অনলাইন রেলের টিকিট বিক্রির সংবাদে সহজের ব্যাখ্যা ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
Published: 15th, March 2025 GMT
প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ১৩ মার্চ প্রকাশিত ‘অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের নাগাল পায় না বহু মানুষ, লাভ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের’ শিরোনামের সংবাদের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন (যৌথ)। প্রতিষ্ঠানটি রেলের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিত।
সহজ ডটকম বলেছে, রেলের টিকিট পুরোপুরি অনলাইন হয়নি। এখন রেলের টিকিট অনলাইন ও কাউন্টারে একযোগে বিক্রি করা হয়। অনলাইনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না। গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলো অনলাইন ও কাউন্টারে সমান সুযোগ দিয়ে বিক্রি করা হয়।
একটি টিকিট বিক্রির বিনিময়ে ২৫ পয়সা নেওয়ার কথা বলে দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারের এখন সাড়ে ছয় টাকা পাচ্ছে—এই তথ্যের বিরোধিতা করেছে সহজ। তারা বলেছে, কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সহজের কমিশন ও ফি অপরিবর্তিত আছে, যা দরপত্রে উল্লেখিত সব শর্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সহজ তাদের বক্তব্যে বলেছে, তারা দায়িত্ব নেওয়ার আগে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রির জন্য বরাদ্দ ছিল। এখন ৬৫-৭০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়।
এ ছাড়া চুক্তি অনুসারে, রেলের বিভিন্ন স্টেশনে ৬০টি মনিটর স্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সহজ। তবে জিপিএস ট্র্যাকার স্থাপন হয়নি। ফলে এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে কার্যক্রম চলমান আছে। চুক্তি অনুসারে, টিকিট বিক্রির জন্য বহনযোগ্য যন্ত্র (পিওএস) সরবরাহ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সহজ।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
রেলের টিকিট অনলাইন ও কাউন্টারে একযোগে ছাড়ার বিষয়টি ঠিক আছে। কিন্তু অনলাইন ও কাউন্টারের কোনটিতে কতটি টিকিট বিক্রি হবে, তা উল্লেখ নেই। এখানেই রেল কর্তৃপক্ষ সহজকে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এখন টিকিট ছাড়ার প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়ে যায়। কাউন্টারে থাকে কেবল মাঝপথের কম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের টিকিট। এ ছাড়া কাউন্টারে টিকিট বিক্রির বেলায় মোবাইলে ওটিপি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটা কাউন্টারে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ এবং নিরুৎসাহিত করছে। প্রকারান্তরে এটা সহজের সুবিধা করে দিয়েছে।
প্রতি টিকিট ২৫ পয়সায় বিক্রি করবে—এই প্রস্তাব করার কারণেই সহজ অন্যান্য ঠিকাদারের তুলনায় দর প্রস্তাবে অনেক দূর এগিয়ে যায়। কৌশলে তারা বলেছিল বিজ্ঞাপন প্রচার করে ২৫ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় করবে। আদতে ২০ কোটি টিকিট ৫ কোটিতে বিক্রি করার ঘোষণা না দিলে কাজটি পেত না সহজ। কিন্তু সহজকে নিয়োগ দেওয়ার পর রেল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে টিকিট বিক্রি বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে শতকরা ৭৫ শতাংশ টিকিট থেকে সহজ সাড়ে ৬ টাকা আয় করার সুযোগ পায়, যা নিয়োগের শর্ত ও এবং চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। রেলের সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই বাড়তি সুযোগ পাচ্ছে সহজ।
রেলওয়ে নিশ্চিত করেছে, সহজ দায়িত্ব নেওয়ার আগে ২০ শতাংশের কম টিকিট অনলাইনে বিক্রি হতো। সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে ৭১ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়। ১৪ মার্চ থেকে ঈদযাত্রায় শতভাগ টিকিট অনলাইনে বেচা হচ্ছে। এর আগের ঈদগুলোতেও শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে।
সহজের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ তিন বছর পেরিয়ে গেছে। মনিটরে গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করছে না। জিপিএস ট্র্যাকারও স্থাপন করেনি, যা চুক্তির লঙ্ঘন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহজ র
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ, ভোগান্তিতে ১৩ হাজার গ্রাহক
নির্মাণাধীন মুক্তারপুর-পঞ্চবটী সড়কে পাইপলাইন ফেটে আগুন লাগায় শুক্রবার সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জ শহর ও এর আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে জেলার ১৩ হাজার গ্রাহক চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। বাসাবাড়িতে রোজাদারদের জন্য ইফতারি তৈরির কাজ ব্যাহত হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ চালু হয়নি।
জেলা শহরের মানিকপুর, মধ্য কোটগাঁও, বাগমামুদালীপাড়া, খালইষ্ট, মালপাড়া, জমিদারপাড়া, গনকপাড়া ও শহরতলির পঞ্চসার ইউনিয়নের সব ক’টি গ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সূত্র জানায়, সকাল ৮টার দিকে শহরের উপকণ্ঠ পঞ্চসার ইউনিয়নের পশ্চিম মুক্তারপুরে এলিভেটেড সড়ক নির্মাণকাজে এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি খনন চলছিল। এ সময় সঞ্চালন লাইনের প্রধান পাইপ ফেটে গিয়ে আগুন লাগে। এর পর সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
শহরের মধ্য কোটগাঁও এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস সাম্মী বলেন, সকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসাবাড়িতে রান্না করতে পারেননি তারা। ইফতারসামগ্রীও তৈরি করা যায়নি। মালপাড়ার গৃহিণী কাজী নিপা জোহা বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সবাই। রোজার মধ্যে রান্না করা যাচ্ছে না। শহরের জগধাত্রীপাড়ার গৃহিণী এলিনা আক্তার বলেন, সকালে হঠাৎ করেই দেখি চুলায় আগুন জ্বলছে না।
এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক শরীফুল ইসলাম জানান, সকালে মুক্তারপুর এলাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সড়ক নির্মাণে এক্সক্যাভেটর দ্বারা মাটি অপসারণের সময় গ্যাস সরবরাহের সঞ্চালন পাইপলাইন ফেটে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে আগুন লেগে গেলে নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় মুন্সীগঞ্জের ১৩ হাজার আবাসিক গ্রাহক গ্যাস পাচ্ছেন না।