Prothomalo:
2025-04-15@13:09:44 GMT

ফ্যানের বাজারের হালচাল

Published: 15th, March 2025 GMT

কাঁথা–কম্বল উঠে গেছে আলমারিতে। সূর্যের উত্তাপও বার্তা দিচ্ছে, সামনেই গ্রীষ্মকাল। গরম থেকে স্বস্তি পেতে তাই ফ্যানের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। আধুনিক সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি রিচার্জেবল ফ্যানের চাহিদাও বেড়েছে বাজারে। ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ডগুলোও ক্রেতার চাহিদা ও রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে আনছে বিভিন্ন মডেলের ফ্যান। ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্যারান্টিসহ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ফ্যান কিনতে চান ক্রেতারা।

একসময় পাকিস্তান ও ভারত থেকে আমদানি করা ফ্যানেই মানুষ ভরসা করত। সময় পাল্টেছে। ফ্যানের বাজারের একটা বড় অংশই এখন দেশীয় ব্র্যান্ডের দখলে। এর মধ্যে ওয়ালটন, যমুনা, আরএফএল, কনকা, বিআরবি, এনার্জিপ্যাকের মতো ব্র্যান্ড উল্লেখযোগ্য।

বাজারের প্রচলিত ফ্যানগুলো সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ ওয়াটের হয়ে থাকে। কিন্তু ওয়ালটনের ব্রাশলেস ডিরেক্ট কারেন্ট মোটর বা বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান ৩৫ ওয়াটের। এসব সুপার সেভার মডেল প্রায় ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে। এ ছাড়া তাদের রিচার্জেবল সিলিং ফ্যান সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা ও অন্যান্য রিচার্জেবল ফ্যান কমপক্ষে ৪-৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাস দিতে সক্ষম। ব্র্যান্ডটির সিলিং ফ্যান তিন পাখার হলেও কিছু টেবিল ফ্যান ও স্ট্যান্ড ফ্যান পাঁচ পাখার হয়ে থাকে। ২ হাজার ৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকায় এসব ফ্যান বিক্রি করছে ওয়ালটন। পাঁচ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবায় মিলবে মোটর রিপ্লেসমেন্টের সুবিধা।

আরও পড়ুনসিলিং ফ্যান পরিষ্কার করার এই বুদ্ধি কি জানতেন০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ওয়ালটন ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের চিফ বিজনেস অফিসার সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রযুক্তি ও ফ্যাশনের সমন্বয়ে আমরা পণ্য তৈরি করি। যেমন বিএলডিসি প্রযুক্তিতে আমরা লাইটকিট ফ্যান এনেছি। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এ ফ্যানে লাইটও জ্বলবে। রিমোট দিয়ে লাইটের তিনটি রং পরিবর্তন করা যাবে৷ এ ছাড়া আমাদের ফ্যানে সেফটি ওয়্যার থাকে। তাই ফ্যান ছিঁড়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

থার্মাল প্রোটেক্টর ব্যবহার করায় ভোল্টেজ কম–বেশি হলেও ওয়ালটন ফ্যানের মোটর নিরাপদ থাকে। ১২টি সিলিং ফ্যানের মডেলসহ টেবিল ফ্যান, স্ট্যান্ডিং ফ্যান, রিচার্জেবল ফ্যান ইত্যাদি মিলিয়ে ওয়ালটনের প্রায় ৭০টি মডেলের ফ্যান বাজারে আছে।

যমুনা ব্র্যান্ডের সুপার ডিলাক্স ও লাক্সারি মডেলের বেশ কিছু রং ও আকারের ফ্যান বাজারে আছে। ছিমছাম ডিজাইনের এসব ফ্যানের চাহিদাও ভালো। বিশেষ করে তুলনামূলক কম দামে যাঁরা পণ্যটি কিনতে চান, যমুনা তাঁদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম। ১২ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি পাওয়া যাবে যমুনা ফ্যানে।

মিরপুরের শেওড়াপাড়ার যমুনা প্লাজার ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার জিহাদুল ইসলাম বলেন, যমুনা ফ্যানের

শব্দ নেই, ওয়ারেন্টিও ভালো । ৩১০ আরপিএমের কারণে বাতাস দেয় বেশি। অনেক বছর ধরেই মানুষ তাই এই ফ্যান পছন্দ করছে। রিচার্জেবল ফ্যানও উৎপাদন করে যমুনা। এটি কিনতে খরচ হবে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।

দেশে কনকা ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান উৎপাদন করছে ইলেকট্রো মার্ট। বর্তমানে কনকার ৪টি মডেলের ফ্যান বাজারে আছে৷ তাদের উৎপাদিত ৪৮ থেকে ৫৬ ইঞ্চি ফ্যানে ব্যবহার করা হয়েছে শতভাগ কপারের তার ও অ্যালুমিনিয়ামের পাখা। প্রায় ৬৫ ভাগ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এই পণ্যে মিলবে ১০ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি।

আরও পড়ুনফ্যানের যেসব বিষয় জানা থাকা ভালো ২২ মে ২০২৪

ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেডের কলাবাগান শোরুমের সহকারী ম্যানেজার মো.

মোরশেদ আলী বলেন, ডিজাইন ও প্রযুক্তির কারণে কনকা ফ্যান ঠান্ডা বাতাস দেয়। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়টি বিএসটিআই দ্বারা স্বীকৃত। ২ হাজার ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৬৮০ টাকার মধ্যে এই ফ্যান পাওয়া যাবে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ফ্যানের দুটি ব্র্যান্ড ভিশন ও ক্লিক। তারাও বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান উৎপাদন করে। প্রচলিত ও বিএলডিসি প্রযুক্তিসম্পন্ন এসব ফ্যান ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।

ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ড এনার্জিপ্যাকের অ্যারোডায়নামিক পাখার ফ্যানগুলোয় শতভাগ কপারের তার ব্যবহার করা হয়েছে। এসব ফ্যান বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও শব্দবিহীন। রয়েছে সাত বছরের গ্যারান্টিও। সাড়ে তিন হাজার থেকে সাত হাজারের মধ্যেই এনার্জিপ্যাকের ফ্যান কেনা যাবে।

আরেক বহুল পরিচিত ফ্যানের ব্র্যান্ড বিআরবি। বিআরবি লাভলি ফ্যানগুলো ২ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সাত বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধাসহ সুপারস্টার সিলিং ফ্যানের বাজারমূল্য ২ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কোম্পানিটির পেডেস্টাল, রিচার্জেবল ও এক্সজস্ট ফ্যানও বাজারে আছে। পাওয়া যাবে বাজেটের মধ্যেই।

এ ছাড়া বিভিন্ন দামে ও মডেলে নন-ব্র্যান্ডের রিচার্জেবল ফ্যান পাওয়া যায়। বিশেষ করে, পোর্টেবল ছোট আকারের ফ্যান ব্যাগে রেখে তৎক্ষণাৎ রাস্তাঘাটে ব্যবহার করতে চান অনেকে। রাজধানীর গরম ও ট্রাফিক জ্যামের কথা মাথায় রেখে এ ধরনের ফ্যান অনেকে সংগ্রহে রাখছেন।

আরও পড়ুনফ্যানের বাতাস কি স্বাস্থ্যকর১৩ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র চ র জ বল ফ য ন ব যবহ র কর এসব ফ য ন ব এলড স উৎপ দ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।

গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
 
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না। 

তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। 

শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। 

হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ