গাজায় যুদ্ধবিরতি বর্ধিত করার আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ কাতারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে হামাস ‘সম্পূর্ণ অবাস্তব’ দাবি উত্থাপন করেছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ,একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শনিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

১ মার্চ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর আলোচকরা এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপটি এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল, যার মধ্যে হামাসের হাতে বন্দি এবং ইসরায়েলের হাতে বন্দিদের বিনিময় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরোক্ষ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ যে চুক্তির মূল দিকগুলো তুলে ধরেছিলেন, তাতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইসরায়েল এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, শনিবার রাতে ইসরায়েলের আলোচক দলের কাছ থেকে তিনি একটি প্রতিবেদন পাবেন।

হোয়াইট হাউস উইটকফের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে ‘সম্পূর্ণরূপে অবাস্তব’ দাবি করার জন্য অভিযুক্ত করেছে।

শুক্রবার উইটকফের অফিস এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হামাস খুব খারাপভাবে বাজি ধরছে যখন সময় তাদের পক্ষে নয়। হামাস সময়সীমা সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত এবং তাদের জানা উচিত যে যদি সেই সময়সীমা পার হয়ে যায় তবে আমরা সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাব।”

হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলোচনা ভেস্তে গেছে।

১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের পর জানুয়ারিতে ইসরায়েল এবং হামাস তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়।

প্রথম পর্যায়ে, হামাস ২৫ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি, আটজনের দেহাবশেষ এবং পাঁচজন জীবিত থাই জিম্মিকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় এক হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।

চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে গাজার অবশিষ্ট জীবিত জিম্মিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

কিন্তু পরবর্তীতে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের সংখ্যা নিয়ে উভয় পক্ষই বর্তমানে দ্বিমত পোষণ করছে। গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়েও দুই পক্ষ দ্বিমত পোষণ করছে, যা মূল চুক্তিতে বলা হয়েছে এখনই হওয়া উচিত।

ইসরায়েল এই বিষয়টির বিরোধিতা করছে। অন্যদিকে হামাস জোর দিয়ে বলছে, এটি হওয়া উচিত।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের গাজা খালি করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসাকে স্বাগত জানাল হামাস

গাজা উপত্যকা খালি করতে ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। এর আগে গাজার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে পাকাপাকিভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প গতকাল বুধবার বলেন, ‘গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে কেউ সরিয়ে নেবে না।’ এদিন ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এর পরপরই বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানায় হামাস। বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটির মুখপাত্র হাজেম কাসেমি বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য গাজা উপত্যকার জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার ধারণা থেকে সরে আসার প্রতিনিধিত্ব করে, তাহলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।’

হামাসের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি দখলদারত্বকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নে বাধ্য করার মাধ্যমে এই অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানাই।’

গত মাসে ট্রাম্প তাঁর প্রস্তাব সামনে এনেছিলেন। বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে পাকাপাকিভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোয় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের আকস্মিক এমন প্রস্তাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরেও ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

গাজার পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কাতারে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা করা হয়।

বৈঠকে কাতার, জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মহাসচিব অংশ নেন। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। মিসরের কায়রোয় ৪ মার্চ আরব লীগের সম্মেলনে এই পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা পুনর্গঠনে বিকল্প প্রস্তাবে সমর্থন ওআইসির ০৮ মার্চ ২০২৫

গত শনিবার ৫৭ সদস্যের ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ট্রাম্পের গাজা দখল এবং এখানকার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আরব লিগের বিকল্প প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে। সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসির এক জরুরি বৈঠক শেষে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। মিসরের উদ্যোগে বিকল্প প্রস্তাবটি সামনে এসেছে।

কাতারের দোহায় গত মঙ্গলবার নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করছি, চলমান আলোচনায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির দিকে দৃশ্যমান অগ্রগতির সূচনা হবে।’

যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য ইসরায়েলও প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। তবে দেশটি দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়িয়ে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে চায়।

আরও পড়ুনগাজার জন্য ‘বাস্তবসম্মত’ আরব পরিকল্পনায় সমর্থন ৪ ইউরোপীয় দেশের০৯ মার্চ ২০২৫

এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। আলোচনায় যোগ দিতে মঙ্গলবার দোহায় পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।

আরও পড়ুনগাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধে জাতিসংঘ ও আরব দেশের নিন্দা০৩ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনঅস্ত্র সমর্পণ করে গাজা ছাড়তে হবে হামাসকে১১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কথা বলবেন পুতিন-ট্রাম্প
  • যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কিছু শর্তে সম্মত পুতিন
  • যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিছু শর্তে সম্মত পুতিন
  • ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কিছু শর্তে সম্মত পুতিন   
  • ট্রাম্পের গাজা খালি করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসাকে স্বাগত জানাল হামাস