নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে: আসাদুজ্জামান রিপন
Published: 15th, March 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ‘‘গণপরিষদের নির্বাচনের দাবি তুলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন বিলম্বত করা যাবে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সরকারের প্রধান হিসেবে বর্তমান সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন, তাকে শপথ রক্ষা করতে হবে। সংসদ নির্বাচন সবার আগে দিতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন করা যাবে না।’’
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুর শহরের মেমোরিয়াল হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার
ভোট সম্ভবত এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে: প্রধান উপদেষ্টা
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘‘১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। এর ১৮ মিনিট বেশি সময় নেওয়া যাবে না। বিএনপি সেই সময় দেবে না। বিগত ১৬ বছরে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। এই ১৬ বছরে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন করা হয়েছে। যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে, যাকে ইচ্ছা তাকে হত্যা করা হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘১৬০ জনের অধিক সংসদ সদস্য বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এটা গণতন্ত্র না। এই গণতন্ত্র বিএনপি বিশ্বাস করে না। দখলবাজিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দখলবাজিকে প্রশ্রয় দেন না।’’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাসুক, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদারেস আলী ঈসা প্রমুখ।
ঢাকা/তামিম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, “জুলাই বিপ্লবে শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্যই গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন সেটিকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।”
রবিবার (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এসব কথা বলেন তিনি।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। এই সংস্কারের ভিত্তি হতে পারে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী। কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে যে মূলনীতি স্থাপন করেছেন তা নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই।”
আরো পড়ুন:
মহিষ লুট: কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতাসহ ১১ জন কারাগারে
দলের কেউ লুটপাট করলে ছাড় নয়: আযম খান
তিনি বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষণার অনেক কিছুই ৭২এর সংবিধানে রাখা হয়নি। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যাসহ মানুষের বাকস্বাধীনতার কবর রচনা করা হয়েছিল। ‘৭৫ এর পট পরিবর্তন এবং সিপাহী জনতার বিপ্লবের পর শহীদ জিয়া পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্তা ও বিশ্বাস স্থাপনসহ যে মূলনীতি স্থাপন করেন তা নিয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই। সুতরাং, ওই মূলনীতি ধরেই সংস্কার এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “এই সরকার যেসব ভালো কাজ করছে, ক্ষমতায় আসলে বিএনপি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। মেধা পাচারের বদনাম গুছিয়ে বর্তমান সরকার মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দিচ্ছে, তারা ভালো করছেন। বিএনপি এটি মনে রাখবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষে ন্যায্য কথাই বলেছেন তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস)। চীনে প্রধান উপদেষ্টাকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে।”
দেশের মানুষ গণতন্ত্রে ফিরতে চায় উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনে যে সম্ভাব্য সময় বলেছেন সেটাই রোডম্যাপ। আর কারা কি বললেন, সেটা দেখার প্রয়োজন নেই। কিছু জরুরি সংস্কার শেষ করে সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে। এটাই জনগণের প্রত্যাশা।”
হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের স্বপ্ন পূরণে বিএনপি কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের (শহীদ) ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তা অটুট থাকবে। শনিবার ঢাকায় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল এটাই প্রমাণ করে। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে, কিন্তু দেশের প্রশ্নে, অখণ্ডতার প্রশ্নে আমরা এককাতারে আসতে পারি, তা আবারো প্রমাণিত হয়েছে। এটা আধিপত্যবাদী শক্তির জন্য একটি চূড়ান্ত বার্তা।”
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে সভায় সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, গোলাম মাওলা মুরাদ, স্থায়ী সদস্য মইনুদ্দিন কাদেরী শওকত, রফিকুল ইসলাম সেলিম, সোহাগ কুমার বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ