যেভাবে কাটিয়ে উঠবেন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা
Published: 15th, March 2025 GMT
নানান ব্যস্ততায় বেড়ে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা। এই অ্যাবসেন্ট মাইন্ড বা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কাটানোর ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম বা কৌশল নেই। এ ক্ষেত্রে চাইলে আপনি নিজের জন্য আলাদা কোনো কৌশল খুঁজে বের করতে পারেন। চলুন, একজন অ্যাবসেন্ট মাইন্ডেড মানুষের মুখোমুখি হই–
আপনি কি সেই লোক: অস্বাভাবিক কিছু না। আপনিও হতে পারেন সেই লোক। যিনি নিজেই আপনাকে বলে যাচ্ছেন, তিনি একসঙ্গে অনেক ব্যাপারে মাথা ঘামাতে অপছন্দ করেন। এ ছাড়া তিনি খুবই অন্যমনস্ক। রিমাইন্ডার ছাড়া কোনো কাজই করতে পারেন না। এ ছাড়া তার যে কোনো কাজে দেরি করার অভ্যাস।
যে কোনো কাজে দেরি: সময়ের ভুল হিসাব করি অনেকেই। যেমন– আমার অনলাইন ক্লাস সকাল ৯টায়। তাহলে বসলেই শুরু হবে ক্লাস– এই ভেবে আমি মোবাইলে বা ল্যাপটপে নেট অন করি ৮টা ৫৫ মিনিটে। তখনই মনে হয় আমার প্রয়োজনীয় বই গোছানো হয়নি অথবা আমার হেড ফোনটা খুঁজে পাচ্ছি না। ফলে ক্লাসে দেরি হয়ে যায়।
ভুলে গেলেন: ঘুরতে গিয়ে বা শপিংয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারলেন, পর্যাপ্ত টাকা নেই সঙ্গে। বা হুট করেই সেলফোনের ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেল। এমনও হতে পারে যে, ভালো প্রস্তুতির পরও ক্যালকুলেটর অথবা ঘড়ি সঙ্গে নিতে ভুলে গেলেন।
কাজের পুনরাবৃত্তি: যে কোনো ধরনের কাজ পুনরাবৃত্তি অপছন্দ করেন। যদিও আপনি ওই কাজে পারদর্শী নন। ধরুন, আপনি রেস্টুরেন্টের কিচেনে কাজ করতেন। তখন আপনি খুব বাজে সময় কাটাতেন। কারণ, সেখানে একত্রে নানান কাজ করতে হতো আপনাকে।
খেয়াল রাখতে পারেন: ওপরের প্রতিটি ঘটনার জন্য আলাদা সমাধান দেওয়া যেতে পারে। অনেকেই বলতে পারেন, এসব ব্যাপার এড়ানো খুব সহজ। বাস্তবে এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে ওঠা খুব কঠিন। তবে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে আপনি এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনি খেয়াল রাখতে পারেন–
দিনের শেষে এবং সকালে: রুটিন ও চেকলিস্ট ভুলে যাওয়ার অভ্যাস রোধে এ ব্যাপারটি অনুসরণ করতে পারেন। নিয়মিত দিনের শেষদিকে আপনার মোবাইল ফোনে চার্জ দিন ও সকালের দিকে মোবাইলটি চার্জার থেকে ডিসকানেক্ট করুন।
টাইমার: মোবাইল ফোন কিংবা হাতঘড়ির টাইমারটা ওপেন করে কাজ শুরু করুন।
নির্ধারিত জায়গা: এটি একটি নির্ধারিত জায়গা, যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা থাকবে। যেন বাসা থেকে বের হওয়ার পথ সহজেই খুঁজে পান।
হাত বাড়িয়ে দিন: যে কাজে আপনার কম দক্ষতা, তার সমাধানে অভিজ্ঞ কাউকে খুঁজুন। তবে সব কাজে এটি সম্ভব নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনিও অন্য কাউকে সাহায্য করতে পারেন।
নেভার বি লেট এগেইন: ‘নেভার বি লেট এগেইন’– এ বইটি পড়তে পারেন। বইটি থেকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন। এ ছাড়াও ভুলে যাওয়ার অভ্যাস রোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে– গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্দিষ্ট সাইটে সংরক্ষণ করে রাখা। সামনের জরুরি কাজ ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখা। u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
আছিয়া চলে গেলো, আমরা কি প্রতিবাদ থামিয়ে দেবো?
মাগুরার আছিয়া চলেই গেলো! যাওয়ার আগে পুরো বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে গেলো। মনে দাগ কাটেনি- এমন মানুষ পাওয়া ভার। তার সাথে কি হয়েছিলো কেন হয়েছিলো- তা দেশশুদ্ধ সবাই জানে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কি কি শাস্তি হওয়া উচিত, তা নিয়েও পুরো দেশে হইচই হচ্ছে। এ বয়সী কন্যা ঘরে ঘরে আছে। আকারে ইঙ্গিতেও একে সমর্থন করার কোন উপায় নেই। মাগুরার ঘটনা প্রথম ঘটনা নয়। এর আগেও বহুবার এই জাতীয় ভয়ংকর বিকৃত অপরাধ ঘটেছে, আমরা শোরগোল করেছি, তারপর ভুলে গেছি। ভুলতে পারে না কেবল সেই পরিবার। কিন্তু তাদের খবর আর কে রাখে! কেবল শিশু নয়, নারী নির্যাতনও বাড়তির দিকে।
মানুষের ভেতর অপরাধ প্রবণতা থাকে। সব দেশে, সব সমাজেই থাকে। যেকোনো নির্যাতনের প্রথম শিকার হয় দুর্বলেরা। দুর্বলতার দিক থেকে সবচেয়ে নিচের স্তরে আছে প্রাণীরা, যারা এই পৃথিবীতেই থাকে কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারে না। তাদের ভাষা থাকলেও আমরা বুঝি না এবং তাদের জন্য কোন আইন আদালত থাকলেও তারা নিজে নিজে যেতে পারে না। সমাজে নিষ্ঠুরতার প্রথম শিকার হয় প্রাণীরা। মন চাইলেই আমরা কুকুর বিড়ালের দিকে ঢিল এমনকি গরম পানি ছুঁড়ে মারি, মেরে ফেলতেও দ্বিধা করি না এবং একে অন্যায় বলেও মনে করি না। বরং বিকৃত আনন্দ পাই। গত ১০ই মার্চ বরগুনা সদরে একটি গুলিবিদ্ধ মদনটাক পাখি আহত হয়ে তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় আশ্রয় নেয়। ৭ থেকে ১০ বছর বয়েসি কিছু শিশু পাখিটিকে দেখতে পেয়ে এলাকার অভিভাবকদের জানায়। এবং এলাকার লোকজন উল্লাস করে পাখিটিকে জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেয়। শিশুরা কি শিখল? যে দুর্বল গুলিবিদ্ধ পাখিটি প্রাণ বাঁচাতে মানুষের কাছে এসেছিল, সেই মানুষ উল্লাস করে তাকে মেরে খেল! এই নিষ্ঠুরতা দেখে বড়ো হয়ে তারা কি নিষ্ঠুরতাকেই স্বাভাবিক মনে করবে না? ঠিক তার পরের দিন ১১ই মার্চ রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলায় একটি মা হাতি ৯০ কেজি ওজনের একটি বাচ্চা পেটে নিয়ে পাহাড়ি এলাকায় টানা কয়েকদিন স্থানিয়দের তাড়া খেয়ে ধকল সইতে না পেরে মৃত্যুবরণ করে। মানুষ মায়ের কষ্টের চাইতে হাতি মায়ের কষ্ট কোনভাবেই কম থাকার কথা না। কতো কষ্ট পেয়ে সেই মা মৃত্যুবরণ করেছে কিংবা মৃত্যুর আগে মানুষ সম্পর্কে কি কি ভেবেছে, তা আমরা জানি না। জানার প্রয়োজন ও বোধ করি না। এগুলো সমাজে অহরহই ঘটছে। এই সবই ভয়াবহ নিষ্ঠুরটা!
সমাজে বর্বরতার প্রথম শিকার হয় প্রাণী, তারপর নারী , দরিদ্র, তারপর শিশু। কারণ তারা দুর্বল। সবলেরা তাদের পেয়ে বসে। দুর্বল-সে যেই হোকনা কেন, নির্যাতন অপরাধ। সব নির্যাতনের বিরুদ্ধে হইচই হলে নিপীড়ক, খুনি, ধর্ষকদের অপরাধ প্রবণতা কমবে। বেছে বেছে প্রতিবাদ নয়, প্রতিবাদ হোক দুর্বলের প্রতি সব অপরাধের বিরুদ্ধে!আমরা যেন প্রতিবাদ থামিয়ে না দেই।
আরো পড়ুন:
জাপানিরা ড্রয়িং রুম যেভাবে সাজায়
নখের যে রং গুরুতর রোগের জানান দেয়
ঢাকা/লিপি