অবিলম্বে ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার এবং আন্দোলনকারীদের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন দেশের ২০৮ বিশিষ্ট নাগরিক। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের হামলা-বাধা ও মামলার তৎপরতা বন্ধ করে বিভিন্ন অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শনিবার ২০৮ নাগরিক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব দাবি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ১১ মার্চ দুপুরে ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে ৯ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ছিল। ওই কর্মসূচিতে নারীদের ওপর পুলিশ নগ্নভাবে আক্রমণ করেছে, কোনো নারী পুলিশের উপস্থিতিও আমরা সেখানে দেখতে পাইনি। হামলার পর আবার ১২ মার্চ পুলিশ সেই আহতদের নামে, ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৭০–৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এজাহার দায়ের করেছে।’

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও তাঁর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। ডিবি পুলিশ তাঁর বাসায় গিয়ে এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেছিল। ফেসবুকে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ তাঁকে কিছু দূর নিয়ে এসে শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

এই বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিভিত্তিক আন্দোলন, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকের আন্দোলন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশকৃত সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশের যে আক্রমণ দেখা গেছে, তা হাসিনা আমলের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কতিপয় চিহ্নিত গোষ্ঠী যখন দেশের লেখক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, হত্যার হুমকি দিচ্ছে, মব সন্ত্রাস চালাচ্ছে, তখন পুলিশসহ সরকারি প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। আমরা সরকারের এই ভূমিকায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।’

বিবৃতিটিতে স্বাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি, অধ্যাপক রায়হান রাইন, সৈয়দ নিজার, রাজনৈতিক কর্মী হাসনাত কাইয়ুম, দৈনিক সমকালের নির্বাহী সম্পাদক আবু সাঈদ খান, অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব তুহিন খান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, আইনজীবী মানজুর–আল–মতিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়া-ইউক্রেনের পাল্টা বিমান হামলা চলছেই

যুদ্ধবিরতির কথোপকথন নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা থাকলেও, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ময়দানে তার কোনো চিহ্নের দেখা মিলছে না মোটেই। পরস্পরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এসব হামলায় বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংসের পাশাপাশি হচ্ছে প্রাণহানিও। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করেন তিনি। তবে নির্দিষ্ট কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ না হলে রুশ বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাবে। পুতিনের এ মন্তব্যের পর থেকেই ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে উভয় পক্ষ।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার ড্রোন দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হেনেছে এবং কিয়েভের আশপাশে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। 

এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে পরবর্তী করণীয় নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করেছে বলে রোববার জানিয়েছে ক্রেমলিন। তারা জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে ফোন করে গত বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা মস্কোর প্রতি ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। 

সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র চলতি সপ্তাহে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দেয়, যা ইউক্রেন গ্রহণ করে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনও কোনো সুস্পষ্ট জবাব দেননি। এ বিষয়ে শনিবার জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি না দিয়ে পুতিন শুধু ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নয়, ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মস্কো যুদ্ধ শেষ না করার পথ খুঁজছে।

এ ছাড়া ট্রাম্পের আকস্মিক অবস্থান পরিবর্তনে উদ্বেগ বেড়েছে ইউরোপে। এমনকি সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিষয়েও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ