মাগুরার শিশুটির জন্য আগামীকাল সারা দেশে শোক পালন করবে সিপিবি
Published: 14th, March 2025 GMT
মাগুরায় যৌন নির্যাতনে নিহত শিশুর স্মরণে আগামীকাল শনিবার দেশব্যাপী শোক পালন করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। ওই শিশু নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশের সর্বত্র নারীবিদ্বেষী অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি।
আজ শুক্রবার সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামীকাল শোক দিবসে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও শোক মিছিল করা হবে। আগামীকাল রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (মুক্তি ভবন) কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিকেল ৪টায় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোক মিছিল বের করা হবে।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটিকে বাঁচানো গেল না১৩ মার্চ ২০২৫পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। সেদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতেই সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুক্রবার রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (পিআইসিইউ) থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি মারা যায়।
আরও পড়ুনমাগুরায় আসামিদের বাড়িতে আবারও ভাঙচুর, মালপত্র লুটপাটের পর কাটা হচ্ছে গাছ৭ ঘণ্টা আগেএ ঘটনায় শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার মা। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মাগুরার এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনা চলছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ।
আরও পড়ুনঅব্যাহত ধর্ষণ, খুন, নৈরাজ্য প্রমাণ করে দেশ চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার: সিপিবি৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
শহরজুড়ে তারের জঞ্জাল ১৫ মাসে ৩৬ অগ্নিকাণ্ড
যশোর শহরের নেতাজি সুভাষ চন্দ্র সড়ক। দুই পাশ দিয়ে চলে যাওয়া পিলারে ঝুলছে বৈদ্যুতিক তার। এর সঙ্গে টানা হয়েছে ইন্টারনেট ও ডিশ লাইনের সংযোগ তার। যত্রতত্রভাবে টানা এ তারেই গত রোববার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পাশের জনবহুল মার্কেটের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও পথচারীর মধ্যে। অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় এ যাত্রায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা হয়েছে।
এদিন দুটি মার্কেটের প্রায় ২০০ দোকান ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে রক্ষা পায় বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে শহরের ঘোপ বেলতলা এলাকায়ও একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন লাগে। কয়েক দিন আগে পাইপপট্টিতে একটা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন লাগে। ১৫ মাসে শহরে এমন ৩৬টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ পরিসংখ্যান শুধু নেভানোর। এর বাইরে আরও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শহরের বৈদ্যুতিক পিলারে এভাবে ঝুলছে অর্ধশতাধিক ইন্টারনেট সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তার। মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা তারের জঞ্জাল পথচারীসহ আশপাশের স্থাপনা ঝুঁকিতে ফেলছে। নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। ইন্টারনেট সার্ভিস ও ডিশ কেবল অপারেটররা ব্যবসা করলেও রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে পৌরসভা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দুর্ঘটনা ঘটলেও এ ব্যাপারে নির্বিকার রয়েছে পৌরসভা ও বিদ্যুৎ বিভাগ।
ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় তারের জঞ্জাল মাথা ছুঁয়ে যায় বলে জানান যশোর পৌর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু। তিনি বলেন, যখন যে যা পারছে, মই দিয়ে কেবল ঝোলানোর কাজ করছে। কোনো তদারকি নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা এ সুযোগ দিচ্ছেন বলে ধারণা তাঁর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শহরের ১৫ হাজার বৈদ্যুতিক পিলারে ঝুলছে অনুমোদনহীন অর্ধশতাধিক ইন্টারনেট, ডিশ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তার। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহরে এ ধরনের আগুনের সূত্রপাত হয়েছে ২৮টি। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত আটটি ঘটনা ঘটেছে।
শহরের দড়াটানা, মাইকপট্টি, বড় বাজার, হুঁশতলা, রেল রোড, বেজপাড়া, মুজিব সড়ক, এমকে রোড, চৌরাস্তা, আরএন রোড ও জেল রোড ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইন্টারনেটের তারের খণ্ডিত অংশ। মাইকপট্টিতে ছোট মই দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কেবল জোড়া দেওয়ার কাজ করছিলেন ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী।
এই সড়কের দুই পাশে আবাসিক ভবন ও মার্কেট থেকে অসংখ্য ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের তার ইচ্ছেমতো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো পিলারে তারের জঞ্জাল নেমেছে নিচ পর্যন্ত। অনেক জায়গায় তারের কারণে খুঁটি ও ট্রান্সফরমারও দেখা যায় না। এতে শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি রয়েছে।
বৈদ্যুতিক পিলারে তারের জঞ্জাল থাকায় শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সঞ্চালন লাইন ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বলে মনে করেন পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ সুলতানা সাজিয়া। তিনি বলেন, পিডিবির অবশ্যই এটা বন্ধ করা উচিত। মাস্টারপ্ল্যানে আছে, পৌরসভার ভেতরে আন্ডারপাস লাইন। বাজেটের অভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
যে কোনো কভারবিহীন কেবল সংযোগ ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ডিশ, ইন্টারনেট লাইন বিদ্যুতের পিলারের সঙ্গে সংযোগের কারণে লাইন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। রাবার দাহ্যবস্তু হিসেবে কাজ করে, তাৎক্ষণিক আগুন ধরে। তারের জন্য আগুন সহজে বিস্তার করে। বিদ্যুতের পিলারে এমন কোনো ঝুঁকিপূর্ণ তার যুক্ত রাখা যাবে না।
যত্রতত্র তারের জঞ্জালে শহর ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বলে মত পৌরসভার প্রশাসক রফিকুল হাসানের। তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক পিলারে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বলেন, সংযোগ মেরামতের সময় সমস্যায় পড়তে হয়। শহরে বড় দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কঠোর নির্দেশনা না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।