রাজশাহীর তানোর উপজেলায় স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছেলের করা মামলায় বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নিজ পুত্রবধূকে শ্লীলতাহানির ঘটনাটি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা অভিযুক্তের বাড়ি ঘিরে রাখেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেন। পরে মামলা দায়ের হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান (৪০)। তিনি তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে দেওয়া তথ্যমতে, হাবিবুর রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০) প্রতিদিনের মতো গত বুধবার সকালে রাজমিস্ত্রির কাজে বের হয়ে যান। এরপর সকাল ১০টার দিকে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তার পুত্রবধূকে শোবার ঘরে ডেকে নেন। এ সময় ওই নববধূর শরীরের স্পর্শকাতর অংশে হাত দেন এবং মুখ চেপে ধরে তার কাপড় খুলতে ও তাকে বিছানায় শোয়াতে চেষ্টা করেন। এ সময় ওই নববধূর পরনের জামা ছিঁড়ে যায়। একপর্যায়ে বাড়ির আশপাশে মানুষের উপস্থিতি টের পেলে হাবিবুর রহমান তার ছেলের স্ত্রীকে ছেড়ে দেন।

এই ঘটনার পর হাবিবুরের ছেলের স্ত্রী ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে তার বাপের বাড়িতে চলে যান। নববধূর বাবা অভিযুক্ত হাবিবুরের ভায়রা (আত্মীয়)। এদিকে হাবিবুরের ছেলে রবিউল বুধবার বিকেল ৫টার দিকে বাড়িতে ফিরে এসে জানতে পারেন তার স্ত্রী বাড়িতে নেই। পরে তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নববধূর সাথে কথা বলে সব জানতে পারেন।

এই ঘটনায় নিজের বাবা হাবিবুর রহমানের নামে তানোর থানায় লিখিত এজাহার দেন তার ছেলে রবিউল ইসলাম।। যার মামলা নং ১৬। শুক্রবার পুলিশ গিয়ে হাবিবুর রহমানকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় অভিযুক্ত হাবিবুরের স্ত্রী তসরী বেগম টপিকেও সাক্ষী করা হয়েছে।

তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন তার ছেলের স্ত্রীর মন খারাপ দেখে তিনি তাকে ঘরে ডাকে কথা বলার একপর্যায়ে তার হাত ধরেন। তবে তার ছেলের স্ত্রীর দাবি তার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ধারা ১০ নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) যৌন নিপীড়ন অপরাধে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ ব ব র রহম ন নববধ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ

রাজধানীর উত্তরখানে নিজ বাড়িতে খুন হওয়া হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আচরণ’–এর অভিযোগ তুলেছেন পুলিশের হাতে আটক ওই দম্পতি।

আটক দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আজ বুধবার পুলিশ জানায়, টাকাপয়সাসহ ব্যাগ হারিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন তাঁরা। দুজনেরই বয়স ২৫–এর কম। তাঁদের অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁর বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে দুজনকে উত্তরখানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। চাকরির কথা বলে নিলেও সাইফুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল ওই নারীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর আচরণ’ করা। সুযোগ পেলেই স্বামীকে বাইরে পাঠিয়ে তরুণীর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন সাইফুর রহমান।

পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গত রোববার রাতে সাইফুর রহমান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তাঁর স্বামী নাজিম প্রতিবাদ করেন। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান দুজন।

আজ দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, আটক দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাজিম হোসেন (২১) ও তাঁর স্ত্রী রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহত সাইফুর রহমানের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি ধারালো চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড় ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ মার্চ দিবাগত রাত দুইটা থেকে ভোররাত চারটার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় গতকাল মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল জানান, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগের দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমানের সঙ্গে মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে দুজনকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে তিনি রুপাকে তাঁর ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে একই শয্যায় ছিলেন সাইফুর রহমান, রুপা ও তাঁর স্বামী নাজিম।

ডিসি মহিদুল আরও বলেন, সেই রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে রুপাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে গেলে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
  • কোনাবাড়ীতে বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • মোবাইল চুরির অভিযোগে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন
  • ‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ
  • ধর্ষণচেষ্টার কারণে খুন হন হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ: পুলিশ