বোনকে ফ্ল্যাট দিতে সই জালিয়াতি করেন টিউলিপ
Published: 14th, March 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের কাছে বাংলাদেশে সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় জাল নোটারি নথি ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির তদন্তে জানা গেছে, বোনের কাছে ঢাকায় ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে টিউলিপ জাল নোটারি পাবলিক ব্যবহার করেছেন। নোটারি পাবলিকে ব্যবহৃত আইনজীবীর সইটিও ছিল জাল।
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দুদকের দাবি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের সরকারি প্লট নিজ ও তাঁর পরিবারের জন্য নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে তিনি অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির বরাদ্দ থেকে উপকৃত হয়েছেন। সংস্থাটির আরও দাবি, টিউলিপ একটি ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেছেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুদক এখন আদালতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করবে, যা প্রসিকিউশনের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকবে। অভিযোগ গ্রহণ হলে মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করবে।
এর আগে বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ– তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী ছিলেন। এ অভিযোগ প্রকাশিত হলে তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যাপক রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েন। টিউলিপ বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন কর্তৃত্বপরায়ণতা জন্য পরিচিত, যা গত আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন ঘটে। এর পরই হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি, ভূমি দখল ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের নানা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে।
দুদক জানায়, তারা শেখ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। সংস্থাটি আরও জানায়, এ অভিযোগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অবৈধ ব্যবহারের তদন্ত আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সরকারি জমি বরাদ্দের জন্য নিয়ম ভেঙেছেন এবং প্রচলিত বরাদ্দ পদ্ধতিকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের জন্য জমি নিশ্চিত করেছেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড.
তদন্তকারীদের অভিযোগ, ঢাকায় ইতোমধ্যে একটি সম্পত্তির মালিক হওয়ার কারণে টিউলিপ সিদ্দিক পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। তবে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিয়ম পরিবর্তন ও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এ জমি বরাদ্দ নিয়েছেন। তারা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নির্ধারিত জমি লটারির পদ্ধতি পাশ কাটিয়ে প্লটের মালিক হন।
দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে, ঢাকার গুলশান এলাকায় একটি ফ্ল্যাট আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেন টিউলিপ। এতে ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করা হয়েছে। এ নোটারি নথিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের সিল ব্যবহার করা হয়। তিনি এ নথি সইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি জানিয়েছেন, যদিও সিলটি আমার নামে, কিন্তু স্বাক্ষরটি আমার নয়। তিনি শুধু তাঁর চেম্বারে বসে নোটারি নথি অনুমোদন করেন। টিউলিপ কিংবা আজমিনা সিদ্দিকের সঙ্গে তার আগে কোনো পরিচিতি ছিল না।
বিতর্কিত নথিটি ২০১৫ সালের, যখন টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে তখনও তিনি যুক্তরাজ্যের সরকারের মন্ত্রী হননি। দুদকের দাবি, প্রকৃত সম্পত্তির মালিকানা গোপন করা ছিল এ জালিয়াতির উদ্দেশ্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট উল প স দ দ ক ট উল প স দ দ ক ব যবহ র কর র পর ব র র প রকল প বর দ দ মন ত র র জন য কর ছ ন তদন ত সরক র আজম ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা
সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ১০ম গ্রেডে তারা বেতন পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় দেন।
হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগ এই রায় দেন। আদালতে শিক্ষকদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন।
এ সময় আইনজীবীরা জানান, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে এই মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল খারিজ করে দিয়ে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের ওই রায় দীর্ঘ তিন মাসেও কার্যকর না করায় প্রধান শিক্ষকেরা আদালত অবমাননার মামলা করেন।
পরে একই বছরের ২৭ জুন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ কেন সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর না করে আদালতকে অবজ্ঞা করার অপরাধে বিবাদীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, মর্মে এক মাসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে দুই দিন আগের তারিখে সিভিল রিভিউ পিটিশন দায়ের করে মন্ত্রণালয়।
পরবর্তীতে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে সিভিল রিভিউ পিটিশনটি নিষ্পত্তি করে রায় দেন। এর ফলে হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের ওই রায় কার্যকরে আর কোনো বাধা রইলো না।