কোনো মব জাস্টিস আমরা সমর্থন করি না: জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান
Published: 15th, March 2025 GMT
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত কোনো কিছুই আমরা চাই না। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনা পাবলিকের মতামত ও আবেগকে প্রভাবিত করে। তবুও আমরা সর্বাবস্থায় বলি, আপনারা ধৈর্য ধরুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করুন এবং বিচারকে তার আপন গতিতে এগোতে দেন। সেটার মধ্যেই কল্যাণ। মব জাস্টিস শুধু এখানে কিংবা এখন নয়, যুগ যুগ ধরেই এটি চলে আসছে। কোনো মব জাস্টিস আমরা সমর্থন করি না।’
আজ শনিবার সকালে মাগুরার শ্রীপুরে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত শিশুটির গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।
শিশুটির পরিবারকে সান্ত্বনা ও সহানুভূতি জানাতে আজ সকালে একটি হেলিকপ্টারে মাগুরার শ্রীপুরে আসেন জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা। সকাল ১০টার দিকে প্রথমে তিনি শিশুটির কবর জিয়ারত করেন। এরপর স্থানীয় একটি বিদ্যালয় মাঠে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, ৯০ দিনের মধ্যে বিচার ও রায় কার্যকর দেখতে চাই। অনেকে বলেছে, এক সপ্তাহ, কিন্তু এ দেশের আইনে এক সপ্তাহে বিচার সম্ভব নয়। এ জন্য বলেছি, ৯০ দিন।’
জামায়াতের আমির বলেন, তাঁরা এই মেয়ের হত্যাকারীদের অত্যন্ত দ্রুত শাস্তি কার্যকর দেখতে চান। তাহলে এই পরিবার হয়তো মানসিক সান্ত্বনা পাবে। দেশবাসীও একটা সান্ত্বনা পাবে। পাশাপাশি বিচার কার্যকর হলে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক হবে।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এম বি বাকেরের সভাপতিত্বে ওই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসাইন।
দোয়া মাহফিল শেষে শিশুটির বাড়িতে যান জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানসহ দলটির নেতারা। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিশুটির পরিবারকে সান্ত্বনা ও সহানুভূতি জানানোর পাশাপাশি কীভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটি বুঝতেই তাঁদের বাড়িতে আসেন দলটির আমির।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন ত বন র আম র পর ব র ইসল ম দলট র
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই তৈরি করতে হবে: নাহিদ
মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, জনগণের কাছে সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি, সংস্কারের যে ধারাবাহিকতা তা বাস্তবায়নের জন্য জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করে বেরিয়ে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন নাহিদ ইসলাম। হোটেল ইন্টারকনটিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে নাহিদের পাশাপাশি যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন অংশ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে একটি সংস্কারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেটাই বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রধানেরা তাদের নিজ নিজ নিজ সংস্কার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ পরিকল্পনা তুলে ধরেছিলেন। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সংস্কার বিষয়ে তাঁদের দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি মনে করে জনগণের কাছে বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো বিচার ও সংস্কার। মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি জনগণের কাছে সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি, সংস্কারের যে ধারাবাহিকতা, তা বাস্তবায়নের জন্য জুলাই সনদে দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
সংবিধান সংস্কার নিয়ে এনসিপির অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার বিষয়ে আমাদের অবস্থান হলো, গণপরিষদের মাধ্যমেই সংস্কার করতে হবে, অন্যথায় সংসদের সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকেও এটাই দেখতে পাই। আমরা আমাদের এই দলীয় অবস্থান সংক্ষেপে বলেছি। জাতিসংঘ মহাসচিবের চাওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার যেন নিজেরাই সমঝোতায় আসে, একটা ঐক্যমতে আসে এবং একসঙ্গে কাজ করেন।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা মনে করি এবং বলেছি, নির্বাচনকে আমরা একটি সংস্কারের প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি, সংস্কারের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখি। কোনো রকম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কাজে দেবে না। অন্য সব রাজনৈতিক দলও এই কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। এখানে মতপার্থক্য হচ্ছে, কোন সংস্কারটা কখন হবে, নির্বাচনের আগে কতটুকু হবে, নির্বাচনের পরে কতটুকু হবে। আমরা মনে করি, জুলাই সনদের মধ্যে এর বাস্তবায়ন হলে যে মতপার্থক্যগুলো আছে, সেগুলো কেটে যাবে। আমরা ঐক্যমতে আসতে পারব।’
সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কি না, জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখানে বিস্তারিত আলাপের সুযোগ ছিল না। সংস্কার বিষয়ে সামগ্রিক আলোচনা হয়েছে। গণপরিষদ ছাড়া সংবিধানের মৌলিক কোনো পরিবর্তন টেকসই হবে না বলে মনে করে এনসিপি। সেই জায়গা থেকে আমরা গণপরিষদ নির্বাচন চাচ্ছি। সামনের যে জাতীয় নির্বাচন, সেটা একই সঙ্গে আইনপরিষদ ও গণপরিষদ নির্বাচন, পাশাপাশি আমরা বিচারের বিষয়টা বলেছি।’
বিচারের বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে বিচার ও সংস্কার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি। ধন্যবাদ জানিয়েছি। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, আমরা যেন নিজেরা ঐক্যমতে আসতে পারি। আমরা যদি নিজেরা ঐক্যমতে আসতে পারি, তারা তাদের জায়গা থেকে সহযোগিতা করবে।’
১৩ মার্চ বিকেলে চারদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। দ্বিতীয় দিনে গতকাল দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থীশিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন।