দেশে তৈরি পাঞ্জাবি বিক্রি করা হচ্ছিল ভারতের তৈরি বলে। নেওয়া হচ্ছিল বাড়তি দাম। এসব পোশাক কেনার কোনো রসিদও দেখাতে পারেননি দোকানমালিকেরা।

এভাবে ট্যাগ পাল্টে ঈদের বাজারে পাঞ্জাবি বিক্রি করছিল চট্টগ্রাম নগরের রেয়াজউদ্দিন বাজারের সেলিম পাঞ্জাবি মিউজিয়াম ও পরিস্থান নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। প্রতারণার দায়ে প্রতিষ্ঠান দুটিকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

আজ শনিবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। পরে অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেলিম পাঞ্জাবি মিউজিয়ামে বাংলাদেশে তৈরি বিভিন্ন ধরনের পাঞ্জাবি ভারতের তৈরি বলে ট্যাগ দেওয়া হয়। এসব পাঞ্জাবি বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি দামে। এসব পাঞ্জাবির দেশি-বিদেশি কোনো রকম ক্রয় রসিদ দেখাতে পারেননি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। অভিযানে কারচুপির কথা স্বীকার করেন তাঁরা। এ জন্য ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই এলাকার পরিস্থান নামের একটি পোশাক বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশে তৈরি পাঞ্জাবি ভারতের বলে বিক্রি করছিল। কিছু পাঞ্জাবির ক্রয় রসিদ দেখালেও তা বিক্রি করা হচ্ছে অনেক বেশি দামে। আবার দামি ও বিদেশি বলে যেসব পণ্য বিক্রি করা হয়, তা কেনার রসিদ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কারচুপির দায় স্বীকার করায় এবং প্রতারণামূলক মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে পাঞ্জাবি বিক্রি করায় প্রতিষ্ঠানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া অভিযানে পূরবী ফুডস অ্যান্ড বিরিয়ানি নামের একটি রেস্তোরাঁকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত এবং মেয়াদবিহীন দধির মধ্যে ক্ষতিকর ময়লা-আবর্জনা থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ, সহকারী পরিচালক মো.

আনিছুর রহমান, রানা দেবনাথ ও মাহমুদা আক্তার এ অভিযান পরিচালনা করেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এক্সপ্রেসওয়েতে ছাদ উড়ে যাওয়া বাস থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ 

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর এলাকায় প্রথমে মাইক্রোবাস তারপর কাভার্ড ভ্যান ও একটি কন্টেইনারের সঙ্গে সংঘর্ষে বরিশালগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের ছাদ ভেঙে উড়ে পড়ে এক্সপ্রেসওয়েতে। 

পরপর তিন দফা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয় বাসে থাকা অন্তত ২০ যাত্রী। চালক বাস না থামিয়ে আহত যাত্রীদের নিয়ে ছাদবিহীন বাস চালিয়ে চলে যান ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় অভ্যন্তরীণ সড়কে। এসময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

আহত বাস যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেডের যাত্রীবাহী বাসটি চালক বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের কামারখোলা এলাকায় পৌছলে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় চালক বাসটি না থামিয়ে আরও বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকে। সমষপুর এলাকায় পৌছে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে বাসটির ছাদ বডি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা চালককে থামাতে অনুরোধ করলেও সে তা উপেক্ষা করে।

আহত যাত্রীরা জানান, চালক দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে ছাদবিহীন বাস চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের পদ্মা সেতু উত্তর থানার লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় চলে আসেন। এ সময় আহত যাত্রীদের ‘বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’ শুনে ছাদবিহীন বাসটি আটক করে জনতা। 

পদ্মা সেতু উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত শাহিন নামের এক যাত্রীকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। 

ওসি জানান, চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।

শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি  রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”

ঢাকা/রতন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ