জাসদের পুনর্জাগরণের জন্য আগে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এমনটি সম্ভব হলে কর্মীদের ঐক্যের জাসদে ফিরতে নেতারা বাধ্য হবেন। শনিবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে বিভাগের ছয় জেলার জাসদ নেতাকর্মীর মতবিনিময় সভায় এ অভিমত দেন বক্তারা। তারা বলেন, গ্রাম পর্যায়ে ত্যাগী নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করে প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে। প্লাটফর্ম সিদ্ধান্ত দেবে আগামীতে কারা জাসদকে নেতৃত্ব দেবে।

‘আমাদের লক্ষ্য, জাসদের ঐক্য’– স্লোগানে বিভাগীয় শহরে গিয়ে প্রান্তিক নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের ভাতিজি ব্যারিস্টার ফারাহ খান।

তিনি বলেন, ‘জাসদ আদর্শিক দল। ব্যক্তির কারণে দল ভাঙলেও আদর্শ ঠিকই রয়েছে। আমরা কেউ আর ব্যক্তির জাসদ করব না। নেতৃত্ব পাওয়ার জন্য আমি এ উদ্যোগ নিইনি। সিরাজুল ইসলাম খান জীবিত থাকতে আমাকে জাসদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছেন। লন্ডনের বিলাসী জীবন ছেড়ে আমি তাঁর স্বপ্ন পূরণে ঐক্যবদ্ধ জাসদের জন্য কাজ করছি।’ 

ব্যারিস্টার ফারাহ বলেন, ‘এখনও জাসদের অনেক নেতা ঐক্যের বিরোধিতা করছেন। তারা সবমিলে ২০ জনের বেশি হবে না। কিন্তু কর্মীরা ঐক্য চাচ্ছেন। তাদের ঐক্যেই জাসদের পুনর্জাগরণ ঘটবে।’

পটুয়াখালী জেলা জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক এমপি সরদার আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় অংশগ্রহণকারীরা জাসদ নিয়ে তাদের সুখ- দুঃখের স্মৃতি তুলে ধরেন। শুধু নেতৃত্ব দখলের জন্য নেতারা বার বার জাসদ ভেঙেছেন। জাসদের পদ ব্যবহার করে মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। জাসদের জন্য শহীদ ২২ হাজার নেতাকর্মীর পরিবারের খোঁজ নেননি বলে মত দেন তারা।

পটুয়াখালীর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসান মাহমুদ দুলাল জানান, দলের বিভাজন তাঁকে জাসদ করতে দেয়নি। ছাত্রলীগের সোনালি দিন শেষ করে যখন জাসদ করার সময় হয়েছে, তখনই দল ভেঙে ব্র্যাকেট বন্দি হয়েছে। 

জাসদের আরেক কর্মী মনোতোষ সিকদার বলেন, ‘জাসদ পুনর্গঠন করতে হলে জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে হবে, তারা কোনপন্থায় রাজনীতি করবেন। সমাজতন্ত্র নাকি বামপন্থি ঘরনার?’

ঝালকাঠির জাসদ কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, জাসদ কর্মীরা অন্য দলে যোগ দিলে তাদের কেউ বিশ্বাস করে না। জাসদ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়। যারা অন্য দলে গেছেন, তারা কেউই ভালো নেই। এ ছাড়া মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জাসদ নেতা শহিদুল ইসলাম মিরন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত কর ম র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে কথা-কাটাকাটি, বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে যশোরের চৌগাছা উপজেলায় বিএনপি কর্মী আজগর আলীকে (২৬) গুলি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আজগর আলীর বাবা আব্বাস আলী। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী ইমরান (২৫) অতর্কিত আজগরকে গুলি করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

গুলিবিদ্ধ আজগর আলী বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজগর চৌগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে। আর অভিযুক্ত ইমরান একই গ্রামের বাসিন্দা। আজগর বিএনপি, আর ইমরান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শুক্রবার রাতেই পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি পিস্তল, পিস্তলের দুটি গুলি ও গুলির একটি খোসা উদ্ধার করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আজগর আলী বলেন, ‘আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে পণ্ডিত মোড়ে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইমরানের ছোড়া গুলি এসে আমার পায়ে বিদ্ধ হয়। হাসপাতালের ডাক্তার পরীক্ষা করে বলেছেন, পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় সৈয়দপুর গ্রামে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয় ইমরানের চাচা আলতাফ হোসেন ও আজগরের বাবা আব্বাস আলীর মধ্যে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পক্ষ অপর পক্ষকে হুমকি দেয়। রাত আটটার দিকে আজগরসহ কয়েকজন গ্রামের পণ্ডিত মোড়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ইমরান সেখানে গিয়ে গুলি ছোড়েন। একটি গুলি আজগরের পায়ে বিদ্ধ হয়। স্থানীয় লোকজন ইমরানকে ধরে পিটুনি দেন। পরে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকেই ইমরান পলাতক। আর গুলিবিদ্ধ আজগরকে প্রথমে চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, এক্স–রে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আজগরের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, দুটি গুলি ও গুলির একটি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ