মুন্সীগঞ্জে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ, ভোগান্তিতে ১৩ হাজার গ্রাহক
Published: 14th, March 2025 GMT
নির্মাণাধীন মুক্তারপুর-পঞ্চবটী সড়কে পাইপলাইন ফেটে আগুন লাগায় শুক্রবার সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জ শহর ও এর আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে জেলার ১৩ হাজার গ্রাহক চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। বাসাবাড়িতে রোজাদারদের জন্য ইফতারি তৈরির কাজ ব্যাহত হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ চালু হয়নি।
জেলা শহরের মানিকপুর, মধ্য কোটগাঁও, বাগমামুদালীপাড়া, খালইষ্ট, মালপাড়া, জমিদারপাড়া, গনকপাড়া ও শহরতলির পঞ্চসার ইউনিয়নের সব ক’টি গ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সূত্র জানায়, সকাল ৮টার দিকে শহরের উপকণ্ঠ পঞ্চসার ইউনিয়নের পশ্চিম মুক্তারপুরে এলিভেটেড সড়ক নির্মাণকাজে এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি খনন চলছিল। এ সময় সঞ্চালন লাইনের প্রধান পাইপ ফেটে গিয়ে আগুন লাগে। এর পর সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
শহরের মধ্য কোটগাঁও এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস সাম্মী বলেন, সকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসাবাড়িতে রান্না করতে পারেননি তারা। ইফতারসামগ্রীও তৈরি করা যায়নি। মালপাড়ার গৃহিণী কাজী নিপা জোহা বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সবাই। রোজার মধ্যে রান্না করা যাচ্ছে না। শহরের জগধাত্রীপাড়ার গৃহিণী এলিনা আক্তার বলেন, সকালে হঠাৎ করেই দেখি চুলায় আগুন জ্বলছে না।
এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক শরীফুল ইসলাম জানান, সকালে মুক্তারপুর এলাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সড়ক নির্মাণে এক্সক্যাভেটর দ্বারা মাটি অপসারণের সময় গ্যাস সরবরাহের সঞ্চালন পাইপলাইন ফেটে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে আগুন লেগে গেলে নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় মুন্সীগঞ্জের ১৩ হাজার আবাসিক গ্রাহক গ্যাস পাচ্ছেন না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গরমে লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে যাতে লোডশেডিং কম হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার। যদি লোডশেডিং হয়, আগে ঢাকা শহরে হবে। পরে দেশের অন্য জায়গায় হবে। আগের মতো শুধু গ্রামে হবে না।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুইটি কারণে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। উৎপাদন কম হলে যদি লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন সেটি লোডশেডিং। আর ঝড় বৃষ্টিসহ কোনো কারণে যদি ফিউজ চলে যায়, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। রমজানের মতো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আমরা চেষ্টা করবো। তবে লোডশেডিং যদি হয়, এমন হবে না যে শুধু গ্রামে লোডশেডিং হবে। ঢাকাতে প্রথমে লোডশেডিং হবে। পরে অন্য জায়গায় হবে।
তিনি বলেন, তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য আমরা এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে বলেছি। এটা রাখতে পারলে এক-দুই হাজার চাহিদা কমবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
খাল-নালায় ময়লা ফেললে জেল-জরিমানা
এবার চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টির পরিমাণ কেমন হবে তা একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে এই দুর্ভোগ এবার অনেকটা লাঘব হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে একটা জিনিস দেখে খারাপ লাগছে, কিছুদিন আগে খাল পরিষ্কার করা হলেও সেখানে এখন আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে এই কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারি নাই। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে। মানুষকে সচেতন করা হবে। ময়লা রাখার বিন দেওয়া হবে। এরপরেও যদি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হবে।
কক্সবাজার সড়ক ছয় লেন হবে
এদিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্ত করা হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই মহাসড়ক ছয় লেন করা হবে। তবে তা সময়সাপেক্ষ। এখানে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব মিলিয়ে দুই-তিন বছরের আগে হবে না। তবে এই সময় সড়কে দুর্ঘটনারোধে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অংশে সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। সতর্ক করে সাইন পোস্ট দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়ানো হবে। চালকদের সচেতন করা হবে।
এই সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। এরপর ডিসেম্বরে ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে। আগামী জানুয়ারিতে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি করার কথা রয়েছে।
রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা
এদিকে ব্রিফিংয়ের সময় রেলওয়ে প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা। সিটি করপোরেশন রাস্তা করতে চাইলে, ওয়াসা পানি দিতে চাইলেও রেল নিতে চায় না। তবে এখন থেকে তা হবে না। সিটি করপোরেশন সিআরবিতে রাস্তা করে দেবে। ওয়াসা পানি সরবরাহ করবে। রেলের কাজ হচ্ছে ট্রেন পরিচালনা করা। প্রতিনিয়ত সেবার মান বাড়ানোর কাজ করতে হবে। রাস্তা করা ও পানি সরবরাহ করা রেলের কাজ নয়। এসব করতে গিয়ে রেলের দক্ষতা নষ্ট হয়। অর্থের অপচয় হয়।
রেল উপদেষ্টা বলেন, রেলের এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা খরচ হয়। এভাবে হলে চলবে না। এটি দুই টাকার নিচে নিয়ে আসতে হবে। আর ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচ সংকটে সরকার কাজ করছে।
এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।