টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহাসড়কে উল্টে যাওয়া আলুভর্তি ট্রাক সরানোর সময় অপর ট্রাকের চাপায় ইলিয়াস হোসেন (৪২) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় গুলজার মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকার আন্ডারপাসের ওপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ওসিসহ আরও ৬ জন আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান, সার্জেন্ট খাইরুল ইসলাম, কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, আলু ব্যবসায়ী আল আমিন ও তুষার। আহতদের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, রংপুর ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আলুভর্তি একটি ট্রাক রাত ২টার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় পৌঁছুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের আন্ডারপাসের ওপর উল্টে যায়। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বিঘ্ন ঘটে। খবর পেয়ে গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসির নেতৃত্বে তিন পুলিশ সদস্য ট্রাকটি মহাসড়ক থেকে সরানোর কাজ শুরু করেন। রাত ৩টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা গাজীপুরগামী অপর একটি ট্রাক দায়িত্বরত পুলিশ, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের চাপা দেয়। এতে পুলিশ, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ সাতজন আহত হয়। আহতদের কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রমিক ইলিয়াসকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পুলিশ মহাসড়ক থেকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক সরানোর কাজ করছে। এ সময় আন্ডারপাসের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গোড়াই হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট র ক দ র ঘটন ট র ক র চ প য় ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে তিনটি বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে হাসপাতাল করবে চীন। নীলফামারীতে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি করা হবে। হাসপাতাল করার জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এসব তথ্য জানান।

একই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর জানান, বাংলাদেশে চীনের সহয়তায় মূলত তিনটি বড় হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি চলছে।

আরো পড়ুন:

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ওষুধ ‘চুরি’, আটক ২

লক্ষ্মীপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া গেল নবজাতক, হাসপাতালে ভর্তি

তিনি বলেন, “নীলফামারীতে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল করবে চীন। প্রাথমিকভাবে ১৬ একরের মতো একটি জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। এটার দেখভাল করছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আর একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে সাভার ধামরাইয়ে। এটি হবে পুর্নবাসন প্রতিষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় আহতদের সেবা দেওয়া হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫০০ থেকে ৭০০ শয্যার আরো একটি হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এটা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। এর বাইরে চীনের অর্থায়নে চট্টগ্রামে বার্ন ও প্লাস্টিক ইউনিট পরিচালিত হচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “চীনের রাষ্ট্রদূতকে আমরা বলেছিলাম, রবোটিক ফিজিওথেরাপির সেট একটি আমাদের উপহার হিসেবে দিতে। আমাদের শুধু আন্দোলনে আহতদের জন্য না, ভবিষ্যতেও দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য লাগবে। চীন আমাদের কথা রেখেছ, একটি সেট আমাদের উপহার হিসেবে দিয়েছে। এটা বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আছে। এটা স্থাপন করতে আমাদের ৬ হাজার স্কয়ার ফুটের মতো জায়গা লাগবে। আমরা সেই জায়গা ঠিক করেছি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাবেক বিএসএমএমইউ)। সেখানে এটা ডেডিকেটেড করা থাকবে। আমাদের আহতরা সেখানে ফিজিওথেরাপি নিতে পারবে। তার জন্য আমরা একটি দলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দিব। ব্যাংকক থেকে আমরা বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসব, তারা এখানে প্রশিক্ষণ দিয়ে গেলে ভবিষ্যতে সবাই এখান থেকে সহায়তা পাবেন। আমাদের এখানে একটা রবোটিক ফিজিওথেরাপি বসালে হবে না, আমরা উত্তরবঙ্গে এবং চট্টগ্রামে দেওয়ার চেষ্টা করবো। যাতে ওখানকার রোগীদের এখানে ফিজিওথেরাপি দিতে আনতে না হয়।”

এ সময় উপদেষ্টা জানান, অভ্যুত্থানে ১ চোখ হারিয়েছে ৪৫০ জন, দুই চোখ হারিয়েছে ২১ জন।

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বাসেত খান মুসার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। অভ্যুত্থানে আহতরা আজীবন ফ্রি চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্য কার্ড পাবেন বলেও জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ৪০ জনকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। দেশে আহতদের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে ২৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ডা. মো.আবুল কেনান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে তিনটি বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা