হালদার বেড়িবাঁধের মাটিও কেটে নিচ্ছে ওরা
Published: 15th, March 2025 GMT
ফটিকছড়িতে থামানো যাচ্ছে না মাটিখেকোদের তৎপরতা। অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে এবং কারাদণ্ড দিলেও থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় দেদার চলছে মাটি কাটার কার্যক্রম। কৃষকের ফসলি জমির উপরিভাগ, খালের চর, খাসজমি ও টিলা-পাহাড় তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। বাদ যাচ্ছে না হালদা নদীর বেড়িবাঁধও।
মাটি কাটার অপরাধে গত বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মো.
স্থানীয়রা জানান, এমরান আগেও একইভাবে মাটি কাটতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তার দৌরাত্ম্য কমেনি। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক অভিযানে জরিমানা করা হলেও তাকে থামানো যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির কিছু নেতার আশীর্বাদে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গহিরা-হেঁয়াকো সড়কের পাশে নারায়ণহাট গরু বাজারের কাছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে রাতে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত বিশাল জমির মাটি কাটা হচ্ছে। প্রায় ৫-৭ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ইটভাটা, কারখানা ও ভিটা ভরাট করার কাজে। সেখানে একসঙ্গে একাধিক ডাম্প ট্রাক ও এক্সক্যাভেটর কাজ করছে। এতে পাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন শত শত একর ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ডাম্প ট্রাক চালক মো. ইউসুফ বলেন, প্রতি গাড়ি ৮৫০ টাকায় পাশের ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছি। কে কী বলল, তা আমার দেখার বিষয় নয়। এসব মাটির কারবারি এমরান নিজেই দেখাশোনা করেন। আমাদের কেউ বাধা দেয়নি বা আপত্তিও করেনি।
স্থানীয়রা বলছেন, মাটিখেকো এমরান সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশিদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর তিনিও দলীয় পরিচয় পাল্টেছেন। স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবছার ও বালু জাফরের ছত্রছায়ায় এমরান আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে এমরান বলেন, ‘আমি মাটি কাটিনি। মাটি কাটার জন্য গাড়ি সরবরাহ করেছি। মাটি কেটেছে বিএনপির আবছার।’
অন্যদিকে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবছার বলেন, ‘আমি মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত নই। মূলত মাটি কাটে এমরান। আমি আমার দলীয় কর্মীদের জন্য কিছু খরচ চেয়েছি মাত্র।’ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহির আজম চৌধুরী বলেন, কেউ যদি দলের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ কোনো কাজে জড়িত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণহাট ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহকারী কর্মকর্তা শেখ শরফুদ্দিন খান সাদী বলেন, জায়গাটি পরিদর্শন করে মাটি কাটার সত্যতা পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বালু ও মাটি পাচার রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত আছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম উপজ ল এমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে সমন্বয়কের পিতাকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি এনসিপির
কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের এক সমন্বয়কের পিতাকে উপজেলার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা ও বিচারের দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শুক্রবার কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে জুলাই অভ্যুত্থানের সমন্বয়ক সাইদুল হুদার পিতা হাবিবুল হুদাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হামলায় সাইদুল হুদার পরিবারের আরও তিন সদস্য আহত হয়েছেন।
এনসিপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক এর আগে বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দী ছিল। এদিকে এই ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কেউই আইনের আওতায় আসেনি, যা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি এই হত্যা ও হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যককে অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানায়।
আরও পড়ুনকক্সবাজারে গুলি করে এক ব্যক্তিকে হত্যা১১ ঘণ্টা আগে