কুমিল্লার বরুড়ায় একটি ব্যস্ততম সড়কের মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই কাজ শেষ করে বিল তুলে নিয়েছে মেসার্স এসআই এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে সড়কে চলাচলকারী লোকজনের ভোগান্তি বেড়েছে। রাতের বেলায় প্রায়ই ঘটেছে দুর্ঘটনা।
বরুড়া উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের পরানপুর-সমেশপুর সড়কের পরানপুর জামে মসজিদ সংলগ্ন অংশে বৈদ্যুতিক খুঁটিটির অবস্থান। গ্রামীণ সড়কটির দেড় কিলোমিটার পাকাকরণে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরাদ্দ দিয়েছিল দেড় কোটি টাকা।
স্থানীয়রা জানান, বরুড়া উপজেলার সমেশপুর গ্রাম হয়ে পরানপুর বাজারে যান আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এ ছাড়া ওই সড়ক দিয়ে দুটি মাদ্রাসার কয়েকশ শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য সড়কটি পাকাকরণের দাবি জানানো হয় স্থানীয়দের পক্ষ থেকে। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা হলে সড়কটির কাজ পায় মেসার্স এসআই এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি সড়কের পরানপুর বাজার সংলগ্ন অংশে মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই কাজ সম্পন্ন করেন ঠিকাদার।
স্থানীয় বাসিন্দা তফাজ্জল হোসেন জানান, এ সড়ক দিয়ে সন্ধ্যার পর দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এর মধ্যে একাধিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি দ্রুত সরিয়ে নিলে শঙ্কামুক্ত হবে মানুষ। কিন্তু বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো সমাধান মিলছে না।
ইজিবাইকচালক রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আমাদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে হয়। সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকার কারণে দিনে গাড়ি চালানো গেলেও রাতে তা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। খুঁটিতে ধাক্কা লেগে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
এদিকে ঠিকাদার মনির হোসেন সুমন পলাতক। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নিকটাত্মীয় হওয়ায় বর্তমানে গাঢাকা দিয়ে আছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বরুড়া উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের ভাষ্য, বিষয়টি জানতে পেরেছেন তারা। খুঁটিটি সরাতে বিদ্যুৎ অফিসকে চিঠি দেওয়া হবে। ঠিকাদার চেষ্টা করেছিলেন খুঁটিটি বাদ রেখে এক পাশ বাড়িয়ে সড়কের কাজটি করতে। কিন্তু জমির মালিকের বাধার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পয়ালগাছা সাব জোনাল অফিসের এজিএম (ওএন্ডএম) জাহিদুল হাসান বলেন, সড়কের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি থাকার বিষয়টি জানা নেই। তবে খুঁটি থেকে থাকলে এলজিইডির চিঠি পেলে সেটি সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ৩ কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তি

অধিগ্রহণ জটিলতায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের সুফল আটকে আছে ৩ কিলোমিটারে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের পৌর এলাকা অংশের ৩ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। প্রায় প্রতিদিনই গর্তে যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন করে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের ধামদী এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়েছে।

আঠারবাড়ী থেকে ঈশ্বরগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চে। সে বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার রাস্তাটির কাজ আটকে আছে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় ৩ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ না করায়। পৌর এলাকায় সড়কের দুই পাশে বাসা-দোকানপাটের মালিকদের কেউ অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়তে রাজি নন। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে যাতায়াতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে অধিগ্রহণ জটিলতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে। সড়ক বিভাগ আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। শুধু তাই নয়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। এ সড়কটিও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল।

সোহেল মিয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ২০২২ সালে এই রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের মাধ্যমে মানুষকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

নিরাপদ সড়ক চাই ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি নূর হোসাইন কাঞ্চনের ভাষ্য, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রাস্তার কাজ শেষ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

স্থানীয় অটোরিকশার চালক সবুজ মিয়া বলেন, ‘পত্তিদিনই (প্রতিদিন) কোনো না কোনো গাড়ি এই রোডে উইলডেয়া পড়ে। আর ৫ মিনিডের রাস্তা যাইতে সময় লাগে ১৫ থাইক্কা ২০ মিনিড। রাস্তাডা মেরামত কইরা দিলে আমরার খুব উপকার অইবো।’

অটোরিকশার যাত্রী নাজমা বেগম জানান, এই সড়ক দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। ঝাঁকুনিতে রাস্তায়ই প্রসব হয়ে যায়। শুধু কি তাই, শরীরের হাড়গোড় ভেঙেচুরে যাওয়ার দশা হয়।

সড়কটি কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের (সওজ) অধীনে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস ছালাম সমকালকে বলেন, সড়কটির দুই পাশের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য চলতি মাসের ৮ তারিখে ১১৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন পাস হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ খাতে জমা হয়েছে। বাকি ১৪ কোটি টাকা প্রাক্কলন পাসের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রাক্কলন পাস হয়ে এলে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য নোটিশ করা হবে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা তাঁর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১৪ আসামি কারাগারে
  • গ্রামীণ সড়কের সুরক্ষাপ্রাচীর খুলে নিজের পুকুরে স্থাপন করলেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা
  • ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ৩ কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তি
  • বেহাল সড়কে বিয়ে ভেঙেছে তরুণীর
  • ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা
  • বেহাল সড়কের কারণে বিয়ে ভেঙেছে তরুণীর
  • বিপুল ব্যয়ের সড়ক, তবু থাকছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
  • হাজারীবাগে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের আরোহী নিহত
  • নিহত বিপ্লবের গলায় বৈদ্যুতিক তার ও লুঙ্গি প্যাঁচানো ছিল