আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি, তখন থেকে পতন শুরু: ফরহাদ মজহার
Published: 15th, March 2025 GMT
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি, তখন থেকে পতন শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক, কাল হোক তারা হারিয়ে যাবে।’ আজ শনিবার দুপুরে যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
মধ্যপন্থার রাজনীতির সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি শুনেছি, তরুণেরা মধ্যপন্থার রাজনীতি করবে, মধ্যপন্থা কী? মধ্যপন্থী মানে সুবিধাবাদী। সব প্রকার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধ লড়াই চালাতে হবে। এখানে মধ্যপন্থার সুযোগটা কোথায়?’
কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইকে পূর্ণ বিজয়ের দিকে নিয়ে যাব। যত রকম ফ্যাসিবাদ আছে, সেটা সেকুলার, ধর্মীয়, যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদ হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, এই গণ–অভ্যুত্থান কখনোই সফল হতো না, যদি খালেদা জিয়া আপসহীনভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে না থাকতেন।
বর্তমান সরকার বিষয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ড.
তরুণদের উদ্দেশে এ কবি ও চিন্তক বলেন, ‘সংস্কার বলে কিছু নেই। সংবিধান আমরা তো বানাইতে পারি নাই। আমরা যদি দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি, তাহলে এ পর্বে আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে না পারলে আবারও ৫০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ফলে ছাত্রদের রাষ্ট্রগঠনে গণপরিষদ ভোটের দাবি সঠিক। কিন্তু তারা এটা ব্যাখা করতে পারে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাচ্যসংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা লেখক বেনজীন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মাদ রোমেল, যশোর বৈষম্যবিরোধী কমিটির মুখপাত্র ফাহিম আল ফাত্তাহ, মারুফ কবীর, যশোর নাগরিক কমিটির নেতা আশালতা প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র
এছাড়াও পড়ুন:
অস্থায়ী সংবিধানে স্বাক্ষর করলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা একটি অস্থায়ী সংবিধানে স্বাক্ষর করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ বছর পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। আহমেদ আল-শারার বাহিনী ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে বাশার আল-আসাদের সরকারকে উৎখাত করার তিন মাস পর সাংবিধানিক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করার সময় আল-শারা বলেন, এটি ‘সিরিয়ার জন্য একটি নতুন ইতিহাসের সূচনা করবে বলে প্রত্যাশা করছি। এর মাধ্যমে আমরা নিপীড়নের পরিবর্তে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব।’
সংবিধান খসড়া কমিটির সদস্য আব্দুল হামিদ আল-আওয়াক বলেন, আগের সংবিধানের কিছু বিষয় নতুন সংবিধানেও বজায় থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রপ্রধানকে মুসলিম হতে হবে এবং আইনশাস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার দামেস্ক থেকে জানিয়েছেন, নেতাদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততার ওপর আইন চালু করার প্রশ্নটি একটি ‘বিতর্কিত বিষয়’ ছিল।
এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘এ বিষয়টি সংবিধানের একটি ধারা হবে কি না, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপ্রধানকে মুসলিম হতে হবে।’
সংবিধান খসড়া কমিটির সদস্য আব্দুল হামিদ আল-আওয়াক বলেন, এই নথিতে মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং নারীদের ‘সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার’ নিশ্চিত করার বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিরিয়ার নড়বড়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি ‘সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য’ বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবে।
এই সংবিধানে বেশির ভাগ মনোযোগ থাকবে অন্তর্বর্তী সময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর। এর লক্ষ্য হবে পূর্ববর্তী বাশার আল-আসাদ সরকারের অধীনে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।
যেকোনো সমস্যা মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে আল-আওয়াক বলেন, অস্থায়ী সংবিধানের অধীনে নির্বাহী ক্ষমতা শুধু প্রেসিডেন্টের হাতে সীমাবদ্ধ থাকবে।
আল জাজিরার সাংবাদিক বলেন, অস্থায়ী সংবিধানে একটি গণপরিষদের কথা বলা হয়েছে। এটির এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নিযুক্ত করবেন প্রেসিডেন্ট। নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত সব আইন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকবে এই গণপরিষদের হাতে। প্রেসিডেন্টের মতে, নির্বাচন হতে সম্ভবত চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে।
গণপরিষদের হাতে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতাও থাকবে। তাত্ত্বিকভাবে এটি সম্ভব হলেও বাস্তবে অত্যন্ত কঠিন হবে। কারণ, গণপরিষদের [অনেক] সদস্য সরাসরি রাষ্ট্রপতি নিজেই নিযুক্ত করবেন।
স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তবে এটি সিরিয়ার রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতি গোষ্ঠীগুলোকে আরও অন্তর্ভুক্ত করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।