সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন করার কথা জাতিসংঘ মহাসচিবকে বলেছে বিএনপি
Published: 15th, March 2025 GMT
বিএনপিই সবার আগে সংস্কারের কথা বলেছে বলে জাতিসংঘের মহাসচিবকে জানিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারের যেসব বিষয় আছে, সেগুলো দ্রুত করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার কথাও বলেছে তারা।
আজ শনিবার দুপুরে শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কী নিয়ে আলাপ হয়েছে, বিএনপিই–বা কী বলেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসংঘের উদ্যোগে একটা গোলটেবিল আয়োজন করা হয়েছিল। এতে কমিশনপ্রধানেরা ছিলেন। মূলত এখানে সংস্কারের যেসব বিষয় সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছে, সেসব বিষয় সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিবকে জানানো হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এত দিন যে কথা বলে আসছি, (জাতিসংঘের মহাসচিবকে) একই কথা বলেছি। সংস্কার তো অবশ্যই করতে হবে। সংস্কারের কথা তো আমরা আগে বলেছি। সেই সংস্কারটা অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু সেই সংস্কারটা যত দ্রুত করা যায়, আমরা বলেছি, নির্বাচনকেন্দ্রিক যেসব বিষয় আছে, সেগুলো করে ফেলা, দ্রুত নির্বাচন করা এবং একটা পার্লামেন্টের মাধ্যমে বাকি বিষয়গুলো করতে হবে। এটা (সংস্কার) চলমান প্রক্রিয়া। সেই বিষয়গুলো বলে এসেছি।’
জাতিসংঘের মহাসচিব কিছু বলেছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি কোনো কমেন্ট (মন্তব্য) করেননি। এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, গোলটেবিলটা.
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। তারা যা চাচ্ছে, সব তাদের দিয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে একটা বৈঠক হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিবকে টাইম ফ্রেম দিতে যাব কেন?’
জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ অংশ নেন।
নির্বাচনসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতিসংঘের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনারা বসে রিফর্মস কী নেবেন, সেটা ঠিক করেন। উনি বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীর মধ্যে একটা নজির সৃষ্টি করবে আগামী নির্বাচন, এমনটা উনি আশা করেছেন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের আশ্বাসে ইমির কর্মসূচি স্থগিত
ধর্ষণের বিচারসহ পাঁচ দাবিতে গত আট দিন ধরে শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের আশ্বাসে তিনি কর্মসূচি স্থগিত করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইমি সমকালকে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শাহবাগে আসেন। এ সময় আমাদের পাঁচ দফা দাবির প্রত্যেকটি সুনির্দিষ্টভাবে সময় উল্লেখ করে পূরণের আশ্বাস দেন তিনি। তাঁর প্রতি আস্থা রেখে আমি আপাতত আমার অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আশা করছি আপাতত আর রাস্তায় থাকতে হবে না। এরপরও যদি প্রয়োজন হয় আবার, বারবার রাস্তায় নেমে আসব।’
সাত দিন টানা অবস্থানে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শরীর একেবারে ভেঙে পড়েছে। বিশ্রাম দরকার। সবাই আমার, আমার সহযোদ্ধারা যারা আজকে আট দিন সবসময় আমাকে আগলে রেখেছেন, আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।
এর আগে গত ৮ মার্চ তিনি শাহবাগে লাগাতার অবস্থান করা শুরু করেন। এরপর নানান পর্যায় থেকে নানাজন তার সঙ্গে এসে সংহতি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে শামসুন নাহার হল সংসদের নির্বাচিত ভিপি। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। পরে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিতে আর যোগ দেননি।
তার দাবির মধ্যে রয়েছে- ধর্ষণ ও বলাৎকারের সম্পূর্ণ বিচার কার্যক্রম নিম্ম আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করতে হবে এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে। প্রতিটি থানায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার নারী ও শিশু নির্যাতন একটি ইমারজেন্সি ক্রাইসিস রেস্পন্স টিম গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে থানার অভ্যন্তরে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা-২৪ সংশোধন করে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। ধর্ষণের শিকার ভিক্টিমের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।
নারী ও শিশুর উপর সংঘটিত সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। স্কুল-কলেজের পাঠ প্রস্তুকে নৈতিক শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা পাঠদানের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।