কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদীকে বাঁচানোর আকুতি
Published: 14th, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদীকে বাঁচানোর আকুতি জানানো হয়েছে। ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে নরসুন্দা নদীপাড়ে মুক্তমঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আলোচনা সভা ও মানববন্ধন করে এই আকুতি জানানো হয়।
নদীবিষয়ক জার্নাল রিভার বাংলার আয়োজনে ‘আমার নাম নরসুন্দা, আমি বাঁচতে চাই’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.
শহরের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নরসুন্দাকে বাঁচাতে তাঁদের আকুতির কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘এবারের আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “আমাদের নদীগুলো আমাদের ভবিষ্যৎ”। আমাদের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার, তা এই নরসুন্দা নদীর পারে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কারণ, দেশে অন্য সব নদ-নদীর মতো ধীরে ধীরে আমাদের প্রাণের নরসুন্দাও মৃত্যুর মুখে পতিত। বহুদিন ধরে নরসুন্দাকে বাঁচাতে আন্দোলন হচ্ছে, কিন্তু এর বিপরীতে তেমন কোনো উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়ছে না। দ্রুত নরসুন্দা নদী খনন করে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সব ধরনের দখল ও দূষণমুক্ত করে নৌ চলাচল উপযোগী করে তোলার দাবি জানান। আলোচনা শেষে সেখানে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
সরেজমিনে শুক্রবার নরসুন্দা নদীর পারে দেখা যায়, শহরের বড় বাজার, গৌরাঙ্গবাজার, কাছারি বাজারসহ কয়েকটি বাজারের সব ময়লা-আবর্জনা ও জবাই করা পশুর বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। এর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ আশপাশের মানুষ। নদীপারের পথে (ওয়াকওয়ে) ও পদচারী-সেতু দিয়ে চলাচলকারী মানুষকে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে দেখা গেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নরসুন্দা নদী রক্ষায় ২০১২ সালে নেওয়া হয় ১১০ কোটি টাকার প্রকল্প। প্রকল্পটির আওতায় কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থেকে নীলগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার পুনঃখনন ও পুনর্বাসনের কাজ করা হয়।
এত টাকা ব্যয় করা হলেও নদী নাব্যতা ফিরে পায়নি। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এলজিইডি ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভা যৌথভাবে কাজটি করে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। প্রকল্পের টাকা নিয়েও লুটপাটের অভিযোগ আছে। নদীবিষয়ক জার্নাল রিভার বাংলার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, জেলা শহরের প্রধান নদী নরসুন্দা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। দখল হচ্ছে, দূষিত হচ্ছে, দেখার কেউ নেই। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রবহমান স্বচ্ছ পানির নদী দেখতে চাই। পুনঃখনন ও পুনর্বাসন প্রকল্পে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রশাসনের উচিত নদী ভরাটের উৎসব, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করাসহ নদীর কচুরিপানা সরিয়ে নদীতে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি শহরের ময়লা-আবর্জনা, পলিথিনসহ অন্য কোনো ময়লায় যাতে নদীটি দূষিত না হয়, সে বিষয়ে সোচ্চার থাকা।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ নরস ন দ প রকল প আম দ র শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
মানববন্ধন শেষে আসামির বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আসামি গ্রেপ্তার ও তার বিচার দাবি করে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে আসামির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের সোনালিয়া চকবাজার গ্রামে গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধরা। পরে সন্ধ্যার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার গিয়াস উদ্দিনের কলা বাগানে তারই চাচা আকবর আলীর ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার শিকার হন আকবর আলী (৬৫)। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে গত শনিবার গিয়াস উদ্দিনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা হয় এবং ওই রাতে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক রাশেদুজ্জামান।
তবে সোমবার বিকেলে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে উত্তেজিত জনতার একটি অংশ গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে হামলা হামলার পর অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিসংযোগের সময় ওই বাড়িতে নারী ও শিশুরা অবস্থান করছিলেন। তবে তারা নিরাপদে সরে যান বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর থানার ওসি বলেন, পুলিশ-সেনাবাহিনীর যৌথ অবস্থানে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।