হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ বন্ধের চক্রান্তের প্রতিবাদে রবিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ‌‘সম্মিলিত নাগরিক সমাজ হবিগঞ্জ’ নামে একটি ব্যানারে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। 

এদিকে, কর্মসূচি সফল করতে শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে হবিগঞ্জ শহরে মাইকিং করা হয়েছে। এদিন, হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল এবং সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ হবিগঞ্জের সদস্য সচিব ও হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী শামসুল হুদা বলেন, “জেলার ২৫ লাখ মানুষের দাবি উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ বন্ধের যে পাঁয়তারা চলছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।”

আরো পড়ুন:

ঈদ বোনাসের দাবি 
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের, যান চলাচল বন্ধ 

গাজীপুরের ২ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

তিনি আরো বলেন, “জনস্বার্থবিরোধী এই চক্রান্ত থেকে সরে আসার জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। অনেক আন্দোলন হয়েছে, তারপরও মেডিকেল কলেজ বন্ধের দিকে যাচ্ছে প্রশাসন বলে জানা গেছে। এরই প্রতিবাদে রবিবার সকাল ১১টার দিকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। এর মাধ্যমে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমানের একরোখা সিদ্ধান্তের কারণে হবিগঞ্জবাসী মেডিকেল কলেজ হারাতে বসেছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে হবিগঞ্জবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে শিগগির মেডিকেল কলেজের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানান।

২০১৮ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করা হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ গণঅভ্যন্থানের পর নাম পাল্টে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ রাখা হয়। হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের তিনটা ফ্লোরে এ হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে। এ কলেজটি সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে একীভূত করা হবে বলে আলোচনা রয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি এটিএম মাহমুদুল হক বলেন, “যতটুকু জেনেছি, তারা নতুন ব্রিজ এলাকায় মানববন্ধন করবে। মহাসড়ক অবরোধ করার কোন সংবাদ পাইনি। মহাসড়কে শান্ত পরিবেশ রাখার স্বার্থে হাইওয়ে পুলিশ সর্তক রয়েছে।” 

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ ক অবর ধ বন ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

বকেয়া পরিশোধ করলেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা

হঠাৎ প্রত্যাহার হওয়া নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ অবশেষে কয়েকজন পাওনাদারের টাকা ফেরত দিয়েছেন এবং কয়েকজনকে দ্রুত দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই বেশ কয়েকজন পাওনাদারকে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর নান্দাইল থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন ফরিদ আহমেদ। দায়িত্ব পালনকালে নান্দাইলে চুরি-ছিনতাইসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, নান্দাইলে কর্মরত অবস্থায় তিনি বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী কিনে টাকা পরিশোধ করেননি বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপরও কয়েকবার জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পুরস্কৃত হন।

বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ প্রশাসন ওসি ফরিদ আহমেদকে প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করে একটি আদেশ জারি করে। পরদিন শুক্রবার ভোরেই তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে নান্দাইল ত্যাগ করেন। এ খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল থেকে থানায় আসতে শুরু করেন পাওনাদাররা। তাঁকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সবাই চলে যান। স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে চাপে পড়েন প্রত্যাহার হওয়া ওসি ফরিদ। 

এরপর শুক্রবার নান্দাইলে এসে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাওনাদারদের মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন। কারও কারও কাছ থেকে টাকা পরিশোধের সময় চেয়ে নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

নান্দাইল পৌর বাজারের ইসহাক মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা মোফাজ্জল হোসেন খান রেনু জানান, তিনি টাকা পেয়েছেন। শুক্রবার রাতে ওসি ফরিদ ফোন করে একটি জায়গায় ডেকে নিয়ে তাঁর পাওনা ১ লাখ ৪ হাজার ২৫০ টাকা পরিশোধ করেছেন।

সুবর্ণ ইলেক্ট্রনিকসের মালিক ফরহাদ জানান, তিনিও তাঁর বকেয়ার ১১ হাজার টাকা পেয়েছেন। এ ছাড়া অন্য কয়েকজন পাওনাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই বকেয়া পরিশোধ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় সাবেক ওসি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমি নান্দাইল থেকে বদলি হয়েছি তা ঠিক, কিন্তু এখনও তো সেখানে আমার জিনিসপত্র রয়ে গেছে। তাই ভেবেছিলাম পরে এক সময় এসে পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করে যাব। কিন্তু এখন সবার দেনাই মিটিয়ে দিয়েছি।’

নান্দাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম সমকালকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনেকের টাকা ইতোমধ্যেই পরিশোধ করছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বাকিদের টাকাও দ্রুতই পরিশোধ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ