নরসিংদীর পলাশের শীতলক্ষ্যা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজের প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭) নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল লাশটি উদ্ধার করে। এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহাদ ইসলাম (১৮) নামের আরেক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছিল ফায়ার সার্ভিস।

গতকাল বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকায় নদীতে গোসল করতে নামেন চার বন্ধু। দুজন তীরে উঠে আসতে পারলেও অন্য দুজন তলিয়ে যান।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭) সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার নাইমুড়ি এলাকার কামরুল হাসানের ছেলে ও নিহাদ ইসলাম (১৮) ভোলার সদর উপজেলার কোরালিয়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে। এ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা দুজন হলেন রেজাউল তানভীর (১৮) ও সামির খান (১৭)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদুজ্জামান ও রেজাউল ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর এলাকার প্রাণ-আরএফএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকরি করেন। সামির ও নিহাদ ঢাকা থেকে তাঁদের কাছে ঘুরতে এসেছিলেন। ছোটবেলায় তাঁরা চারজন রাজধানীর পল্লবী এলাকায় একসঙ্গে চলাফেরা করেছেন।

বেঁচে ফেরা ওই দুই বন্ধু ও পুলিশ জানায়, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চারজন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ইফতার করতে যান। ৪টার দিকে তাঁরা নদীর পানিতে গোসল করতে নামেন। নদীতে তাঁরা পরস্পরের দিকে পানি ছুড়ে মারছিলেন। একপর্যায়ে স্রোতের টানে একজন তলিয়ে যাচ্ছেন দেখে আরেক বন্ধু হাত বাড়িয়ে দেন। এ সময় দুজনই তলিয়ে যান। পরে অন্য দুজন সাঁতার না–জানায় দ্রুত তীরে উঠে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাটি জানান। তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। নদীতে নেমে তাঁরা নিহাদের লাশ উদ্ধার করেন।

রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধার করা যায়নি।
আজ সকাল ৮টা থেকে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধারের জন্য অভিযান শুরু করে। পরে বেলা ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ উদ্ধারে সক্ষম হয় তারা।

পলাশ থানার উপপরিদর্শক মো.

আবু হানিফ বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই আসাদুজ্জামান ও নিহাদ ইসলামের লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৬ বছর পর পাবিপ্রবির বর্ষবরণে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া

৬ বছর পর পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এর আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল উৎসবের রঙ, বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া।  

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় আয়োজনের অংশ হিসেবে শুরু হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ  শোভাযাত্রা।

পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস.এম আব্দুল-আওয়ালের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

আনন্দ শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মূল মঞ্চে এসে শেষ হয়। মহিশের গাড়ি, পালকি, মুখোশ, গ্রামীণ খেলনা, রঙিন ব্যানার, পটচিত্র ও বাদ্যযন্ত্রে মুখর ছিল পুরো আয়োজন।

দিনব্যাপী বর্ষবরণের আয়োজনে আরো ছিল স্বাধীনতা চত্ত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলা। এতে উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি বিভাগের শিক্ষার্থী,  শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, পাবিপ্রবি প্রেসক্লাব, ছাত্র ও ছাত্রী হলকে স্বতন্ত্রভাবে বর্ণিল সাজে সজ্জিত দোকানে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার অংশগ্রহন করতে দেখা যায়।

ইইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ খান রাচি বলেন, “এই প্রথমবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখতে পারছি। শুনেছি এর আগে ২০১৯ সালে আমাদের ক্যাম্পাসে এরকম উৎসব মুখর পরিবেশে এমন আয়োজন হয়েছিল। নিজেদের হাতে স্টল সাজানো, পিঠা বানানো, বিক্রি করা। সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা। বাংলা সংস্কৃতির এমন প্রাণবন্ত আয়োজন আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে।”

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব বলেন, “সারাদিন ক্যাম্পাসে একটা অন্যরকম অনুভূতি ছিল। সবাই যেন একে অপরের আপন। এই ধরনের আয়োজন আমাদের মধ্যে বন্ধন গড়ে তোলে, সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে দেয়।”

৬ বছর আগে ২০১৯ সালে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষের উৎযাপন করা হলেও মাঝখানে করোনা, রোমজান থাকার কারনে গত কয়েকবছর এই উৎসব পালন করা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ