নেত্রকোনায় চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কোপানোর অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
Published: 15th, March 2025 GMT
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জ পৌর শহরের পাথরঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই ব্যবসায়ীর নাম জসিম উদ্দিন (৩৫)। তিনি ঢাকায় রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স আফিফ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী। অভিযুক্ত যুবদল নেতার নাম ফয়সাল আহমেদ ওরফে খোকন। তিনি পৌর যুবদলের সদস্যসচিব। আহত ব্যবসায়ী বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আহত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী নিশা আক্তার জানান, জসিম উদ্দিন পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। গত বছরের ৬ আগস্ট যুবদল নেতা ফয়সাল আহমেদ তাঁর স্বামীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হন। গত বৃহস্পতিবার জসিম উদ্দিন ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। পরদিন শুক্রবার মোহনগঞ্জ পাথরঘাটা এলাকায় ইফতারি কিনতে যান জসিম। এ সময় ফয়সাল তাঁর ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী নিয়ে জসিম উদ্দিনের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান। হামলাকারীরা রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে জসিমকে গুরুতর জখম করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিশা আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীর মাথায় রামদার কোপ লেগেছে। এ ছাড়া রড দিয়ে পেটানোর কারণে হাত–পা ভেঙে গেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
যুবদল নেতা ফয়সাল আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ঘটনার পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ম হনগঞ জ ব যবস য় ফয়স ল এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
প্যারোলে মুক্তি পেলেও বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি যুবলীগ নেতা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সাড়ে তিন ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নিতে গিয়েছিলেন যুবলীগের এক নেতা। কিন্তু বাড়িতে পৌঁছার আগেই জানাজা সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে শেষবারের মতো বাবাকে একনজর দেখতে পারেন তিনি।
উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য সোহাগ মিয়াকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। তার পর থেকে তিনি কারাগারে। সোহাগ রাজিবপুর ইউনিয়নের মাইজহাটি গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। গতকাল বুধবার সকাল সাতটায় নিজ বাড়িতে মারা যান আবু বক্কর সিদ্দিক (৫৩)। এরপর সোহাগ মিয়া যেন বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেন, সে জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন তাঁর মা ফজিলা খাতুন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় সোহাগকে। বিকেল পাঁচটায় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশি তত্ত্বাবধানে সোহাগকে বের করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সোহাগ বাড়িতে পৌঁছান।
এদিকে বিকেল সোয়া পাঁচটায় নির্ধারিত সময়ে শাহগঞ্জ বাজারসংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে জানাজা হয় আবু বক্কর সিদ্দিকের। জানাজায় অংশ নিতে পারেননি সোহাগ। পরে লাশ নিয়ে বাড়ির আঙিনায় অপেক্ষা করতে থাকেন স্বজনেরা। সোহাগ পুলিশি নিরাপত্তায় বাবার লাশের কাছে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আশপাশের মানুষ ভিড় শুরু করলে পুলিশ সদস্যরা সোহাগ মিয়াকে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। রাত রাত সাতটার দিকে দাফন করা হয় আবু বকর সিদ্দিককে।
সোহাগ মিয়াকে প্যারোলে বের করার প্রক্রিয়ায় পরিবারকে সহযোগিতা করেন স্থানীয় বাসিন্দা জনি দে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোহাগকে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা একটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সোহাগের ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্যারোলে মুক্তি পেতে আমি সহযোগিতা করেছি। কাগজপত্র প্রস্তুত করতে সময় লেগে যায়। বিকেল পাঁচটায় সোহাগকে কারাগার থেকে বের করে বাড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। মৃত বাবাকে শেষবারের মতো দেখলেও জানাজায় অংশ নিতে পারেনি সোহাগ।’
সোহাগের চাচাতো ভাই রাজিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম সম্প্রতি প্রবাসে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই শাহগঞ্জ বাজারে ছোট একটি দোকান করে সংসার চালায়। রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’
রাজিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘জানাজার সময় পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং লোকজনও চলে আসে। আমরা খবর নিয়ে জানতে পারি সোহাগের পৌঁছাতে সন্ধ্যার পার হয়ে যাবে। রোজার দিন; পরে জানাজায় লোক পাওয়া যাবে না। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে জানাজা সম্পন্ন করা হয়।