রূপগঞ্জের আলোচিত সাত বছরের শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি মো. ইব্রাহিম (৫৩) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় সিলেট জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার জয়নগর মাযাইর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এবং র‌্যাব-৯, সুনামগঞ্জ এর যৌথ আভিযানিক দল।

গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহিম সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর থানার জয়নগর মাযাইর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে। এবং রূপগঞ্জের রুপসী বাগানবাড়ি এলাকায় রুবেল এর বাড়ির ভাড়াটিয়া। পেশায় একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-১১ ব্যাটেলিয়ান সদর দফতরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক স্কোয়াড কমান্ডার মো.

শামসুর রহমান জানান, রূপগঞ্জে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় মামলা হলে আসামি ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব।

পরে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র‌্যাব-৯, সুনামগঞ্জ এর সহযোগীতায় যৌথ অভিযান চালিয়ে ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাকে জেলার রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে। 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার রূপসি বাঘবাড়ি এলাকায় চকলেট কিনে দেবার কথা বলে নিজ দোকানের ভেতরে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ইব্রাহিম। এসময় শিশুটি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে ইব্রাহিম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। 

পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী রাত নয়টা থেকে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে রাত এগারোটায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম সহ থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

পরে তারা শিশুটিকে উদ্ধার করলে ডাক্তারি পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য রাতেই পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার পরদিন ১৪ মার্চ (শুক্রবার)  ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার বাদী হয়ে ইব্রাহিমকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।

 

 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ওসির ‘অনিয়মে’ জনতা অতিষ্ঠ, ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের আশ্বাস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মামলা দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে টাকা আদায়, সংঘর্ষে আহতদের মামলা না নেওয়া, ফসলি জমি কাটায় জব্দকৃত ট্রাক্টর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তার এহেন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিজয়নগরের চান্দুরা থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন ও তার ভগ্নিপতি মো. সালমানসহ চারজনকে আটক করেন ওসি। এক লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাদের মারধর করে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৫ রমজানের দিন উপজেলার ভিটিদাউদপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় রত্না আক্তারের ভাই সোহরাব মিয়া আহত হলে ওসি মামলা নেননি, বরং প্রতিপক্ষের মামলা নিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে মধ্যরাতে হরষপুর থেকে দুটি ট্রাক্টর জব্দ করার পর এক লাখ টাকা নিয়ে ওসি এসব ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় দফায়, আরো তিনটি ট্রাক্টর জব্দের পর ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন।

ভুক্তভোগী সাজ্জাদ হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘চাচাতো ভগ্নিপতি মো. সালমানকে সৌদিআরবে পাঠানোর জন্য বিজয়নগরের কাঠমিস্ত্রি ও ফার্নিচার ব্যবসায়ী সালাম মিয়ার কাছে যাওয়ার সময় ওসি গাড়ি থামান। তল্লাশির সময় এক লাখ ১০ হাজার টাকা পাওয়া গেলে, ভগ্নিপতিকে মারধর করে থানায় নিয়ে যান। পরদিন ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করে জামিন নেন। যদিও টাকা ফেরত দিতে ভিডিও করা হয়, তবু মাত্র ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।’’ 

বিজয়নগরের সাতগাঁও উত্তরপাড়া গ্রামের শাহীন মিয়া জানান, ঈদের দিন সকালে পূর্ববিরোধের কারণে সাতজন তাকে মারধর করেন। এই ঘটনায় ওসি মামলা নথিভুক্ত করেননি। 

ভিটিদাউদপুর গ্রামের রত্না আক্তার অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে পূর্ববিরোধে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তার ভাই সোহরাব মিয়াকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তবে, ওসি প্রতিপক্ষের মামলা নেন এবং তাদের মামলা নথিভুক্ত করেননি। 

সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নোয়াবাদী গ্রামের সালমা সুলতানার মাথায় ও হাতে দা দিয়ে কোপ দেয় প্রতিবেশী মাচ্চু মিয়া, তবে ওসি প্রথমে মামলা নথিভুক্ত করেননি। পরে, ভাতিজার মাধ্যমে তিনদিন পর মামলাটি নথিভুক্ত করেন।

এক গ্রামবাসী জানান, ফেব্রুয়ারিতে ওসি রওশন আলী দুটি ট্রাক্টর জব্দ করেন এবং এক লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তী সময়ে, আরো তিনটি ট্রাক্টর জব্দ করা হলে ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে ছাড় দেয়। 

বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়নের খাবিবুর রহমান মনির এবং চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁ গ্রামের মিলন মৃধা ফেসবুকে ওসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং দ্রুত ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের আইনজীবী নাসির মিয়া বলেন, ‘‘ওসি যদি মামলা নথিভুক্ত না করেন, তাহলে তাকে নোট দেওয়া উচিত।’’ 

তবে, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী অভিযোগগুলোর সত্যতা অস্বীকার করেন। পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘‘যদি পুলিশের কেউ কোনো অপরাধ বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

চট্টগ্রাম পুলিশ রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ‘‘ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’’

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে আবারো ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষ
  • শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ
  • জাজিরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবারও ‘খইয়ের মতো’ ফুটল ককটেল
  • ওসির ‘অনিয়মে’ জনতা অতিষ্ঠ, ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের আশ্বাস