Samakal:
2025-03-14@21:35:27 GMT

বেলুচিস্তানের বিএলএ কারা?

Published: 14th, March 2025 GMT

বেলুচিস্তানের বিএলএ কারা?

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তারা মঙ্গলবার পেশোয়ারগামী ট্রেন জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাইকারী সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শেষ করেছে। এরই মাধ্যমে ৩৪৬ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) ৩৩ জন হামলাকারীকে হত্যা করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএলএর কার্যক্রমের পরিধি ও দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কেবল গত বছরে তারা ১৫০টিরও বেশি আক্রমণ চালিয়েছে, যারই ধারাবাহিকতা এই ট্রেন ছিনতাই। 
১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারত থেকে দেশ ভাগের ছয় মাস পর, ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান বেলুচিস্তানকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে। তখন থেকেই প্রদেশটি বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সাক্ষী। ২০২৩ সালের জনশুমারি অনুসারে, পাকিস্তানের আনুমানিক ২৪ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখের বাসস্থান বেলুচিস্তান। কয়লা, সোনা, তামা ও গ্যাসের মতো প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও এটি দেশের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চল। 

বেলুচিস্তানে সর্বশেষ আন্দোলন শুরু হয় ২০০০ সালের গোড়ায়। প্রাথমিক লক্ষ্য প্রদেশের জনগণের জন্য সম্পদের বৃহত্তর অংশ নিশ্চিত করা হলেও, শিগগিরই তারা পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তোলে। বিএলএ ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ২০০০-এর দশকের গোড়ায় আত্মপ্রকাশ করে। বিএলএর নেতৃত্বে ছিলেন প্রবীণ বালুচ জাতীয়তাবাদী নেতা নবাব খায়ের বখশ মারির ছেলে বালাচ মারি।
২০০৬ সালে সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফের নেতৃত্বে সরকার বিশিষ্ট বালুচ জাতীয়তাবাদী নেতা নবাব আকবর বুগতিকে হত্যা করার পর বিদ্রোহ তীব্রতর হয়। বছরের পর বছর ধরে বিএলএ পাকিস্তান থেকে বেলুচিস্তানের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি দল হিসেবে নিজেদের আলাদা করে তুলেছে। মধ্যপন্থি বালুচ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে কথা বললেও বিএলএ কখনও মধ্যম পন্থা অনুসরণ করেনি।

২০১০ সালে এই গোষ্ঠী তাদের আত্মঘাতী দল মাজিদ ব্রিগেড চালু করে, যা কয়েক বছর ধরে সুপ্ত ছিল। ২০১৮ সালে দলটি জনপ্রিয়তা লাভ করে, যখন আসলাম বালুচ তাঁর নিজের ছেলেকে বেলুচিস্তানের দালবান্দিন শহরে কর্মরত চীনা প্রকৌশলীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পাঠিয়েছিল। এতে তিন চীনা নাগরিকসহ পাঁচজন আহত হয়, তবে আসলামের ছেলে ছাড়া আর কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। 
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএলএর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তরুণ ও সুশিক্ষিত সৈন্যদের তালিকাভুক্ত করার ক্ষমতা। বিশেষজ্ঞ আকবরের মতে, ‘তরুণ, শিক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়োগ করা এখন আর কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। কারণ, এই গোষ্ঠী বালুচ তরুণদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, যদিও এর কার্যক্রম বিতর্কিত।’ যদিও বিএলএর তহবিলের উৎসগুলো অস্পষ্ট; বিশ্লেষকরা একাধিক রাজস্ব উৎসের কথা বলেছেন। তার মধ্যে রয়েছে চাঁদাবাজি, চোরাচালান ও মাদক পাচারের মতো অবৈধ কার্যকলাপ।

পাকিস্তান সরকার দাবি করে, ভারত বিএলএকে অর্থায়ন করে। কিন্তু আকবরের মতে, আফগানিস্তানে বছরের পর বছর কাটিয়ে বেশির ভাগ বিএলএ নেতৃত্ব পাকিস্তানে আগমন করেন। তাঁর মতে, সরকারের এসব দাবি হুবহু গ্রহণ করা কঠিন। বিশেষজ্ঞ আকবরের মতে, ‘প্রায় প্রতিটি ইস্যুতে ভারতকে দোষারোপ করার প্রবণতা পাকিস্তানের রয়েছে। এ কারণে দৃঢ় প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের দাবি গ্রহণ করা কঠিন।’ ‘যদি সরকার ভারতীয় সমর্থনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারে, তবেই কেবল তাদের অভিযোগের গুরুত্ব রয়েছে। তবে যা স্পষ্ট তা হলো, বিএলএর একটি শক্তিশালী তহবিলদাতা রয়েছে এবং এর যোদ্ধারা বিদ্রোহের জন্য বিশেষভাবে তৈরি উচ্চ পেশাদার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।’
আকবর বলেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা ও প্রাদেশিক সরকারের প্রতি ‘অসন্তোষ’-এ হতাশ জনসাধারণের মধ্যে বিএলএ তার প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করে।
পর্যবেক্ষক আকবরের মতে, ‘অনেকে প্রাদেশিক সরকার বিশেষত বেলুচিস্তানের জনগণের চেয়ে ইসলামাবাদের প্রতি বেশি অনুগত বলে মনে করে। কারণ এটি জোরপূর্বক গুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে শক্ত অবস্থান নিতে অস্বীকার করে।’

আবিদ হোসেন: পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আলজাজিরার ইংরেজি ডিজিটাল সংবাদদাতা; আলজাজিরা থেকে সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র র মত সরক র ব এলএ

এছাড়াও পড়ুন:

জ্যোতির চমৎকার গায়কি মুগ্ধ করেছে: আসিফ

বাংলা গানের ‘যুবরাজ’খ্যাত তারকা আসিফ আকবর। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা গানে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আসিফকে বরারবই দেখা গেছে নতুন শিল্পীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে গান করতে। তার সঙ্গে দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়ে অনেক নারী শিল্পী পেয়েছেন যশ-খ্যাতি। 

এবার আসিফ আকবর জুটি বাঁধলেন নতুন শিল্পী জ্যোতির সঙ্গে। কুমিল্লার মেয়ে জ্যোতি ‘ধ্রুব মিউজিক আমার গান’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন। ‘তুমি শুধু তোমারই মতো’ শিরোনামের গানটি রচনা করেছেন মেহেদী হাসান লিমন। সুর করেছেন নাজির মাহমুদ। আর সংগীতায়োজন করেন মুশফিক লিটু।

গানটি নিয়ে নির্মিত হয়েছে মিউজিক ভিডিও। এটি পরিচালনা করেছেন ইয়ামিন ইলান। এতে জ্যোতির সঙ্গে মডেল হয়েছেন তারেক জামান। ভিডিওতে আসিফ আকবরের উপস্থিতিও রয়েছে।

আরো পড়ুন:

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান

অভিষেকের অপেক্ষায় ডেবিড

নতুন সংগীতশিল্পী ও গান সম্পর্কে আসিফ আকবর বলেন, “জ্যোতি আমার কুমিল্লার মেয়ে। ওখান থেকেই জানাশোনা। অসম্ভব মেধাবী সে। একইসঙ্গে নাচ, গান ও অভিনয়ে পারদর্শী। ওর চমৎকার গায়কি আমাকে মুগ্ধ করে। আমার বিশ্বাস ও একদিন বাংলা সংগীতের আকাশে জ্বলজ্বলে তারা হবে।”

আসিফ আকবরের সঙ্গে গাইতে পেরে উচ্ছ্বসিত জ্যোতি। তার ভাষায়, “নতুন হিসেবে বাংলা গানের যুবরাজের সঙ্গে এত চমৎকার গান করতে পারা আমার কাছে স্বপ্ন এবং সৌভাগ্যের। যার গান শুনে বেড়ে ওঠা, তার সঙ্গেই গান করা অন্তহীন আনন্দের। তবে এই গানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই গুণীজন। আশা করছি, গানটি সবার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।”

রেট্রো মিউজিকের ব্যানারে নির্মিত গানটি মুক্তি পেয়েছে আসিফ আকবরের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বহাল তবিয়তে শওকত আকবর, অপরাধ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ৭ গ্রামবাসী 
  • বিশেষ বিসিএসে ২০০০ চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ
  • বিশেষ বিসিএসে ২০০০ চিকিৎসক নিয়োগ, বাড়ছে বয়স
  • সাবিনা ইয়াসমিনকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ
  • পাকিস্তানে ট্রেনযাত্রীদের জিম্মিকারী বিএলএ গোষ্ঠী কারা, কী চায় তারা
  • জ্যোতির চমৎকার গায়কি মুগ্ধ করেছে: আসিফ
  • পাকিস্তানে ট্রেন ছিনতাইয়ের পেছনে রাষ্ট্রীয় শক্তির জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহ