শীতলক্ষ্যায় চার বন্ধু গোসলে নেমে একজনের মৃত্যু, আরেকজন নিখোঁজ
Published: 14th, March 2025 GMT
ঢাকা থেকে আসা দুই বন্ধুসহ চার বন্ধু মিলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ইফতার করতে যান। ইফতারের আগে বিকেলে তাঁরা নদীতে গোসল করতে নামেন। দুজন তীরে উঠে আসতে পারলেও বাকি দুজন তলিয়ে যান। পরে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আরেকজন এখনো নিখোঁজ।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লাশ উদ্ধার হওয়া একজনের নাম মো.
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদুজ্জামান ও রেজাউল তানভীর ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীচর এলাকার প্রাণ-আরএফএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকরি করেন। সামির খান ও নিহাদ ইসলাম ঢাকা থেকে তাঁদের কাছে ঘুরতে এসেছিলেন। ছোটবেলা থেকে এই চারজন রাজধানীর পল্লবী এলাকায় একসঙ্গে চলাফেরা করেছেন।
বেঁচে ফেরা দুজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চারজন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে যান। ৪টার দিকে তাঁরা নদীর পানিতে গোসল করতে নামেন। তীব্র স্রোতের মধ্যে তাঁরা পরস্পরের দিকে পানি ছুড়ে মারছিলেন। একপর্যায়ে একজন তলিয়ে যাচ্ছেন দেখে আরেকজন হাত বাড়িয়ে দেন। এ সময় দুজনই তলিয়ে যান। অন্য দুজন সাঁতার না জানায় দ্রুত তীরে উঠে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনাটি জানান। তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে পলাশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। নদীতে নেমে তাঁরা নিহাদ ইসলামের লাশ উদ্ধার করেন। রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধার করা যায়নি।
ঘটনাস্থল থেকে পলাশ থানার উপপরিদর্শক মো. আবু হানিফ বলেন, নিহাদ ইসলামের লাশ পলাশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। নিখোঁজ আসাদুজ্জামানকে উদ্ধারের জন্য টঙ্গীর ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মতো শিল্পপতিদেরই চায়
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুসংবাদ আমাকে খুবই ব্যথিত করেছে। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তিনি ছিলেন দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং তাঁর দক্ষতা ও নীতিনিষ্ঠা সর্বজনবিদিত। সমাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ছিল। শুধু তা–ই নয়, দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) তিনি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি নিয়ে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সুস্পষ্ট ধারণা ছিল। তিনি ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাঁর নানামুখী প্রজ্ঞা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক সহায়ক ছিল। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) পরিচালক ছিলেন। ব্যাংক খাতের উন্নতি, এ খাতের সুশাসন, খেলাপি ঋণের হার নিয়ন্ত্রণে তাঁর পরামর্শ আমরা কাজে লাগিয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ফোরাম এমনকি বাজেট প্রণয়নেও তাঁর জ্ঞানগর্ভ সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয় পেয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
সানবিমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষা খাত এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তাঁর সঙ্গে সামাজিক ফোরামে যখনই দেখা হয়েছে, আমি দিলখোলাভাবে কথা বলেছি, গল্প করেছি। তিনি ছিলেন একজন অমায়িক ও পরিশীলিত ভদ্রলোক।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরকে অ্যাপেক্স গ্রুপের দায়িত্ব দিয়েছেন অনেক আগেই। এটাও তাঁর একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। এবার যখন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি। আশা ছিল, সুস্থ হয়ে ফিরে দেশে ফিরে আসবেন।
ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া, কাগজপত্রের ভিত্তিতে ব্যাংকঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা, বিদেশে অর্থ পাচার করা ইত্যাদি কাজ করে থাকেন দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী। এর বিপরীতে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মতো শিল্পপতিরাও তৈরি হয়েছেন, যাঁরা দেশের সম্পদ। এ ধরনের শিল্পপতিদেরই বাংলাদেশ চায়। আমি মনে করি কর্ম, নিষ্ঠা, সাফল্য ও সততার দিক থেকে যেকোনো ব্যবসায়ী বা শিল্পপতির জন্যই আদর্শ হতে পারেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী।
লেখা: সালেহউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা