রাষ্ট্রের আইন থেকে শুরু করে আচার-অনুষ্ঠান, সবকিছুতেই কাঠামোগতভাবে নারীবিদ্বেষ দেখা যাচ্ছে। অথচ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে এটা কাম্য ছিল না। তাই নারী বিদ্বেষী বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যারা সমাজকে উত্তপ্ত ও অনিরাপদ করে তুলছে, তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধর্ষণ ও নিপীড়ন নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর থেকে পুলিশের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। শুক্রবার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা এক সমাবেশে এসব দাবি জানিয়েছেন।

সিপিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটি ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী সমাবেশটির আয়োজন করে। শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানী ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়সংলগ্ন লিংক রোডে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে নারীর জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। নারী বিদ্বেষ ও অব্যাহত সহিংসতা-সন্ত্রাস সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে পাড়া-মহল্লায় ‘রোকেয়া ব্রিগেড’ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সিপিবি।

সমাবেশে সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী যাঁরা সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁদের দেশের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বও নিতে হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে সরকার যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, তা কোনো যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজে বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।’

সমাবেশে বক্তৃতা করছেন সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৫ মার্চ

আগামী শনিবার (১৫ মার্চ) সারা দেশে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয় হয়।

এতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃত্বের পুষ্টি ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য  হিসেবে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে।

আরো পড়ুন:

মাগুরায় সেই শিশুর মৃত্যু
আসামিদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ঠাকুরগাঁওয়ের হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু উদ্ধার

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ৪ দশমিক ১০ শতাংশ ছিল। ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু হয়। পরবর্তীতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে।

ভিটামিন ‘এ’ শুধু অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে না। এর পাশাপাশি ৫ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর হারও প্রায় এক চতুর্থাংশ কমিয়ে আনে যা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ (শিশু মৃত্যুর হার কমানো) অর্জনে খুবই সহায়ক ছিল। আমাদের সব শিশু সঠিকভাবে মায়ের দুধ বা সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারে না। ফলে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সের শিশুদের বিরাট অংশ ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতিতে ভুগছে এবং ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে এই ঘাটতি পূরণে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো প্রয়োজন।

ইতোমধ্যে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বছরে দুইবার শতকরা ৯৮ শতাংশ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানোর ফলে ভিটামিন ‘এ’ অভাবজনিত অন্ধত্বের হার শতকরা এক শতাংশের নিচে কমে এসেছে এবং শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো চলমান রাখতে হবে।

শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু তাদের একটি অংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। অন্ধত্ব একটি পরিবারের জন্য অভিশাপ তথা একটি দেশের জন্য বোঝা। বছরে দুই বার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল গ্রহণের মাধ্যমে শিশুদের এ অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে বহুলাংশে মুক্ত করা যায় এবং শিশুর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিও কমানো সম্ভব।

অন্তর্বর্তী সরকারের সুদৃঢ় নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের সব শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণ ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে শনিবার সারাদেশে ৬-৫৯ মাস বয়সী প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

স্বল্প সময়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। ক্যাম্পেইনকে সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আর তা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রয়োজন। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পর্যালোচনার জন্য ক্যাম্পেইনের দিন প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম চালু থাকবে।

একটি শিশুও যেন বাদ না পড়ে, সব শিশুকেই যেন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। যাদের ঘরে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু আছে সেই সব মা-বাবা এবং অভিভাবকরা যেন অবশ্যই তাদের শিশুদের নিকটস্থ কেন্দ্রে (ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র) নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ান।

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জনগণ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে: ইসলামী আন্দোলন
  • সোনারগাঁয়ে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, অভিযুক্তকে গণপিটুনি
  • ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণার নতুন নীতিমালা 
  • আড়াইহাজারে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার
  • জয়সওয়ালের মন্তব্য অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল
  • নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের ভিডিও প্রচার, গ্রেপ্তার ১
  • রণধীর জয়সোয়ালের মন্তব্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল
  • হাসিনাকে ফেরত চাওয়া চিঠির জবাব এখনো দেয়নি ভারত
  • জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৫ মার্চ