মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেড ইন আমেরিকা’ নীতির কারণে দেশটির খুচরা ব্যবসায়ীরা দেশীয়ভাবে উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে তৈরি পোশাক, জুতা ও স্যুট-কোট ব্যবসায়ীরা দেশীয়ভাবে তাদের উৎপাদন সম্প্রসারণ করার চিন্তা করছেন। তবে তা করতে গিয়ে তারা নানা সংকটের কথা জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে পণ্য ও উপকরণ আমদানি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে সস্তায় আমদানি কমার আশঙ্কা নেই।   

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমিত সুযোগ-সুবিধার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক উৎপাদনে সাফল্য পাওয়া  অত্যন্ত কঠিন; এমনকি অসম্ভব বলা যায়। কারণ, এখানে শ্রমিকের মজুরি বেশি, পাশাপাশি আমদানি করা উপকরণের শুল্ক বেশি হওয়ায় তৈরি পোশাকের দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। বোতাম, কাপড় ও জিপারের মতো উপকরণ আমদানি করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্পের শুল্কনীতি। চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন শুল্ক আরোপের কারণে গামবার্টের বোতামের দাম ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সম্প্রতি ওয়ালমার্ট কোম্পানির প্রধান ডগ ম্যাকমিলনসহ মার্কিন কোম্পানির সিইওদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকে তিনি কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর ২১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।  

নিউইয়র্কভিত্তিক পুরুষদের শার্ট প্রস্তুতকারী কোম্পানি গামবার্ট শার্টমেকার্সের মালিক ও প্রধান নির্বাহী মিক গামবার্ট বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা) ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে প্রচুর (উৎপাদনের) অনুরোধ পাচ্ছি।’ গামবার্টের প্রতিষ্ঠান খুচরা বিক্রেতা চেইন শপ নর্ডস্ট্রমের তিনটি শোরুমে বোতামযুক্ত সুতি শার্ট সরবরাহ করে। গামবার্ট জানান, নর্ডস্ট্রম আগামী জুনের শেষের মধ্যে সরবরাহ বাড়িয়ে ৫০টি স্টোরে পণ্য পৌঁছানোর অনুরোধ করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক নারীদের পোশাক বিক্রয় কোম্পানি রিফর্মেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথলিন ট্যালবট বলেন, তিনিও দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগে বিশ্বাসী। লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক ও নেভাদায় তিনি নারীদের পোশাক সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছেন। তবে সাফল্য আসতে সময় লাগবে বলে তিনি মনে করেন। 

তবে আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্টিভ লামার বলেন, ‘আমাদের কাছে বৃহৎ পরিসরে পোশাক ও জুতা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত শ্রম, দক্ষতা, উপকরণ এবং অবকাঠামো নেই।’ 

আমেরিকানরা কম দামের চীনা ও এশিয়ান তৈরি পোশাক কিনতে অভ্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া পোশাক ও জুতার প্রায় ৯৭ শতাংশ আমদানি করা হয়। চীন মার্কিন পোশাক আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস, যদিও গত ১৫ বছরে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি বাড়িয়েছে তারা। 

ওহাইওর মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার সহযোগী অধ্যাপক ইয়াও জিন বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে মার্কিন পোশাক উৎপাদন খাত সংকুচিত হয়েছে। কারণ ব্র্যান্ড ও খুচরা ব্যবসায়ীরা চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশসহ কম মজুরির দেশগুলোর কারখানা থেকে পণ্য পাচ্ছে। এ জন্য তৈরি পোশাকের ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড় করানো কঠিন হবে। 

ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টেক্সটাইল অর্গানাইজেশনের সভাপতি কিম গ্লাস জানান, তিনি মেক্সিকো ও কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের বিপক্ষে। কারণ কাপড়, তুলা, পশম ও সুতা আমদানিতে শুল্ক বাড়ালে ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েন। আর দেশীয় বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদি নিশ্চয়তা না পেলে ব্যবসায় ভালো করা অসম্ভব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় র গ মব র ট সরবর হ আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে

যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে কমে গেছে বিদ্যুতের সরবরাহ। এতে গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাংলাদেশে লোডশেডিং হয়েছে। আজ রোববার থেকে লোডশেডিং বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা যায়, ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র আদানির। এর মধ্যে প্রথম ইউনিট বন্ধ হয় ৮ এপ্রিল। এতে সরবরাহ কমে ৭৬০ থেকে ৭৭০ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। এ ইউনিট থেকে এতদিন গড়ে ১৩৬০ থেকে ১৩৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলছিল। গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতীয় ইউনিট। এতে আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
পিডিবি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম সমকালকে বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর প্রথম ইউনিট চালু হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে তিন-চার দিন লাগতে পারে।
পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, আদানির সরবরাহ কমে যাওয়ায় ঘাটতি মেটাতে গ্যাসের কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বুধবার বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৮৮০ মেগাওয়াট। সেদিন সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় ২২৪ মেগাওয়াট। বৃহস্পতিবার ১৩ হাজার ৫৮৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে লোডশেডিং ছিল ৮০। শুক্রবার চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট, লোডশেডিং তেমন ছিল না। শনিবারও লোডশেডিং হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনেই লোডশেডিং হয়। বেলা ৩টায় ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি ছিল ৪২৮।
আদানির সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ 
কেনার চুক্তি রয়েছে পিডিবির। নানা অভিযোগের কারণে চুক্তিটি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের একটি কমিটি কাজ করছে। বিদ্যুৎ বিক্রির প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাবে আদানি, যা আদায়ে বারবার তাগাদা দিচ্ছে। গত বছর একবার সরবরাহ বন্ধও করেছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধরা পড়ছে না ইলিশ, জেলেদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে
  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’
  • বন্ডের সুদহার বৃদ্ধির কারণেই সরে এলেন ট্রাম্প
  • ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন করা যেতে পারে বলে বিচারকের মত
  • সকালে ত্বক উজ্জ্বল দেখাতে করণীয়
  • কলকাতা, লন্ডন ও নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিলাসী জীবন
  • নিউইয়র্কের হাডসন নদীতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ৬
  • নিউইয়র্কে হাডসন নদীতে পড়ল হেলিকপ্টার, ছয়জন নিহত
  • তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার প্রতিনিধি, লক্ষ্য সম্পর্ক জোরদার