কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাবিবুল হুদা চৌধুরী (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়।

নিহত হাবিবুল হুদা উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাহাশিয়াখালী সিকদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের অভিযোগ, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। একই দিনে রাজ্জাকের অনুসারীদের মারধরে পরিবারের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়।

নিহত হাবিবুল হুদার ছেলে সাইদুল হুদা বলেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের কার্যক্রমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক বাধা দিয়ে আসছিলেন। রাজ্জাককে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন সন্দেহ থেকে বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর বাবাকে খুন করা হয়।

হাবিবুল হুদার স্ত্রী খুরশিদা বেগম বলেন, আবদুর রাজ্জাককে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এমন অভিযোগে তাঁর এক ছেলেকে গতকাল জুমার নামাজের পর পিটিয়ে আহত করেন রাজ্জাকের কয়েকজন অনুসারী। খবর পেয়ে তিনি ছুটে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। তাঁরা মা–ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। এর মধ্যেই লোকজন নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান রাজ্জাক। এ সময় তাঁর স্বামীকে গুলি করা হয়েছে। আহত অবস্থায় স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাজ্জাকের লোকজনের মারধরে তাঁর এক মেয়েও আহত হয়েছে বলে জানান খুরশিদা।

জানতে চাইলে ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জায়গাজমি–সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।

হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে’ আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুদিনেও গ্রেপ্তার নেই

বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে’ আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুই দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সন্দেহভাজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ হওয়ায় তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, নাম-পরিচয় প্রকাশ হওয়ায় অভিযুক্ত গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ কারণে তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে রোববার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘সোমবার সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরুর আগেই ডিটেকশনের (শনাক্তের) ক্ষেত্রে সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে যাব। সম্ভব যদি হয়, বাই দিস টাইম (এই সময়ের মধ্যে) দুর্বৃত্তদের অ্যারেস্ট করতে সক্ষম হব, ইনশা আল্লাহ।’

তবে ডিএমপি কমিশনার এমন কথা বললেও পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার পরও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিতে আগুন দেওয়ার ঘটনার ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহপাঠীরা ‘অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে পারার’ কথা জানান। তাঁরা বলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওই যুবক থাকতেন মাস্টারদা সূর্য সেন হলে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারী হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁকে আর হলে দেখা যায়নি।

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল শোলা দিয়ে নতুন করে বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

সম্পর্কিত নিবন্ধ