হেলিকপ্টারে মাগুরা যাওয়া নিয়ে সারজিস বললেন ‘সিট খালি ছিল’
Published: 15th, March 2025 GMT
ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুটির জানাজায় অংশ নিতে পুলিশের হেলিকপ্টারে করে মাগুরা যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতা। এসময় তাদের হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসতে দেখা যায়। এছাড়াও একটি কক্ষের সোফায় তাদের বসে ফোন চাপতে ও কথা বলতে দেখা যায়।
এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করায় সমালোচনা করেন অনেকেই। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন সারজিস আলম।
আজ শনিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এসব নিয়ে একটি পোস্ট দেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, চলেন সোজাসাপ্টা কিছু আলাপ করি। ওই যে-যেটা নিয়ে আপনারা আলাপ করছেন সেই ফুটেজ নিয়ে। নৃশংস একটা ঘটনা ঘটলো। আমি আমার জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে জানালাম দ্রুত আসামি গ্রেপ্তার করার কথা। আবার-হাইকোর্ট থেকে ঘোষণা আসলো ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমার মতামত জানালাম। ১৮০ দিন অনেক বেশি হয়ে যায়। এটা ১-২ মাসের মধ্যে করা উচিত। না হলে মানুষের মাথা থেকে ঘটনাটা অনেকটাই মুছে যায় এবং সেই অপরাধের শাস্তি আদতে সমাজে অপরাধ দমনে তেমন প্রভাব রাখতে পারে না।
সারজিস লেখেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে আমি একাই জানিয়েছি কিংবা আমার জানানোর জন্যই গ্রেপ্তার হয়েছে বা আইন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার জায়গা থেকে মনে হয়েছে এটা আমার করা উচিত তাই আমি করেছি। তবে সে বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হলো। আমিও ঢাকা মেডিকেলে গেলাম। যখন জানলাম আইসিইউ-তে আছে তখন আর আইসিইউ-তে দেখতে যাইনি। কারণ বাইরে থেকে আইসিইউ-তে দেখতে গেলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। মেডিকেলের বাইরে থেকে খোঁজখবর নিয়ে চলে এসেছি। ছবি পোস্ট করিনি।
এনসিপির এই নেতা লেখেন, এরপর যখন জরুরি অবস্থায় সিএমএইচ-এ নেওয়া হলো তখন সেদিনই সন্ধ্যায় নাগরিক পার্টির কয়েকজনসহ গিয়েছি। সেখানেও আইসিইউ-তে ছিল। দেখতে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল বলে সিএমএইচ এর সামনে থেকে ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে কথা বলে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে বাসায় ফিরেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের থেকে খোঁজ নিয়েছি। এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেওয়া অংশটুকুকে সামগ্রিক মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো।
সারজিস লেখেন, যখন শুনলাম আছিয়া আর নেই তখন সিএমএইচে ছুটে গিয়েছি। সেনাবাহিনী, র্যাব থেকে পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত হেলিকপ্টারে যখনই একাধিক সিট খালি থাকার কথা শুনেছি তখনই মাগুরায় গিয়ে আছিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি এবং জানাজা পড়ে আবার ঢাকায় ব্যাক করেছি। এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেয়া অংশটুকু কে "সামগ্রিক" মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো। তার মানে আমরা যতটুকু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করি ততটুকুই হচ্ছে বলে আপনারা মনে করেন এবং সেটাকে পুরো ঘটনা ধরে জাজমেন্ট শুরু করে। অর্থাৎ আপনারাও আসলে ফুটেজের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আবার যদি কোনো কিছু না দেই তখন মনে করেন কিছুই করা হয়নি! কি অদ্ভুত!
সারজিস লেখেন, দিলে বলেন ফুটেজমুখী আর না দিলে বলেন কিছুই করেনি। আপনাদের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কবে একটা সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হবে?
তিনি লেখেন, আবার আরেকটা ঘটনা লক্ষ্য করেন। জানাজা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। আমরা পৌঁছেছি সাড়ে পাঁচটায়। এই দেড় ঘণ্টা একটা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করেছি। তার মধ্যে কয়েক মিনিট হয়ত ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। ঠিক ওই সময়ে কেউ ছবি তুললো এবং কালের কণ্ঠের মতো একাধিক বারের মতো এবারও অপেশাদারত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের অনলাইন পোস্টারে সেটা প্রকাশ করলো। পাশাপাশি এমনভাবে দেখালো যে আমরা মনে হয় পুরো সময় বসে শুধু ফোনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চাইলেই কিন্তু তারা ওখানে বসে থাকার অন্য সময়ের নরমাল কোনো ছবি ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু কিছু রিয়াকশন বেশি পাওয়ার আশায় সেটা তারা করেনি।
তিনি লেখেন, আচ্ছা নিজের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন- দেড় ঘণ্টা কোথাও বসে থাকলে অন্তত কয়েক মিনিট আপনারা ফোনের নোটিফিকেশন চেক করতেন কি না? যদি করেন তাহলে আপনাদের এই ভিউখোর মনোভাব বন্ধ হবে কবে? কবে পেশাদারত্বের পরিচয় দেওয়া শুরু করবেন? শুনেন, ঘরে বসে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাজমেন্টের বড় বড় এনালাইসিস কপচানো যায়। কিন্তু যাদেরকে আপনারা সুযোগ পেলেই নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করেন- যেকোনো ফরমেটে, যেকোনো সীমাবদ্ধতা নিয়েই হোক না কেন; দিনশেষে তারাই মাঠে দৌড়ায়।
সারজিস আরও বলেন, এরপর থেকে অনলাইনে এসব এনালাইসিস দেওয়ার আগে অফলাইনে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করে কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। আমরা আপনার ভালো কাজগুলো অনুসরণ করার অপেক্ষায় থাকবো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প আম র জ ফ সব ক আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
মার্চ তো বটেই, এপ্রিলের শুরুতেও বুমরাহকে পাবে না মুম্বাই
আইপিএল শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। দলের সেরা অস্ত্র, পেস আক্রমণের ভরসা জাসপ্রিত বুমরাহকে প্রথম কয়েকটি ম্যাচে পাচ্ছে না ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। মার্চের পুরোটা তো বটেই, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও তার মাঠে নামার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ক্রিকেট মহল।
ভারতের তারকা পেসার এখনো বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে (এনসিএ) পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন। বিসিসিআই-এর মেডিকেল টিম এখনো তাকে পুরোপুরি ফিট ঘোষণা করেনি। ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত মুম্বই দলে যোগ দেওয়া সম্ভব নয় তার জন্য।
২০২৩ সালে পিঠের অস্ত্রোপচারের পর এটিই তার প্রথম বড় ধাক্কা। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে বোলিং করতে গিয়েই পুরনো চোটে ভুগতে শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে তাকে দেখা যায়নি।
আরো পড়ুন:
প্রিমিয়ার লিগে বোলারদের দিন
‘ব্যাট অথবা বল হাতে, সবচেয়ে দরকারি মুহূর্তে মাহমুদউল্লাহ পারফর্ম করেছে’
২৩ মার্চ চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের আইপিএলে যাত্রা শুরু করবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এরপর ২৯ মার্চ গুজরাট টাইটান্স, ৩১ মার্চ কলকাতা নাইট রাইডার্স, ৪ এপ্রিল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস এবং ৭ এপ্রিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হবে দলটি। প্রথম পাঁচটি ম্যাচে বুমরাহকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
মুম্বইয়ের পেস আক্রমণের মূল ভরসাই ছিলেন বুমরাহ। তার অনুপস্থিতিতে আকাশ মাধওয়াল বা নতুন কোনো বোলারকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হতে পারে। আর মুম্বইয়ের টিম ম্যানেজমেন্টও কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না। কারণ, বুমরাহর ফিটনেসে একবার সমস্যা হলে সেটি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সাবেক বোলিং কোচ শেন বন্ড সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘বুমরাহ যদি আবার পিঠে আঘাত পান, তবে তার ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারে।’’
সেক্ষেত্রে বুমরাহ কি আইপিএলের মাঝপথে ফিরতে পারবেন? নাকি আরও দীর্ঘ সময় বাইরে থাকতে হবে? এ প্রশ্নই এখন মুম্বই শিবিরের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ।
ঢাকা/আমিনুল