জামাল ভূঁইয়া, সৈয়দ শাহ কাজেম, ফাহমিদুল ইসলাম ও তারিক কাজী; এক ফ্রেমে চার প্রবাসী ফুটবলার। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটি বড় বিজ্ঞাপনই বলা চলে। ছবিতে হামজা দেওয়ান চৌধুরী থাকলে আরও পূর্ণতা পেত। কিছুদিন পরই জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা। তখন বাংলাদেশের ফুটবলে দেখা যাবে একসঙ্গে পাঁচ প্রবাসী ফুটবলার। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে এই পাঁচ প্রবাসী একসঙ্গে খেলার সুযোগ পান বা না পান বাংলাদেশের ফুটবলে এখন বড় আলোচনায় তারা। এই প্রবাসীদের ঘিরেই নতুন স্বপ্ন দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।

বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম প্রবাসী হিসেবে আবির্ভাব ঘটে জামাল ভূঁইয়ার। ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা ডেনমার্ক প্রবাসী এ মিডফিল্ডার এখন দলের অধিনায়কও। তাঁর পথ ধরে লাল-সবুজের জার্সিতে ২০২১ সালে অভিষেক ঘটে ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক রায়হান কাজীর। গত বছর তৃতীয় প্রবাসী হিসেবে বাংলাদেশ দল সুযোগ মেলে কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত সৈয়দ শাহ কাজেমের। তিনি হলেন সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর ছেলে। 

কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে উঠেছেন কানাডায়। তাঁকে নিবন্ধন করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাফুফেকে। এর পেছনে বড় কারণ, কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে আর কানাডার হয়ে যুব দলে না খেলা। ২০২৪ সালের ১১ জুন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ঘটে এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। কাতারের খলিফা স্টেডিয়ামে ৭৭ মিনিটে শেখ মোরসালিনের বদলি হিসেবে নেমেছিলেন ২৬ বছর বয়সী এ ফুটবলার। 

তবে বাংলাদেশ দলে বড় চমক ইতালিয়ান প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম। হামজাকে নিয়ে সবাই যখন আলোচনায়, তখনই ভারত ম্যাচের জন্য প্রাথমিক দলে ফাহমিদুলকে অন্তর্ভুক্ত করেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। ইতালির সিরিয়ে ডি লিগের ক্লাব ওলবিয়া কালসিওর হয়ে লেফট ব্যাক এবং উইং ব্যাক পজিশনে খেলেন ফাহমিদুল। বর্তমানে সৌদি আরবে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলনও করছেন তিনি। শুক্রবার অনুশীলনে একসঙ্গে তোলা চার প্রবাসীর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জামাল লিখেছেন, ‘ওয়েলকাম টু দ্য টিম ফাহমিদুল’।

পাঁচ প্রবাসীর মধ্যে সবার আকর্ষণ হামজাকে ঘিরে। ১৭ মার্চ ইংল্যান্ড থেকে সিলেটে ফিরবেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এ ফুটবলার। ১৯ মার্চ ক্যাম্পে যোগ দেবেন তিনি। হামজার অপেক্ষায় থাকা পুরো দল সৌদি আরবের তায়েফে কঠোর অনুশীলন করছেন। কীভাবে ভারতকে থামানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে গতকাল বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় বলেছেন সহকারী কোচ হাসান আল মামুন, ‘আজকে (শুক্রবার) যেটাতে ফোকাস করেছিলাম, কীভাবে ডিফেন্ডিং ব্লকগুলো করব। কে প্রেসিংয়ে যাবে, কে তাকে ব্যালান্স করবে; এই টেকনিকগুলো নিয়ে কাজ করেছি। পাশাপাশি ভারত কীভাবে অ্যাটাকিংয়ে যায় আর আমরা কীভাবে ব্লকগুলো তৈরি করব এ নিয়ে আমাদের ক্লাস হয়েছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল দ শ র ফ টবল ফ টবল র প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে চলে যেতে বলছে না

‘দেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে চলে যেতে বলছে না, বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে’। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।  

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।  

নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকে নিতে হবে: নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে। তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।  

একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগুতে চাই: সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগুতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে চলে যেতে বলছে না
  • ঢাবি প্রশাসনকে রাজনীতির বাইরে রাখতে চান উপাচার্য
  • বগুড়ায় একসঙ্গে জন্ম নিল চার নবজাতক, মা নাম রাখলেন মোহাম্মদ, আহম্মেদ, ওমর ও রহমান
  • বগুড়ায় একসঙ্গে ৪ সন্তান জন্ম দিলেন জুঁই
  • পুকুরে গোসলে নেমে একসঙ্গে তলিয়ে গেল দুই শিশু, লাশ উদ্ধার