Samakal:
2025-03-15@21:16:13 GMT

জানুয়ারি থেকে কমছে অপরাধ

Published: 15th, March 2025 GMT

জানুয়ারি থেকে কমছে অপরাধ

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাঙামাটিতে খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ কিছুটা বেড়ে যায়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। কমেছে অপরাধসহ মামলা দায়েরের সংখ্যা। গত সাত মাসে জেলার ১২ থানা ও আদালতে ৭৯৮টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আদালতে ৬০৬টি ও থানায় ১৯২টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।  
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলা শহরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনায় অনিক চাকমা নামের এক কলেজছাত্র নিহত ও অর্ধশতের বেশি আহত হয়। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষক কার্যালয়সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। তখন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় আতঙ্কিত ছিল মানুষ। তবে পরের দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়।
প্রায় সাত লাখ মানুষ অধ্যুষিত রাঙামাটি জেলায় ১০টি উপজেলা রয়েছে। রাঙামাটি সদর, কাউখালী, রাজস্থলী, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচরে একটি করে থানা থাকলেও বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাইয়ের দুটি করে থানা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১২ মার্চ পর্যন্ত ১২ থানা ও আদালতে ৭৯৮টি মামলা হয়েছে। আদালতে মামলা (সিআর মামলা) হয়েছে ৬০৬টি। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা রয়েছে ৪৬টি। থানায় মামলা (জিআর) হয়েছে ১৯২টি। গত বছরের আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে  ১২৬টি এবং চলতি বছরের আড়াই মাসে ৬৬টি মামলা দায়ের হয়েছে।   
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সাত মাসে রাঙামাটি জেলায় খুন, চাঁদাবাজি, চুরিসহ নানা অপরাধ কিছুটা বেড়েছে। তবে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এ অপরাধের সংখ্যা কম। আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্ষন্ত কিছুটা অপরাধ বাড়তি থাকলেও জানুয়ারি থেকে তা কমে এসেছে। ৭ নভেম্বর বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে একটি বন্দুক ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
গত ২৪ ডিসেম্বর কাপ্তাইয়ের রাইখালী ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় ২ নম্বর রাইখালী যুবলীগের সহ-সভাপতি ওবায়েদ উল্লাহকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২৬ জানুয়ারি নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়িতে দুর্বৃত্তরা চাঁদা না পেয়ে ৪টি মোবাইল টাওয়ারের তার কেটে দেয়। ১৫ জানুয়ারি নিরাপত্তা বাহিনী ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। ২ ফেব্রুয়ারি কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া এলাকায় শিলা নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এর পরদিন এক শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।   

কাউখালী থানায়  গত সাত মাসে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২টি খুন, ১টি নারী নির্যাতন, ১টি ধর্ষণ, ১টি চুরি, ১টি বিস্ফোরক মামলা, ১৬টি মাদক মামলা, ১টি চোরাচালান মামলা ও অস্ত্র মামলা ১টি।  
জেলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট প্রতীম রায় পাম্পু বলেন, ‘রাঙামাটিতে অপরাধের ঘটনা অন্য জেলা থেকে তুলনামূলকভাবে কম। তবে সাম্প্রদায়িক মামলা কিছুটা বেড়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর একটি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের বিরোধে খুনের মামলা হয়েছে ১টি। রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই ও কাউখালীতে ৩টি মামলা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কতোয়ালী থানায় ২টি মামলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার সংখ্যা বাড়তির দিকে থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত মামলা কিছুটা কমে গেছে।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ বলেন, ‘চাদাঁবাজির বিশেষ কোন মামলা হয়নি। এছাড়া ডাকাতির মামলাও থানায় হয়নি। তবে আদালতের মাধ্যমে একটি মামলা হয়েছে। আর যেসব খুন মারামারিসহ অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে দোষীদের  চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাউখালীতে শিলা হত্যা ও কাপ্তাইয়ে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অপরাধ ও মামলার সংখ্যা বাড়েনি।’


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ বছর র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

জানুয়ারি থেকে কমছে অপরাধ

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাঙামাটিতে খুনসহ বিভিন্ন অপরাধ কিছুটা বেড়ে যায়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। কমেছে অপরাধসহ মামলা দায়েরের সংখ্যা। গত সাত মাসে জেলার ১২ থানা ও আদালতে ৭৯৮টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আদালতে ৬০৬টি ও থানায় ১৯২টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।  
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি জেলা শহরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনায় অনিক চাকমা নামের এক কলেজছাত্র নিহত ও অর্ধশতের বেশি আহত হয়। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষক কার্যালয়সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। তখন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় আতঙ্কিত ছিল মানুষ। তবে পরের দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়।
প্রায় সাত লাখ মানুষ অধ্যুষিত রাঙামাটি জেলায় ১০টি উপজেলা রয়েছে। রাঙামাটি সদর, কাউখালী, রাজস্থলী, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচরে একটি করে থানা থাকলেও বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাইয়ের দুটি করে থানা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১২ মার্চ পর্যন্ত ১২ থানা ও আদালতে ৭৯৮টি মামলা হয়েছে। আদালতে মামলা (সিআর মামলা) হয়েছে ৬০৬টি। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা রয়েছে ৪৬টি। থানায় মামলা (জিআর) হয়েছে ১৯২টি। গত বছরের আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে  ১২৬টি এবং চলতি বছরের আড়াই মাসে ৬৬টি মামলা দায়ের হয়েছে।   
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সাত মাসে রাঙামাটি জেলায় খুন, চাঁদাবাজি, চুরিসহ নানা অপরাধ কিছুটা বেড়েছে। তবে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এ অপরাধের সংখ্যা কম। আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্ষন্ত কিছুটা অপরাধ বাড়তি থাকলেও জানুয়ারি থেকে তা কমে এসেছে। ৭ নভেম্বর বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে একটি বন্দুক ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
গত ২৪ ডিসেম্বর কাপ্তাইয়ের রাইখালী ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় ২ নম্বর রাইখালী যুবলীগের সহ-সভাপতি ওবায়েদ উল্লাহকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২৬ জানুয়ারি নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়িতে দুর্বৃত্তরা চাঁদা না পেয়ে ৪টি মোবাইল টাওয়ারের তার কেটে দেয়। ১৫ জানুয়ারি নিরাপত্তা বাহিনী ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। ২ ফেব্রুয়ারি কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া এলাকায় শিলা নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এর পরদিন এক শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।   

কাউখালী থানায়  গত সাত মাসে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২টি খুন, ১টি নারী নির্যাতন, ১টি ধর্ষণ, ১টি চুরি, ১টি বিস্ফোরক মামলা, ১৬টি মাদক মামলা, ১টি চোরাচালান মামলা ও অস্ত্র মামলা ১টি।  
জেলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট প্রতীম রায় পাম্পু বলেন, ‘রাঙামাটিতে অপরাধের ঘটনা অন্য জেলা থেকে তুলনামূলকভাবে কম। তবে সাম্প্রদায়িক মামলা কিছুটা বেড়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর একটি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের বিরোধে খুনের মামলা হয়েছে ১টি। রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই ও কাউখালীতে ৩টি মামলা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কতোয়ালী থানায় ২টি মামলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার সংখ্যা বাড়তির দিকে থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত মামলা কিছুটা কমে গেছে।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ বলেন, ‘চাদাঁবাজির বিশেষ কোন মামলা হয়নি। এছাড়া ডাকাতির মামলাও থানায় হয়নি। তবে আদালতের মাধ্যমে একটি মামলা হয়েছে। আর যেসব খুন মারামারিসহ অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে দোষীদের  চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাউখালীতে শিলা হত্যা ও কাপ্তাইয়ে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অপরাধ ও মামলার সংখ্যা বাড়েনি।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ