‘ধর্ষকের প্রতিবাদ করা অনেকেই আমাকে বিছানায় শোয়ার প্রস্তাব দিয়েছে’
Published: 15th, March 2025 GMT
নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল সারাদেশ। বিশেষ করে ছোট্ট শিশু আছিয়ার মৃত্যুর পর সকল প্লাটফর্মেই ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানানো হয়েছে। সাধারণ মানুষের মত শোবিজাঙ্গনের তারকারাও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী জিনাত শানু স্বাগতা।
স্বাগতা জানালেন তার জীবনের বাস্তবতার কথা। তার মতে, পরিচিতি এমন অনেকেই ধর্ষকের বিচার চাইছেন, যারা নিজেরাই কাজের বিনিময়ে তাকে বিছানায় শোয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।
শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে স্বাগতা লিখেছেন, ‘আমার নিউজফিডে প্রচুর পুরুষকে দেখছি ধর্ষকের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে অনেকেই আমাকে কাজের বিনিময়ে শোয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে। রাজি হইনি বলে চিরতরে কাজের সুযোগও বন্ধ করে দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে তারাও কি ধর্ষক নয়?’
অভিনেত্রীর সেই পোস্টে একজন লিখেছেন, ‘তারা তোমার অনুমতি চেয়েছে, জোর জবরদস্তি করেনি ইচ্ছার বিরুদ্ধে। তোমার যেমন ‘না’ বলার স্বাধীনতা আছে, তাদেরও তেমন কাজে ‘না’ নেওয়ার স্বাধীনতা আছে।’
স্বাগতা লিখেছেন, ‘এটা হলো সিন্ডিকেট করে কাজ বন্ধ করা। যেন আমি বাধ্য হই ইয়েস বলতে। টেকনিকালি ধর্ষণ, যদি কাজ করতেই হয় তাহলে রাজি হতেই হবে।’
তবে কারা কাজের বিনিময়ে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছিল, তাদের নাম ফাঁস করেননি এই অভিনেত্রী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বকেয়া পরিশোধ করলেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা
হঠাৎ প্রত্যাহার হওয়া নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ অবশেষে কয়েকজন পাওনাদারের টাকা ফেরত দিয়েছেন এবং কয়েকজনকে দ্রুত দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হলে রাতেই বেশ কয়েকজন পাওনাদারকে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর নান্দাইল থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন ফরিদ আহমেদ। দায়িত্ব পালনকালে নান্দাইলে চুরি-ছিনতাইসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, নান্দাইলে কর্মরত অবস্থায় তিনি বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী কিনে টাকা পরিশোধ করেননি বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপরও কয়েকবার জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পুরস্কৃত হন।
বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ প্রশাসন ওসি ফরিদ আহমেদকে প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করে একটি আদেশ জারি করে। পরদিন শুক্রবার ভোরেই তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে নান্দাইল ত্যাগ করেন। এ খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল থেকে থানায় আসতে শুরু করেন পাওনাদাররা। তাঁকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সবাই চলে যান। স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে চাপে পড়েন প্রত্যাহার হওয়া ওসি ফরিদ।
এরপর শুক্রবার নান্দাইলে এসে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাওনাদারদের মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেন। কারও কারও কাছ থেকে টাকা পরিশোধের সময় চেয়ে নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
নান্দাইল পৌর বাজারের ইসহাক মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা মোফাজ্জল হোসেন খান রেনু জানান, তিনি টাকা পেয়েছেন। শুক্রবার রাতে ওসি ফরিদ ফোন করে একটি জায়গায় ডেকে নিয়ে তাঁর পাওনা ১ লাখ ৪ হাজার ২৫০ টাকা পরিশোধ করেছেন।
সুবর্ণ ইলেক্ট্রনিকসের মালিক ফরহাদ জানান, তিনিও তাঁর বকেয়ার ১১ হাজার টাকা পেয়েছেন। এ ছাড়া অন্য কয়েকজন পাওনাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই বকেয়া পরিশোধ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় সাবেক ওসি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমি নান্দাইল থেকে বদলি হয়েছি তা ঠিক, কিন্তু এখনও তো সেখানে আমার জিনিসপত্র রয়ে গেছে। তাই ভেবেছিলাম পরে এক সময় এসে পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করে যাব। কিন্তু এখন সবার দেনাই মিটিয়ে দিয়েছি।’
নান্দাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম সমকালকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনেকের টাকা ইতোমধ্যেই পরিশোধ করছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বাকিদের টাকাও দ্রুতই পরিশোধ করবেন।