাকা দরে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সিরাজদীখানের ৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর ২২৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। 
গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আলু তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে কৃষককে। অনেকে আলু বস্তাবন্দি করে বিক্রি বা সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার ১০টি হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৭৩ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন। অথচ এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪৩ মেট্রিক টন। চাষিরা অতিরিক্ত আলু বাড়িতে প্রাকৃতিকভাবেই সংরক্ষণ করেন। অনেক চাষি জমিতেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। 
উপজেলার পশ্চিম রশুনিয়া গ্রামে জাহাঙ্গীর আলম এবার আমি ১৬০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেন। প্রতি বিঘায় ৮০ বস্তা আলু হয়েছে (১ বস্তায় ৫৫ কেজি)। গত বছরের তুলনায় আলু কম হয়েছে ৩০ বস্তা। হিমাগারে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি বস্তা আলু জাহাঙ্গীর বিক্রি করেছেন ৯০০-৯৫০ টাকায়। এ হিসাবে তাঁর লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ লাখ টাকা। 
বড়পাউলদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুম শেখ বলেন, ‘এবার আমি ৬০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৮০ মণ ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে বিক্রি করতে হলে বিঘা প্রতি লোকসান হবে ৪০ হাজার টাকা। ৬০ বিঘা জমিতে প্রায় ১৬ লাখ টাকার মত লোকসান হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরের চেয়ে আবাদি জমির পরিমাণ ও উৎপাদন বেড়েছে। যদিও এ বছর সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে কৃষকের সেচ খরচ বেশি গুণতে হয়েছে। তবে আলু আকারে ছোট হয়েছে। তাঁর আশা, এবার কৃষক কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল গত বছর উপজ ল এ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার লাঠির আঘাতে বিএনপি নেতা নিহত

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর রশিদ (৫৫)। তিনি কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন রশিদ। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমিত হাসান। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা। কালারমারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে রয়েছেন তিনি।

নিহত রশিদের ভাতিজা জাহেদ হাসান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় একটি পুকুরপাড়ে তাঁর চাচা আবদুর রশিদের সঙ্গে অমিত হাসানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে অমিত হাসান ও তাঁর বড় ভাই কামরুল হাসান লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আবদুর রশিদকে আহত করেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এখলাছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত আবদুর রশিদ ইউনিয়ন বিএনপির অন্যতম সদস্য। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতার নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে অমিত হাসানের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামরুল হাসানকে আটক করেছে। অমিত হাসানকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ