ঈদের আগে রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিট রাস্তা জনগণের চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

শনিবার (১৫ মার্চ) মিরপুর ৬০ ফিট রাস্তার চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ডিএনসিসি এলাকার দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একটি মিরপুর ৬০ ফিট রাস্তা এবং আরেকটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ী রাস্তা। অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বেশিরভাগ বড় বড় রাস্তায় চললে মনে হতো আমরা কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তায় চলছি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে পুরো টিমকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রাস্তা দুটি এই মাসে রোজার মধ্যেই সংস্কার করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেব। ইতিমধ্যে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ী রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ঈদের আগেই ৬০ ফিটের রাস্তার কাজ শেষ করে জনগণের চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

নতুন ১৮ ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে: ডিএনসিসি প্রশাসক

স্ত্রী-কন্যাসহ খাইরুজ্জামান লিটনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “কাজ করতে গিয়ে আমরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। ৬০ ফিট রাস্তার ৮টি পয়েন্টে রাস্তার পাশে বাড়ির মালিক আমাদের ফুটপাত করতে দিচ্ছে না। আমাদের কর্মীদের কনস্ট্রাকশন করতে দিচ্ছে না। কোর্টের রায়ের ভয় দেখাচ্ছেন। কোনও ধরনের সহযোগিতা করছে না। অবৈধভাবে দোকান দিয়ে রেখেছে, ময়লা ফেলে রেখেছে।”

বাধা প্রদানকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা জনগণকে চলাচলের সুবিধা দিতে চাই। কিন্তু, কেউ যদি সরকারি কাজে বেআইনিভাবে বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কাজে, সিটি কর্পোরেশনের কাজে যারা বাধা দিচ্ছে আমরা তাদের বাড়ির প্রকৃতি যাচাই করছি। তারা অবৈধভাবে আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করছে। গত বিশ বছর ধরে বাণিজ্যিকহারে ট্যাক্স দিয়েছে কিনা সেটা ধরব। তাদের প্ল্যান তলব করব, রিভিউ করে দেখবো অনুমতি নেওয়া আছে কিনা। প্লানের বাইরে অবৈধ বিল্ডিং আমরা ভেঙে দিব। আমরা কোনো ধরনের ছাড় দিব না।”

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “পহেলা বৈশাখের আগে ডিএনসিসি এলাকায় যতগুলো রাস্তা কাটা ও কাজ চলছে সেগুলো সম্পন্ন করা হবে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের লোকবল অনেক কম। রাতের আঁধারেও আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। কারণ, আমরা বসে থাকার জন্য আসিনি বরং পরিবর্তন আনার জন্য এসেছি।”

৬০ ফিট রাস্তার চলমান কাজ পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শেওড়াপাড়া আনন্দবাজার বগার মার খাল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি রুপনগর দুয়ারীপাড়া খাল উদ্ধার এবং পরিচ্ছন্নতা ও খালের পাশে ওয়াক ওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে পরিদর্শন করেন এবং উত্তর পল্লবী বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

পরিদর্শনে অন্যান্যের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো.

কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ৬০ ফ ট র স ত কর মকর ত ড এনস স জনগণ র আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মডেল মেঘনার পূর্ব পরিচিত ব্যবসায়ী সমির রিমান্ডে

মডেল ও অভিনেত্রী মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত ব্যবসায়ী মো. দেওয়ান সমিরকে চাঁদাবাজির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন। সানজানা ম্যানপাওয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সমির। গত বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ধারায় প্রতিরোধ আটকাদেশে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি কাশিমপুর-২ নম্বর কারাগারে আছেন। বুধবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মডেল মেঘনাকে আটকের দিনই ঢাকা ছেড়েছেন সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। আটকের সময় রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মেঘনা।   
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সদ্য বিদায় নেওয়া সৌদি রাষ্ট্রদূতের অনানুষ্ঠানিক অভিযোগের ভিত্তিতে মেঘনাকে আটক করেছে পুলিশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ আসার পর এ ব্যাপারে পুলিশ পদক্ষেপ নেয়। এর পর রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনার যোগাযোগ থাকার বিষয়টি জানতে পারেন গোয়েন্দারা। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে মেঘনার পরিবারের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেটি ব্যর্থ হলে তাঁকে আটক করা হয়। এদিকে মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।  

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে আসছেন আসামি দেওয়ান সমির। তাঁর বিরুদ্ধে সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ভাটারা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেওয়ান সমিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, আসামি গত জানুয়ারি থেকে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হুমকির সম্মুখীন হয়।
কাশিমপুর-২ কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. আল মামুন সমকালকে বলেন, প্রতিরোধমূলক আটকাদেশের বন্দিদের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়। অন্যান্য বন্দির মতো তারা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় গোয়েন্দারা থাকেন। 

নিন্দা-প্রতিবাদ 
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মেঘনা আলমের মুক্তিসহ এই আইন বিলোপের দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। শনিবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। কমিটির পক্ষে এই বিবৃতি পাঠান সংগঠনের সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিবৃতিতে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের স্বৈরাচারী আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা আগে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছেন। অথচ এই আইন ব্যবহার করেই সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের অন্যায় আচরণ ও প্রতারণা ঢাকতে একজন নারীকে বাড়িতে হামলা করে তুলে নিয়ে একে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে বহু গুম ও স্বেচ্ছাচারী আটকের ভিত্তি তৈরি করে নাগরিকের মানবাধিকারকে নিষ্পেষিত করা হয়েছিল। জুলাইয়ে শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার বিপুল রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যখন জনগণের আকাঙ্ক্ষা হয়ে উঠেছে, তখন এ রকম আইনের ব্যবহার পুনরায় ফ্যাসিবাদী তৎপরতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। 

মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে পুলিশের আনা ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করার’ অভিযোগকে বিভ্রান্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্র যদি একজন কূটনীতিকের ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের ধরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নাগরিকের অধিকার হরণ করে, তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। অবিলম্বে মেঘনা আলমের মুক্তি এবং এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

এদিকে মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নারী পক্ষ। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক সাফিয়া আজীম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দ্রুত এই কালো আইন বাতিল, মেঘনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়। যে বা যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মেঘনা আলমের ব্যক্তিগত বিষয়কে রাষ্ট্রীয় ইস্যু করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী ও ব্যক্তিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। জনগণের করের টাকায় পরিচালিত বাহিনী কখনোই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা কূটনৈতিক তোষণের যন্ত্র হতে পারে না। বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনের সংকট বাড়াবে: সিপিবি
  • জনগণ সব সময় ফিলিস্তিনের পাশে আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা আমি বলিনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • মডেল মেঘনার সঙ্গে এই আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী
  • মডেল মেঘনার সঙ্গে এ আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী
  • মেঘনা আলমের সঙ্গে প্রথম এই আইন ব্যবহার হচ্ছে না: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
  • খোলপেটুয়ার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেনাবাহিনীর
  • ‘শুধু সরকার ও দল নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক চায় চীন’
  • ঢাকার সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত
  • মডেল মেঘনার পূর্ব পরিচিত ব্যবসায়ী সমির রিমান্ডে