হাসপাতাল দখল নিয়ে বিএনপির দুপক্ষে দ্বন্দ্ব: চাকরিচ্যুত ১, বরখাস্ত ৪
Published: 15th, March 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনায় ওই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তানভীর মাহমুদ তৌহিদকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। পৃথক আদেশে চারজন মেডিকেল অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এসব চিকিৎসকের অভিযোগ, শুধুমাত্র মেডিকেল কলেজ দখল দিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন হয়রানি করা হচ্ছে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ওই চিকিৎসকরা। সংবাদ সম্মেলনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আধুনিক মেডিকেল সাবেক সভাপতি ডা.
সংবাদ সম্মেলনের পর চাকরিচ্যুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমএসআরআই অনারারী সেক্রেটারী মেজর জেনারেল (অব). মো. রফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে। মেডিকেল অফিসার তানভীর মাহমুদ তৌহিদকে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। তবে সেখানে যুক্ত হয়নি। পরে বৈঠকের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তার নিয়োগ বাতিল করে। এছাড়া হাসপাতালের শৃঙ্খলা নষ্টের দায়ে আরও চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনা একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। প্রতিবেদন দেওয়ার পরে এই চারজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির সহযোগি সংগঠন ড্যাব থেকে ডা. রোকনুজ্জামান রুবেলকে বহিস্কার করেছে বিএনপি। আর ডা. ডোনার ও ডা. দোলন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ দ বন দ ব চ কর চ য ত বরখ স ত ম ড ক ল অফ স র ম ড ক ল কল জ চ কর চ য ত ব এনপ র বরখ স ত
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।
গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না।
তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে।