সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও নাশকতার অভিযোগে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কাশিমাড়ী ইউনিয়ন কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমানত মোল্যা। ১৪ মার্চ রাতে শ্যামনগর থানায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় ৫১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০-১২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি জগলুল হায়দার, সহ-সভাপতি জহুরুল হায়দার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী আনিছুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের প্রায় ২০-২২ জন নেতার নামও রয়েছে।

তবে বিএনপির একাংশের দাবি, মামলায় ষড়যন্ত্র করে কাশিমাড়ী ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন— ইউনিয়ন শ্রমিকদল সভাপতি আতিয়ার, যুবদলের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান, ইউনিয়ন কৃষকদল সভাপতির পিতা বিএনপি কর্মী নজরুল ইসলাম নজু, শ্রমিকদল নেতা রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম এবং কৃষকদলের সদস্য সচিব আব্দুল গফ্ফারসহ অন্যান্য নেতাকর্মী।

উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুর রশিদ অভিযোগ করেছেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ মামলা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপিরই একাংশের নেতা আজিজুল সরদার, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল ওয়াহেদ ও আশেক মুন্নার ষড়যন্ত্রে এসব নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১২ মার্চ ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে জামায়াতের কিছু কর্মীও জড়িয়ে পড়ে। এরপর ১৩ মার্চ রাতে জয়নগর এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় থেমে থেমে কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, কাশিমাড়ী এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপি নেতারা একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম থাকলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মামলার বাদী আমানত মোল্যা জানান, বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর নাম মামলায় এসেছে কারণ তারা লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন।

এদিকে, মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আজিজুল সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি। উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আশেক ইলাহী মুন্না জানান, তিনি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে ছিলেন এবং মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদও নিজেকে মামলার বিষয় থেকে দূরে থাকার কথা জানান।

এদিকে এই মামলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা মামলাটিকে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার তদন্ত করছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম দ র শ য মনগর ষড়যন ত র ব এনপ র ক ষকদল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

হবিগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ মানহীন দেখিয়ে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে মেডিকেল কলেজটির শিক্ষার্থীরা শহরের প্রধান সড়কে (হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের সামনে) এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় সড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের দাবির কথা তুলে ধরেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. আবু হাসান, ইয়াসিন মনির, সাকিব মাহমুদ, রিয়েল সরকার, জোবায়ের আহমেদ, আনিসুর রিয়াজ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের স্থান নির্ধারণ করা হয় আট বছর আগে। একটি মেডিকেল কলেজ পরিচালনার জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা যে অবকাঠামো প্রয়োজন, সবই আছে এই মেডিকেল কলেজের। স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য তাঁরা শুরু থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। বিগত সরকারের ব্যর্থতায় কলেজটি এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি। সে দায় এ কলেজের নয়। কিন্তু এখন হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজকে মানহীন কলেজ দেখিয়ে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তা কিছুতেই কলেজের শিক্ষার্থীরা মেনে নেবেন না।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে মেডিকেল কলেজের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবুল হাসান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, দেশের ২৬টি মেডিকেল কলেজকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মানহীন দেখিয়ে পাশের অন্য মেডিকেল কলেজের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে। সেই ২৬টি কলেজের মধ্যে হবিগঞ্জ কলেজকে অন্যত্র সরানোর ষড়যন্ত্র চলছে। একজন দক্ষ চিকিৎসক তৈরির জন্য প্রথমেই প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক, প্রয়োজনীয় মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং হাতে–কলমে শেখার জন্য প্রয়োজনীয় রোগী ও পযাপ্ত রোগী। এর সবই আছে এ মেডিকেল কলেজের। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০ জন। শিক্ষক আছেন ৫৫ জন। প্রতি ৬ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন দক্ষ শিক্ষক আছেন।’

আবুল হাসান আরও বলেন, এ কলেজ থেকে দুটি ব্যাচে ডাক্তারি পড়াশোনা শেষ করে বের হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। তাঁদের শিক্ষার ফল খুবই মানসম্পন্ন। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনে মেডিকেল কলেজটির অস্থায়ী ক্যাম্পাস থাকায় প্রতিদিন হাসপাতালে আসা সহস্রাধিক রোগীকে কলেজের শিক্ষার্থীরা সেবা দিয়ে আসছেন। এতে হবিগঞ্জ জেলার ৩০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় এই মেডিকেল কলেজকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া বা অন্য কোনো কলেজের সঙ্গে যুক্ত করার যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা এ কলেজের শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।

হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এ কলেজে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষ নিয়ে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের ভবিষ্যৎকে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে দেওয়া যাবে না: গণতন্ত্র মঞ্চ
  • দ্রুত নির্বাচন দিন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার: রুহুল কুদ্দুস তালুকদার
  • আসামির পক্ষে-বিপক্ষে থানায় বিএনপির ২ পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা, এক নেতাকে লাথি আসামির
  • থানায় কৃষকদল নেতাকে লাথি মারলেন আসামি
  • হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, মহাসড়ক অবরোধ
  • নরসিংদীতে উদ্ধারকৃত গাজা বিক্রির অভিযোগে ডিবি’র ওসি বদলি
  • মেডিকেল কলেজ বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
  • দেশের সামরিক বাহিনীর ঐক্য বিনষ্টে ষড়যন্ত্র এবং সাম্প্রতিক দৃশ্যপট
  • হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ