ঈদে যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা
Published: 15th, March 2025 GMT
সাউথ এশিয়ান সাব রিজিওনাল ইকনোমিক কো-অপারেশন বা সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল প্রান্তে প্রায় চার বছরে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের। এ কারণে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে আসন্ন ঈদে এই মহাসড়কে যানজটে চরম ভোগান্তির শঙ্কা করছেন বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা। তবে, প্রকল্প ম্যানেজারের দাবি, ঈদে চার লেনের সুবিধা পাবেন ঘরমুখো মানুষ।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.
সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ফেইজ ৫ অংশে চার বছরে কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ। ২০১৬ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২১ এর ডিসেম্বরে এই অংশের কার্যাদেশ পায় আব্দুল মোনায়েম নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। ঈদে মহাসড়কের চারলেন চালুর কথা বললেও বেশির ভাগ অংশে মূল সড়কের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরো পড়ুন:
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
ঈদ বোনাসের দাবি
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের, যান চলাচল বন্ধ
যমুনা সেতু সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ে যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হতে ২০ হাজার যানবাহন পারাপার করে। বিগত ঈদে ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজারের বেশি যানবাহন সেতু পারাপার করেছে।
মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও তদারকির অভাবে টাঙ্গাইল অংশে কাজের ধীরগতি। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলসহ আশপাশের ২৩ জেলার লাখ লাখ মানুষ মহাসড়কটি ব্যবহার করেন। আসন্ন ঈদে চারলেনের কাজ শেষ না হওয়ায় কয়েক গুণ বেশি যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে চরম ভোগান্তি শঙ্কা করছেন তারা।
পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের সফটওয়ারে সমস্যার কারণে অনেক সময় টোল আদায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। ফলে দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকা থাকে। অপরদিকে, যমুনা সেতু পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ অংশে গাড়ি ঠিকমতো পাস না হলে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক ঈদেও সিরাজগঞ্জের অংশে গাড়ি ঠিকমতো পাস না হওয়ার কারণে যমুনা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকে। এতে করে টাঙ্গাইলের অংশে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়।
প্রতি বছরই ঈদকে সামন রেখে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সড়কে লক্কড়ঝক্কড় এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের করেন। এসব গাড়ি হঠাৎ করেই মহাসড়কে বিকল হয়ে যায়। এতে সড়কের উভয় পাশের গাড়ি থেমে যায়। এক পর্যায়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় চালকের অদক্ষতা, সড়ক দুর্ঘটনা এবং গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কের সল্লা, আনালিয়াবাড়ী ও ভাবলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এলেঙ্গা-ভূঞাপুর-চরগাবসারার সড়কও সংস্কার করা হচ্ছে।
শ্যামলী পরিবহনের চালক আব্দুল আজিজ বলেন, “অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন ও বেপরোয়া গতির যানবাহন কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সড়কে গাড়ি বিকল হলেও যানজট দেখা দেয়। যে কারণে মহসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মহাসড়কের পাশে বালু রয়েছে। একটু বৃষ্টি বা অন্য কোন পানি পেলে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
অপর বাসের চালক হানিফ শেখ বলেন, “প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও তদারকির অভাবে ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু সড়কে মাঝে মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।”
এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চারলেন সড়কের কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার রবিউল আওয়াল বলেন, “এই মহাসড়কের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঈদের আগেই মহাসড়কের এই অংশের উত্তরঙ্গগামী লেন যান চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। আশা করছি, আগামী ১৮ তারিখ থেকে এই লেনে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।”
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, “ঈদযাত্রায় যমুনা সেতু দিয়ে সার্বক্ষণিক টোল চালু রাখার চেষ্টা করা হবে। এবার সেতুর দুই প্রান্তে ৯টি করে বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হবে। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের জন্য দুইটি করে আলাদা বুথ থাকবে। যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতুর ওপরে অব্যবহৃত রেললাইনের সাড়ে ৩ মিটার জায়গাও প্রসস্থতা বাড়ানো হবে।”
টাঙ্গােইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “এরই মধ্যে আমরা যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছি। যানজট নিরসনে টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটারে জেলা পুলিশের সাড়ে ৭০০ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। মহাসড়কে মোবাইল টিম কাজ করবে। মহাসড়ককে চারটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আগামী ২৫ মার্চ থেকে মহাসড়কে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। ঈদের পরও যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। আশা করছি মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হবে না।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন য নজট ঈদ উৎসব ঈদ য নজট ন রসন প রকল প হন র চ এল ঙ গ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
দুদকের মামলায় খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, তার বিরুদ্ধে এ মামলার কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। আর তার অবৈধ সম্পদ যদি থাকে, সেটা তো অবরুদ্ধ করতে হতো। সেটাও তো করা হয়নি। সুতরাং এ মামলা থেকে তাকে খালাস দেওয়া হলো। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমদ আলী সালাম এ তথ্য জানান।
এদিন স্ত্রীসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন ফালু। রায়ের পর তিনি হাসিখুশি মেজাজে নেতাকর্মীদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
সাবেক সংসদ সদস্য ফালুর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৮ জুলাই মতিঝিল থানায় মামলা করে দুদক। এরপর ২০১৮ সালের ২৭ অগাস্ট মামলাটির অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর পাঁচবছর পর ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুদকের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পেয়ে ২০০৭ সালের ১ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন ফালু। এ নিয়ে তদন্তে তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৮৬৬ টাকার সম্পদ এবং ১০ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৫১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পায় দুদক।
২০০৪ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ফালু ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।