‘কানাডা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবে না’
Published: 15th, March 2025 GMT
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, কানাডা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবে না। গতকাল (শুক্রবার) দেশটির ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর তিনি এ কথা বলেন। খবর স্কাই নিউজের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংযুক্তির হুমকি প্রত্যাখ্যান করে অটোয়ার রিডো হলের বাইরে জনতার উদ্দেশে কার্নি বলেন, “আমরা কখনোই, কোনো আকারে বা আকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হব না। আমরা মৌলিকভাবে ভিন্ন একটি দেশ।”
ব্যাংক অব কানাডা ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক এই গভর্নর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কানাডা সম্মান আশা করে। একইসাথে তিনি আশা করেন, তার সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে ‘একসাথে কাজ করার’ উপায় খুঁজে বের করবে।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের অনুরোধের পর ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান পুতিনের
৪৩ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে কার্নি সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, সাবেক সরকারি হাউজ নেতা কারিনা গোল্ড ও সাবেক সংসদ সদস্য ফ্রাঙ্ক বেলিসকে ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ ভোটে পরাজিত করে কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হোন। এর আগে কোনো নির্বাচনে জেতার অভিজ্ঞতা নেই তার এবং হাউজ অফ কমন্সে তার কোনো আসন নেই, যা একজন প্রখানমন্ত্রী হিসেবে তাকে কানাডার ইতিহাসে বিরল করে তুলেছে।
গতকাল সকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, “কানাডা অর্থনৈতিকভাবে আমেরিকার ৫১তম রাজ্য হলে দেশটির জন্য আরো ভালো হবে।” তার এ মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে কার্নি বলেন, “আপনি শুধু এটুকুই বলতে পারেন যে, এটা পাগলামি।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা মাত্র
বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।
একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।
লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’
ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’
এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)
মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।
আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।
আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫