সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ সস্তায় মিলছে সবজি। এতে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতার মাঝে। বিপদে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সব ধরনের সবজির দামই কমে গেছে। বিশেষ করে টমেটো ও ফুলকপি চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শখের বসে সবজি করতে গিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
রমজানের শুরু থেকেই বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম ছুটতে থাকে ক্রেতার নাগালের বাইরে। অল্প সময়ের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করে এসব সবজির দাম।
গত রমজানে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া টমেটো এবার কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। গাজর মিলছে ৩০ টাকা কেজির ঘরে। অথচ আগের বছরই প্রতি কেজি গাজর ক্রেতাদের কিনতে হয়েছ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়।
এদিকে সবজির মৌসুম শেষ পর্যায়ে থাকায় একটু করে চড়তে শুরু করেছে বাজার। তবে রোজার শুরু থেকে কম দামে সবজি কিনতে পারায় ক্রেতা খুশি। তবে দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
সোমবার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১০ থেকে ১৫, আলু ২০ থেকে ২২, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০, গাজর ও শসা ৩০, ফুলকপি ৪০, সিম ৪০ থেকে ৫০, করলা ৮০ ও বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাহ পরাণ বাণিজ্যালয়ের সানুর মিয়া জানান, এবার সবজির উৎপাদন ভালো হওয়ায় সরবরাহ ভালো ছিল। তাই দাম ছিল বেশ কম। তবে মৌসুমের শেষাংশ এখন। এ সময় দাম কিছুটা বাড়বে।
এই ব্যবসায়ী বলেন, অনেক কৃষক টমেটো এবং ফুলকপি বাজারে আনলেও বিক্রি করতে পারেননি।
ক্রেতা মতিন মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম অনেক কম। তবে বর্তমানে দর বাড়তে শুরু করেছে। বাজারের সবচেয়ে কম দামের সবজি এখন টমেটো। 
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবছর ১৭৯০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি আবাদ করা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে টমেটো এবং ২২০ হেক্টরে শিম। ৫ শতাধিক কৃষক প্রতি বছর বাণিজ্যিকভাবে টমেটোর চাষ করে থাকেন। উৎপাদন বেশি ও ক্রেতা সংকটের কারণে অনেকের উৎপাদিত টমেটো বিক্রি করতে পারেননি।
গ্রামতলা গ্রামে স্থায়ী বাসিন্দা ও সবজিচাষি সঞ্জব আলী বলেন, এ বছর ১০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে, তবে ১০ হাজার টাকাও বিক্রি আসেনি। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উম্মে তামিমা বলেন, সবজির উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় এবার বাজারে দর কম। চাহিদার চেয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজির জোগান ও মজুদ বেশি। এরমাঝে টমেটো ও ফুলকপি চাষ করে কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় আগাম এবং শেষ পর্যায়ে সবজি বাজারে আনার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সবজ র দ ম সবজ র দ ম র সবজ র উৎপ দ উপজ ল ফ লকপ

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

থাইল্যান্ডের নাগরিক এক নারীকে (৪০) ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে ফেনীতে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় মোখসুদুর রহমান (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার তাঁকে ফেনী সদর উপজেলার শর্শাদি ইউনিয়ন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল ফেনী সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করা হয়। মামলায় মোখসুদুর রহমানের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ওই নারী হংকংয়ে ব্যবসা করতেন। এর সূত্রেই সেখানে মোখসুদুরের সঙ্গে পরিচয়। ভিসা জটিলতায় মোখসুদুর গ্রেপ্তার হয়ে হংকংয়ে কারাগারে ছিলেন। তখন তাঁকে কারামুক্ত হতে সাহায্য করেন ওই নারী। কারামুক্ত হয়ে মোখসুদুর রহমান বাংলাদেশে চলে আসেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশে ডেকে এনে গত বছরের ১২ অক্টোবর তাঁকে মোখসুদুর ধর্ষণ করেছেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন থাইল্যান্ডের ওই নারী।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মোখসুদুরকে ব্যবসার জন্য ২ লাখ ১০ হাজার হংকং ডলার ও বেশ কিছু স্বর্ণালংকার দিয়েছেন ওই নারী। ধর্ষণের ঘটনার পর নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার সময় তিনি এসব টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য মোখসুদুরকে বলেন। পুনরায় বাংলাদেশে এসে গত রোববার মোখসুদুরের বাড়িতে গেলে তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন লোকজন। এ সময় ওই নারীর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামসুজ্জামান বলেন, মোখসুদুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে তাঁর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ