কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ
Published: 14th, March 2025 GMT
কুমিল্লার কাবিলা বাজার থেকে তিন কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ করেছে বিজিবি। শুক্রবার (১৪ মার্চ) এ তথ্য জানান কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের (১০ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম জাহিদ পারভেজ।
বিজিবি সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত বুড়িচং উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাবিলা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রতন কুমার দত্তের উপস্থিতিতে বিজিবি এবং র্যাব সদস্যদের সমন্বয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স দল গঠন করে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে মালিকবিহীন অবস্থায় বিভিন্ন প্রকারের ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৪০০টি অবৈধ ভারতীয় আতশবাজি এবং অবৈধ মালপত্র বহনকারী একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ৮ লাখ ৮ হাজার টাকা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহিদ জানান, কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন (১০ বিজিবি) নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধসহ আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালানবিরোধী বিশেষ অভিযানে এসব মালপত্র আটক করা হয়। এগুলো বিধি মোতাবেক কাস্টমসে জমা করা হবে।
ঢাকা/রুবেল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুরে দফায় দফায় সংঘর্ষ–ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, এএসপিসহ আহত ৫০
মাদারীপুরের রাজৈরে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষ অন্তত ৪০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে পুরো এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজৈর উপজেলার ব্যাপারীপাড়া মোড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে পুলিশের দুটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের ১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। পরে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে গত শনিবার রাতে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পুলিশের ৮ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২ এপ্রিল রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে আতশবাজি ফোটান। এতে বাধা দেন একই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তাঁর বন্ধুরা। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। এর জেরে পরদিন সকালে রাজৈরের ব্যাপারীপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে ডান পা ভেঙে দেয় জুনায়েদ ও তাঁর লোকজন। পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই সালমান খান বাদী হয়ে জুনায়েদকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নামে রাজৈর থানায় একটি মামলা করেন।
১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় অনিক রাজৈর বাজারে গেলে ধাওয়া দেন জুনায়েদ ও তাঁর বন্ধুরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি মীসাংসার জন্য গতকাল দুপুরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দুই পক্ষের লোকজনকে ডাকেন। আজ সোমবার সকাল ১০টায় সালিস মীমাংসার জন্য একসঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এর আগেই রোববার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে বদরপাশা গ্রামের বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খানসহ পুলিশের ১১ সদস্য ও উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর (২২), রাসেল শেখ (২৮), সাহাপাড়ার মনোতোষ সাহা (৫০) ও আলমদস্তা গ্রামের মো. তোওফিককে (৩৭) রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা রাজৈর ও মাদারীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সজীব মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মাইক দিয়ে দুই গ্রামের লোকজনকে জড়ো করা হয়। তাঁদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বৃষ্টির মতো ইটের খোয়া নিক্ষেপ করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ দমাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হলে তাঁরা টর্চলাইট ব্যবহার করে সংঘর্ষে জড়ান।
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আবার সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য টহলে রয়েছেন। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ১১ জন আহত ও ২টি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হবে।