জুলাই ফাউন্ডেশন যদি হতে পারে তাহলে শাপলা ফাউন্ডেশনও করতে হবে : হেফাজতে ইসলাম
Published: 14th, March 2025 GMT
২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে কর্মীদের হত্যাকারী প্রশাসনের অতিউৎসাহী সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ শাখার নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওলামায়ে কেরাম, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবিদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান। এসময় বক্তারা বলেন, কোন আন্দোলনের রক্ত বৃথা যায় না, প্রতিটা রক্তের ফোটার জবাব দিতে হবে।
২০১৩ সালের জঘন্য গণ হত্যায় যারা যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে হিসাবের খাতায় আনতে হবে। বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শাপলা চত্ত্বর ও চিটাগাংরোডের হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুত করতে হবে।
স্থানীয়ভাবে আওয়ামীলীগের যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। হেফাজতের সেই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন যারা বিভিন্নভাবে হয়রানি মূলক মামলায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের সবাইকে পুনর্বাসনের জন্য হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্বতন্ত্র ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি নিয়ে যেতে হবে।
জুলাই ফাউন্ডেশন যদি হতে পারে তাহলে শাপলা ফাউন্ডেশনও করতে হবে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০১৩ সালে যারা নিহত-আহত হয়েছে, যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে যারা মামলা-হামলার শিকার হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার সভাপতি মুফতি কাসেম আল হোসাইনীর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাইখুল হাদীস মুফতি বশিরুল্লাহ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আজহারুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর ১০ নং জোনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি শরীফুল্লাহ তারেকী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইন নূরানী ও মাওলানা জাকারিয়া আল ফরহাদ প্রমুখ।
সভায় বক্তরা আরও বলেন, যারা চাঁদাবাজী করে তারা যত বড় দলের লোকই হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামীলীগ এত বড় দল ছিলো যে তাদের সামনে বিএনপির ৩জন মানুষ এক সাথে দাড়াতে পারেনি। এখন যদি বিএনপি বলে তারা বড় দল, তারা শক্তিশালী দল এগুলা আমরা বিশ্বাস করি না। হেফজতে ইসলাম রাত ২টা পর্যন্ত শাপলা চত্ত্বরে অবস্থান করেছিলো।
আর ২৮ তারিখে বিএনপি আছরের আগেই চলে গিয়েছে। যারা এখনো ক্ষমতায় আসেনি কিন্তু তারা চাঁদাবাজী শুরু করে দিয়েছে। এমন কোন স্কুল নেই যে তারা দখল করে নাই। থানা গুলো তারা দখল করেছে, ওসিদেরকে তারা দখল করেছে। ওসিরা এখন তাদের কথায় উঠাবসা করে।
বক্তারা আরও বলেন, নাস্তিক ছাড়া চরমোনাই-জামায়াত ইসলামিসহ সব ইসলামিকগুলো আমরা এক সাথে ঐক্য নিয়ে আছি। আমাদের নিজেদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। আমরা সবাই অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় রুখে দাড়াবো। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা আন্দোলন সংগ্রামে হেফাজতে ইসলাম অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে।
৫ আগষ্টের আন্দোলনেও হেফাজতে ইসলাম রক্ত জড়িয়েছে। আমাদের দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ২০১৩ স ল ইসল ম ব
এছাড়াও পড়ুন:
শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ–সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ
রাজধানীর শাহবাগে ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের বিচার এবং মঞ্চটির সংগঠক লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ৮ নম্বর গেটের সামনে একদল শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ করেন। এতে এনএসইউর পাশাপাশি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কিছু শিক্ষার্থীও অংশ নেন। আয়োজকদের কোনো ব্যানার ছিল না। তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন।
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে এনএসইউর ৮ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হন। সেখানে কয়েকজন বক্তৃতা করেন। বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে স্লোগান চলে। তাঁরা ‘শাহবাগীরা বাংলা ছাড়’, ‘শাহবাগ না বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এরপর এনএসইউ গেট থেকে একটি মিছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দু-একটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়।
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন ওমর সাম্য বলেন, ‘২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিভাজন শুরু হয় এই শাহবাগ থেকে, শাপলা চত্বরে গণহত্যার মাধ্যমে। এখন তারা আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্র বানাতে চক্রান্ত করছে। তারা আবারও ফিরে আসুক আমরা তা চাই না। আমরা তাদের বিচার চাই।’
এদিকে একই ধরনের দাবিতে বুধবার বিকেল শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে একটি মানববন্ধন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেন, লাকী আক্তার ও গণজাগরণ মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে মবতন্ত্রের সূচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দিয়েছিলেন তাঁরা।
ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সদস্যসচিব ফাতিমা আক্তার বলেন, সরকার ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে। তারপরও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করা অযৌক্তিক।
আরও পড়ুনপুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা৫ ঘণ্টা আগেএ সময় ইনকিলাব মঞ্চ থেকে সরকারের উদ্দেশে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা চত্বর ও পিলখানা গণহত্যার স্বাধীন বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।