রাজধানীতে পৃথক তিনটি এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টা এবং ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। গতকাল শুক্রবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে আজ শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, তেজগাঁও, মিরপুর ও উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো.

সাজ্জাত হোসেন ওরফে সাগর (৪২), মো. ওয়াসিম আকরাম (৩৫), মো. সুমন (৩০), মো. সুলতান মাহমুদ খান (৪৫) ও মোহাম্মদ শান্ত (২৯)। তাঁদের কাছ থেকে ১ লাখ ২০০ টাকা, তিন পুরিয়া হেরোইন, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা ক্রসিংয়ের উত্তর সিগন্যালের যাত্রীছাউনির সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক তেজগাঁও জোনের সার্জেন্ট মো. সোহরাব হোসাইন। গতকাল বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কয়েকজন ছিনতাইকারী বাসের এক যাত্রীর টাকা ছিনতাই করে পালাচ্ছিলেন। তখন সোহরাব হোসাইন লোকজনের সহায়তা নিয়ে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁরা হলেন মো. সাজ্জাত হোসেন, মো. ওয়াসিম আকরাম ও মো. সুমন। তাঁদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।  

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর মিরপুরের সেতারা টাওয়ারের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক মিরপুর জোনের সার্জেন্ট মো. রবিন রানা। তিনি এ সময় ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে মো. সুলতান মাহমুদ খান নামের এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে গ্রেপ্তার করেন। এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় গতকাল দিবাগত ১২টার দিকে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে মোহাম্মদ শান্তকে গ্রেপ্তার করেন ট্রাফিক উত্তরা-পূর্ব জোনের সার্জেন্ট শাহাদাত হোসেন শান্ত। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর গতক ল ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহভাজন নীরব মোদির সহযোগী চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার

ভারতের পলাতক জুয়েলারি ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ভারতের অন্যতম বড় ব্যাংক জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার সাত বছর পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। আজ সোমবার তাঁর আইনজীবী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তিনি মুক্তি পেতে আদালতে আপিল করবেন।

ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভারত সরকার চোকসিকে গ্রেপ্তারের আগেই তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য বেলজিয়াম সরকারের কাছে অনুরোধ পাঠিয়েছিল।

সম্পদের দিক থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি)। ২০১৮ সালে এই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মুম্বাইয়ের একটি শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে চোকসি ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।

ব্যাংকটি ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার কাছে একটি ফৌজদারি অভিযোগ জমা দিয়েছে। অভিযোগে ধনকুবের জুয়েলারি ব্যবসায়ী নীরব মোদি এবং তাঁর চাচা ও গীতাঞ্জলি জেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহুল চোকসিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তাঁরা পিএনবির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় পুলিশ চোকসি, নীরব মোদি এবং অন্যান্যের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। এসব লেনদেনে পিএনবির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এই দুই হীরা কারবারি তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৮ সালে চোকসি এক চিঠিতে বলেন, আগাম একটি ধারণা নিয়ে সংস্থাগুলো তদন্ত করছে এবং এর মাধ্যমে তারা বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে।

চোকসির আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল আজ সোমবার রয়টার্সকে বলেন, তাঁর মক্কেল ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই—এই কারণ দেখিয়ে তাঁর মুক্তির জন্য আপিল করা হবে। তিনিও আরও বলেন, চোকসি বেলজিয়ামে কোনো অপরাধ করেননি।

নীরব মোদির বিরুদ্ধে পিএনবির মামলার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আসার আগেই তিনি ২০১৮ সালের ভারত থেকে পালিয়ে যান। তিনিও ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার হন এবং এখনো তিনি সেখানে আটক আছেন। যদিও এর মধ্যে তিনি একবার প্রত্যর্পণের আপিলে হেরেছেন।

মোদি বেলজিয়ামের হীরা প্রক্রিয়করণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আন্তওয়ার্পেনে বড় হয়েছেন। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই চোকসি নিয়মিত ওই শহরে যাতায়াত করতেন।

মুম্বাইয়ের হীরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চোকসির আশ্রয় নেওয়ার আদর্শ জায়গা হতে পারত আন্তওয়ার্পেন। কারণ, তিনি সেখানে অনেককে চেনেন এবং সেখানে যাঁরা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, এমন অনেকের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ