গান বাজানোকে কেন্দ্র করে বিয়ে বাড়িতে হামলা, আহত ১৫
Published: 14th, March 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় নারী-পুরুষসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত ৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ইফতারের পর উপজেলার ঘোষপাড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি আব্দুল হামিদের মেয়ে শারমিন আক্তারের সাথে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার গোসাইপুর গ্রামের জুহুর আলীর ছেলে ইমন মিয়ার বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে কনের বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সাউন্ড বক্স দিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজালে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একদল স্থানীয় যুবক গান বাজনাতে আপত্তি জানান।
পরদিন শুক্রবার দুপুরে পুনরায় গান বাজালে ওই যুবকরা বিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। এতে বিয়ে বাড়িতে থাকা কনের আত্মীয়-স্বজনসহ ১৫ জন আহত হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মজনু মিয়া (৪০), জমিলা খাতুন (৭০), মিনারা খাতুন (৫০) ও হাবিবুর রহমানকে (২৫) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদেরকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কনের পিতা আব্দুল হামিদ বলেন, “আশপাশের লোকজনকে বিয়ের দাওয়াত না দেওয়ার কারণে পরিকল্পিতভাবে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা ঘরে থাকা কনের স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে যায়।”
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিয়ে বাড়ির পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
ঢাকা/মামুন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে
কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’