কাজী তারিকুল ইসলাম। দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানে সফলতার সঙ্গে কর্মজীবন চালানো এই যুবক বছর তিন আগে স্বপ্ন দেখেন পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর। মনোগ্রাহী বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন, ‘ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেড’ নামে এজেন্সির সঙ্গে। বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রোসেসিং ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করে থাকে এজেন্সিটি।

জব ভিসায় যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে পৌঁছে দেওয়ার নিরাপদ এজেন্সি দাবি করা ফেইথ ওভারসিজকে কয়েক দফায় মোট ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দেন তারিকুল ইসলাম। ফেইথ ওভারসিজ এই অর্থ গ্রহণ করে তিনটি ভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। চুক্তি অনুযায়ী টাকার লেনদেন শেষ হওয়ার পর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরিবার নিয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান তারিকুল ইসলাম। 

ইংল্যান্ডে পৌঁছে স্বপ্নের সিঁড়ি শুরু হওয়ার কথা ছিল তারিকুলের। তা হয়নি। স্বপ্নভঙ্গ হয় তার। তারিকুলের অভিযোগ, চুক্তিপত্র অনুযায়ী ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর পর চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা তার; কারণ জব গ্যারান্টির শর্ত ছিল। কিন্তু ফেইথ ওভারসিজ তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে ব্যর্থ হয়। 

আরো পড়ুন:

ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টে ৮৭ লাখ টাকা প্রতারণা

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে এক যুগ পুলিশে চাকরি, গ্রেপ্তার

২০২৩ সালে সেদেশে পৌঁছানোর পর চাকরির ব্যবস্থা না করে দুই বছর ধরে ফেইথ ওভারসিজ কথার ফাঁদে ফেলে ঘুরিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারিকুল। এই মাসে, না- সেই মাসে; এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে; ধৈর্য ধরতে হবে; এমন সব কথার জাল বুনে যাচ্ছে তারা। 

তারিকুল বলছেন, এই অবস্থায় ইংল্যান্ডে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চরম হতাশা এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। এখন স্পন্সরশিপ এবং চাকরি না হলে যেকোনো সময় অবৈধ অভিবাসী হয়ে গ্রেপ্তার অথবা দেশে ফিরে আসতে হতে পারে তাকে। 

তারিকুল ছাড়াও যুক্তরাজ্য ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি এবং স্টুডেন্ট ভিসায় লোক পাঠানোর নামে ফেইথ ওভারসিজের বিরুদ্ধে প্রতারণার আরো কিছু অভিযোগ এসেছে এই প্রতিবেদকের কাছে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নকে পুঁজি করে রঙচঙা বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ফেইথ ওভারসিজ।

অবশ্য ফেইথ ওভারসিজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা প্রতারণা করছে না। তবে নানা কারণে অনেককেই বিদেশে পাঠানো যাচ্ছে না বা বিদেশে পাঠানোর পর সেখানে চাকরির ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব সমস্যা সমাধানে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

যেভাবে স্বপ্নভঙ্গ তারিকুল ইসলামের
কাজী তারিকুল ইসলাম খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। জব ভিসা নিয়ে পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য তিনি যোগাযোগ করেন ফেইথ ওভারসিজের সঙ্গে। তাদের প্রধান কার্যালয় ঢাকার উত্তরায়। সেখান থেকে জানতে পারেন খুলনায় তাদের বাসার পাশে সোনাডাঙ্গার মসজিদ স্মরণীর জাহাঙ্গীর টাওয়ারে ফেইথ ওভারসিজের শাখা অফিস রয়েছে। এই অফিসের ইনচার্জ ও মালিক পরিচালক জর্জ মিথুন রায়।

জর্জ মিথুন রায়ের সঙ্গে তারিকুলের যোগাযোগ হলে তিনি ফেইথের প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেন। তারিকুল ইসলামকে তিনি বোঝান, তার নিজ এলাকায় এজেন্সির অফিস, তিনিও (জর্জ মিথুন রায়) খুলনার বাসিন্দা। ফলে অবিশ্বাসের কিছু নেই। ফেইথ ওভারসিজ বিশ্বস্ততার সঙ্গে জব ভিসার গ্যারান্টি দিয়ে যুক্তরাজ্যে লোক পাঠায়।

খুলনা শাখা অফিস ইনচার্জ এবং ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেডের পরিচালক (এডমিন) জর্জ মিথুন রায়।

জর্জ মিথুন রায়ের ওপর আস্থা রেখে ফেইথ ওভারসিজকে তিন দফায় ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দেন তারিকুল ইসলাম। 

২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট তারিকুল পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে। এক মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ও কন্যাকেও নিজ খরচে সেখানে নিয়ে যান তিনি। তারিকুল বলছেন, তারপর শুরু হয় তাদের বিড়ম্বনা, অনিশ্চয়তা ও হতাশার জীবন। 

ফেইথ ওভারসিজ কথা রাখেনি বলে মন্তব্য করে তারিকুল বলেন, সব সঞ্চয় শেষ; ধারদেনায় ডুবে যাচ্ছেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ফিরেও আসতে পারছেন না। এখন কীভাবে সেদেশে থাকবেন। দিশেহারা তরিকুল ফেইথের ‘প্রতারণার ফাঁদ’ থেকে পরিত্রাণ চান; যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে বসবাসের নিশ্চয়তা চান।

তারিকুলের জন্য বড় ধাক্কা: চাকরির নামে প্রতারণা
তারিকুল ইসলামকে যুক্তরাজ্যের ওয়েসিস (ওয়াসিস) প্রাইভেট কেয়ার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘কেয়ার গিভার’ পদে চাকরি দেওয়ার শর্তে সেদেশে পাঠায় ফেইথ ওভারসিজ। ওয়েসিসের ঠিকানা ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারে।

২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর পরই সরাসরি তারিকুল তার কর্মস্থল ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরের ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ার লিমিটেডে যান। প্রথম দর্শনেই হতাশ হন তিনি। অল্পসংখ্যক লোকজন নিয়ে পরিচালিত কোম্পানিতে গেলে চাকরিতে যোগদানের বিপরীতে তাকে প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অনলাইনে।

তারিকুল ইসলাম আশাবাদী হয়ে শুরু করেন প্রশিক্ষণ। প্রথম দফায় এক মাস দশ দিনের প্রশিক্ষণ শেষ করেন তিনি। আবার প্রশিক্ষণের মডিউল ধরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এভাবে একটির পর একটি প্রশিক্ষণের পর কেটে যায় ছয় মাস। কিন্তু চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে মেলে না কোনো আশার বার্তা।

আশার প্রহর গুনতে গুনতেই হঠাৎ একটি খবরে চমকে ওঠেন তারিকুল। জানতে পারেন, প্রতারণার দায়ে ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ার লিমিটেডের লাইসেন্স বাতিল করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। অথচ এই প্রতিষ্ঠানে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, এখানেই তার চাকরি হওয়ার কথা।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (হোম অফিস) থেকে ই-মেইলে তারিকুলকে নোটিশ পাঠিয়ে জানানো হয়, অন্য কোম্পানিতে স্পন্সরশিপ নিয়ে চাকরি করার জন্য। তারিকুলের ভাষ্য- তার তো চাকরিই নাই। এই অবস্থায় দুর্বিপাকে পড়ে যান তিনি।

একদিকে স্ত্রী-সন্তানের ভরণ-পোষণ, নিজের খরচ ও বাসা ভাড়াসহ সেখানে থাকার ব্যয়ভার, অন্যদিকে স্পন্সরশিপ ও চাকরি জোগাড় করা; এসব ভেবে দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েন তিনি। ফেইথের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু করেন তারিকুল ও তার পরিবার।

বর্তমানে কোনো রকমে লুকিয়ে চুরিয়ে ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ডে’ কাজ করছেন তারিকুল। স্ত্রীকেও একটি কাজ জোগাড় করে দিয়েছেন। এভাবে কেটে গেছে দুই বছর। প্রতি মাসে ২ হাজার পাউন্ড (তিন লাখ টাকা) খরচ যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। দেশে স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ করে চলতে হচ্ছে তাদের।

 পরিত্রাণ চান তারিকুল ইসলাম
কাজী তারিকুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ফেইথ ওভারসিজ স্পন্সরশিপ এবং শতভাগ জব গ্যারান্টিসহ তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানোর পর তিনি ট্রেনিংসহ তাদের সব নিয়ম মেনে সেখানে অবস্থান করছেন। তবে সেদেশে দুই বছরের মধ্যে তাকে এক ঘণ্টার জন্যও চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়নি ফেইথ ওভারসিজ। উপরন্তু, ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ার নামে যে প্রতিষ্ঠানে তাকে চাকরি দেওয়ার কথা, প্রতারণার দায়ে সেটির লাইসেন্স বাতিল হয়েছে।

তরিকুল ইসলাম বলেন, ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ারে যাতায়াত করার সুবাদে তিনি জানতে পেরেছেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আট শতাধিক লোক এই প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে এসেছেন। অথচ কাজ করছেন মাত্র ৫০-৬০ জন। তাদের লাইসেন্সও বাতিল হয়েছে। 

ফলে চাকরি তো দূরে থাক, এখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করাই তারিকুল ও তার পরিবারের জন্য সমূহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

তরিকুল ইসলামের অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী ফেইথ ওভারসিজ তার চাকরির ব্যবস্থা করেনি। তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমনকি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিজস্ব আবাসনে থাকার ব্যবস্থার জন্য ফেইথ ওভারসিজ তার কাছ থেকে বাসা ভাড়া বাবদ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছে; যার পুরো লেনদেনই প্রতিষ্ঠানের খুলনা শাখার ইনচার্জ জর্জ মিথুন রায়ের মাধ্যমে হয়েছে। 

তারিকুল ইসলাম বলছেন, “ফেইথ ওভারসিজের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আমি চাই, তারা দ্রুত আমার চাকরির ব্যবস্থা করে দিক। না হলে এই এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপসহ আমার পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব, সবই করব।”

ক্ষোভ প্রকাশ করে তারিকুল বলেন, “ফেইথ ওভারসিজ আমার জীবন থেকে শুধু দুটি বছর নষ্টই করেনি, তারা আমার জীবন-সংসার পাঁচ বছর পিছিয়ে দিয়েছে, ঋণের জালে ডুবিয়ে দিয়েছে। দুই বছরে আর্থিক ও মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাকে অন্য একটি স্পন্সরশিপে ট্রান্সফার করে দিক অথবা ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমার অর্থ ফেরত দিক। আর বিকল্প কোনো পথ নেই।”

রাজস্ব ফাঁকি দিতে একাধিক ব্যাংকে লেনদেনের অভিযোগ
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেড তারিকুলের কাছ থেকে গ্রহণকৃত অর্থ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নামের বাইরে আরো দুটি ভিন্ন নামের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা নেয়। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আনিসুজ্জামানের সিটি ব্যাংক খুলনা শাখায় ২০২২ সালের ২৬ জুন ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, একই একাউন্টে ২০২৩ সালের ১৮ জুন ১১ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৫ টাকা এবং একই বছরের ২৬ জুন একই হিসাবে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করা হয়। 

এই তিনটি ব্যাংক হিসাবের বাইরে তারিকুলের কাছ থেকে এজেন্সিটি ‘ভিশন ০৬ এসোসিয়েশন’ নামে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ঢাকার গুলশান শাখায় ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ৭০ হাজার টাকা, একই ব্যাংক হিসাবে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ৮৫ হাজার টাকা এবং একই হিসাবে ২০২৩ সালের ১১ জুন ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে। 

ফেইথ ওভারসিজ রং তুলি নামে আরো একটি ভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ডাচ বাংলা ব্যাংক সাভার বাজার শাখায় ২০২৩ সালের ৪ জুন তারিকুলের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের বাইরে ভিন্ন ভিন্ন হিসাবে অর্থের লেনদেনে প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারিকুল। কারণ, টাকা গ্রহণের মানি রিসিট দিয়েছে ফেইথ ওভারসিজের নামে। এজেন্সি টাকা নিলেও তাদের নিজস্ব একাউন্টে নেয়নি। 

ফেইথ ওভারসিজ যা বলছে
ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেডের খুলনা শাখা অফিসে যোগাযোগ করলে সানজিদা নামের একজন নারী অফিসের কর্মকর্তা দাবি করে বলেন, তারা বিভিন্ন দেশে চাকরি এবং স্টুডেন্ট ভিসায় লোক পাঠিয়ে থাকেন। যুক্তরাজ্যে যেতে কেমন খরচ হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৮ থেকে ২০-২২ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত খরচ হয়। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি আর কথা বলতে রাজি হননি।

খুলনা শাখা অফিস ইনচার্জ এবং ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেডের পরিচালক (এডমিন) জর্জ মিথুন রায় এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমরা তারিকুল ইসলামকে ইউকেতে (যুক্তরাজ্যে) পাঠিয়েছি। সেখানে স্পন্সরশিপ এবং জব গ্যারান্টির চুক্তি ছিল। সে অনুযায়ী তিনি ইউকেতেও যান। কিন্তু সেখানকার কোম্পানির নিয়ম-নীতি অনুযায়ী তিনি সব শর্ত পূরণ করতে না পারায় চাকরি হয়নি।”

তারিকুল ইসলাম কী কী নিয়ম-নীতি মানেননি, জানতে চাইলে উদাহরণ হিসেবে জর্জ মিথুন রায় বলেন, তাকে (তরিকুল) কোম্পানি থেকে দূরে অন্য শহরে যোগদানের কথা বলা হয় এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি তা করেননি। 

তারিকুল ইসলাম বলছেন, তাকে ইংল্যান্ডের ভেতরে চাকরি দেওয়ার কথা, ওয়েসিস কোম্পানির অবস্থান অক্সফোর্ডে। ওয়েসিসের লাইসেন্সও বাতিল হয়েছে।

ওয়েসিসের বিষয়ে জর্জ মিথুন রায় বলছেন, যুক্তরাজ্যের ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল হওয়ার বিষয়ে তার জানা নেই। 

তবে ইউকেতে যাওয়ার পর তারিকুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে যোগদান করতে না পারার বিষয়টি একাধিকবার তাকে জানিয়েছেন বলে স্বীকার করেন জর্জ মিথুন রায়। 

জর্জ মিথুন রায় বলছেন, তারিকুল ইসলামের চাকরির জন্য তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কোম্পানিতে আবেদন করা হচ্ছে, চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

কোম্পানির নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের বাইরে ভিন্ন ভিন্ন একাউন্টে অর্থ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে জর্জ মিথুন রায় বলেন, ভিশন এবং রং তুলি- এই দুটি ব্যাংক হিসাবও তাদের গ্রুপের।

ফেইথ ওভারসিজের পরিচালক (মার্কেটিং) পরিচয় দিয়ে কামরুল হাসান নামের আরেকজন বলেন, “তারিকুল ইসলামকে আমরা ইউকেতে পাঠিয়েছেন, এটাই তো বাস্তবতা। তো বাংলাদেশে বসে সেখানে চাকরির নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া সম্ভব? সব দায়িত্ব আমাদের না, তারও কিছু দায়িত্ব আছে।”

এই কামরুল ইসলামের পাল্টা অভিযোগ, তারিকুল ইসলাম ইউকেতে দুই বছর ধরে অবস্থান করছেন। কিন্তু ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর থেকেই তিনি বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি নানাভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছেন এবং হয়রানি করছেন। তবে তার চাকরির জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”

কামরুল ইসলামের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা দাবি করে তরিকুল ইসলাম বলেছেন, “আমিই যেখানে বিপদগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী, আমি কীভাবে হুমকি দেব? ফেইথ ওভারসিজ আমার সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করায় আমি মূলত আমার প্রাপ্য বুঝে পাওয়ার চেষ্টা করছি। ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের সঙ্গে মিশিয়ে তারাই আমার সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”

পুলিশের ভাষ্য
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতারণার আশ্রয় নিলে সুনির্দিষ্ট প্রমাণসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেইথ ওভারসিজের বিরুদ্ধে প্রতারণার প্রমাণ থাকলে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

ফেইথের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ 
অনুসন্ধানে ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রতারণার আরো অভিযোগ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। অভিযোগকারীরা বক্তব্য দিয়েছেন।

ফেইথ ওভারসিজ ২০২৩ সালে আহসান হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে যুক্তরাজ্যে পাঠায়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী তাকে কোনো চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন আহসান।  

একইভাবে রুবাইয়া হক, সাদিয়া ইসলাম এবং লিপি বেগম নামে আরো তিনজনকে তারা ইউকেতে ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ার লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার চুক্তিতে পাঠায়। কিন্তু ওই কোম্পানিতে তাদেরও যোগদান করানো হয়নি।

আহসান হোসাইন, রুবাইয়া হক, সাদিয়া ইসলাম এবং তারিকুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে চাকরি না পেয়ে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত জীবন যাপন করছেন। তারা কোনো রকমে ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ডে’ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে (সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা) কাজ করে কোনো রকমে টিকে রয়েছেন।

লিপি বেগম ওয়েসিস প্রাইভেট কেয়ার লিমিটেড নামক কোম্পানিতে চাকরি না পেয়ে অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায়  প্রতারণার দায়ে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন তিনি কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে ইউকে ছেড়ে আয়ারল্যান্ডে তার ভাইয়ের কাছে চলে যান। 

লায়লা বেগমের অভিযোগ, ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেডকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা তাকে ইউকেতে পাঠাতে ব্যর্থ হয়। এমনকি তার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। 

যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা রুবাইয়া হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ফেইথ ওভারসিজ লিমিটেড যুক্তরাজ্যের একটি কাগুজে নামসর্বস্ব ভুয়া কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, সেখানে যাওয়ার পর প্রথম চার মাস ট্রেনিংয়ের নামে তাকে বসিয়ে রাখা হয়। এরপর তিনি যোগদানের জন্য জোর করে ওই কোম্পানিতে গিয়ে বসে থাকতেন। কিন্তু কাজ দেওয়া হতো না। এক পর্যায়ে আট মাস তাকে দিয়ে কাজ করানো হয়। কিন্তু কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। এই কারণে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইউকে হোম অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। 

ফেইথ ওভারসিজের প্রতারণার বিষয়ে রুবাইয়া হক বলেন, প্রতি মাসে ১৬ থেকে ১৭ হাজার পাউন্ড বেতনের চাকরির চুক্তিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নিয়ে তাকে পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো চাকরি তো দেয়নি, বরং সেখানে অনিশ্চিত জীবন যাপন করছেন। 

চাকরি না হওয়ার বিষয়ে একাধিকবার ফেইথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো সমাধান দিতে পারেনি জানিয়ে রবাইয়া হক বলেছেন, “পাঠিয়ে দিয়েছে; এখন আর তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না। এখন ইউকেতে বসে যেমন তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারছি না, তেমনি সেখানে স্বামী-সন্তান থাকায় দেশে ফেরাও সম্ভব হচ্ছে না। এখন তাদের বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।”

ফেইথ ওভারসিজের ভিন্ন ধরনের প্রতারণার শিকার খুলনায় অবস্থানরত শাখাওয়াত হোসেন রিবু বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তাকে কানাডায় পাঠানোর নামে ‘কানাডা এক্সপ্রেস’ এন্ট্রি ভিসার জন্য ৬০ হাজার টাকা নিয়ে ফাইল ওপেন করায়। পরবর্তীতে তাকে ইউরোপের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করানো হয়। বলা হয়, তুরস্কে ৬ মাসের ভোকেশনাল ট্রেনিং শেষে ইউরোপের যেকোনো একটি দেশে পাঠানো হবে। এভাবে ছলে-বলে-কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার কাছ থেকে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে তারা। দুই বছর পার হয়ে গেলেও তারা তাকে কোনো দেশে পাঠাতে পারেনি। 

শাখাওয়াত হোসেন রিবু বলেন, তার আইইএলটিএসের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। যদিও সম্প্রতি তিনি টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিলে তার টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

তবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফেইথ ওভারসিজ তার দুটি বছর নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করে ফেইথের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন শাখাওয়াত। তিনি বলেছেন, এভাবে তার মতো শতাধিক স্টুডেন্ট ফাইল ওপেন করে অনেক টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত র ক ল ইসল ম চ কর র ব যবস থ ২০২৩ স ল র য গ য গ কর ত র ক ল বল ল ইসল ম র র চ কর র র র জন য ন করছ ন র ব ষয়ট ইনচ র জ দ ই বছর ন র পর র পর চ অন শ চ অন য য় ল নদ ন পর ব র পর ত র পর চ ল ক জ কর ইউক ত বলছ ন হওয় র আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধিতে চমক দেখিয়েছে সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। মাত্র চার কার্যদিবসে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬৩ টাকা বা প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তাতে গত ছয় মাসের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার তথ্য পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ছুটির আগে সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৪ টাকা। ঈদের ছুটির পর শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় গত রোববার। ওই দিন বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম সাড়ে তিন টাকা কমেছিল। এর পরের চার দিন মূল্যবৃদ্ধিতে কোম্পানিটি বড় চমক দেখায়। চার দিনেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬৩ টাকা। তাতেই সপ্তাহ শেষে ঢাকার বাজারে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা করে নেয়। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৭৪ টাকায়।

হঠাৎ গত সপ্তাহে কোম্পানিটি মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামনে বছর শেষের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে কোম্পানিটি। গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আর্থিক বছর শেষ হয়েছে। শেয়ারবাজারের নিয়ম অনুযায়ী, বিমা খাতের কোম্পানি ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিন বা চার মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন করতে হয়। সাধারণত পরিচালনা পর্ষদের যে সভায় বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়, সেই সভা থেকেই বছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ম অনুযায়ী, হাইডেলবার্গ সিমেন্টকে চলতি মাসের মধ্যে ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশের ঘোষণা দিতে হবে। এই ঘোষণা সামনে রেখে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

* চলতি মাসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে হবে কোম্পানিটিকে।
* সিমেন্ট খাতের ৭ কোম্পানির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার।
* ছয় মাসের মধ্যে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ, ২৭৪ টাকা।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ স্ক্যান ও রুবি ব্র্যান্ডের সিমেন্ট বাজারজাত করে থাকে। শেয়ারবাজারে সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামি শেয়ার। ঢাকার শেয়ারবাজারে বর্তমানে দেশি-বিদেশি সাতটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দেশীয় মালিকানাধীন আর বাকি দুটি বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি। সিমেন্ট খাতের দেশীয় কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর গণনা হয় দেশের অর্থবছরের সঙ্গে সংগতি রেখে, অর্থাৎ জুলাই-জুনকেন্দ্রিক। আর বিদেশি কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর মূলত ক্যালেন্ডার বছর বা জানুয়ারি-ডিসেম্বরকেন্দ্রিক।

গত বছরের প্রথম ৯ মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ৪১ কোটি টাকার মুনাফা করেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ কোটি টাকা কম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৫১ কোটি টাকা। গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ বিক্রি বা ব্যবসা কমে যাওয়া। গত বছরের প্রথম ৯ মাসে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটি ব্যবসা কমেছে ২৭১ কোটি টাকার। একদিকে ব্যবসা কমেছে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই কারণে মুনাফা কমে গেছে।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসের মধ্যে শেষ ৩ মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি লোকসান করেছে। ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০ লাখ টাকা। এক প্রান্তিকে লোকসানের পরও আগের দুই প্রান্তিকের মুনাফার কারণে এটি শেষ পর্যন্ত মুনাফার ধারাতেই ছিল।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি আড়াই টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তার আগের বছর এই লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল নগদ ১০ শতাংশ। এখন শেয়ারধারীরা অপেক্ষায় আছেন গত বছরের লভ্যাংশের জন্য। যে লভ্যাংশ সামনে রেখে কোম্পানির শেয়ারের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে গত সপ্তাহে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটি মাঝারি মূলধনের একটি কোম্পানি। কোম্পানিটির মূলধন ৫৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে এটির শেয়ারের প্রায় ৬১ শতাংশেরই মালিকানায় ছিলেন উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা। বাকি ৩৯ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৬ শতাংশ রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারধারণ-সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারধারীর সংখ্যা ছিল মোট ১০ হাজার ১৯১ জন। এর মধ্যে ৯ হাজার ৯১৭ জন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, যাঁদের হাতে কোম্পানিটির ৫ হাজারের কম শেয়ার রয়েছে। এসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির মোট শেয়ারের প্রায় ৬ শতাংশ ধারণ করেন। আর ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ২২৬ জন। ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ শেয়ার রয়েছে এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৩৮ জন। আর ২ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত শেয়ার রয়েছে ৮ জন বিনিয়োগকারীর হাতে। ৫ লাখ থেকে ১ কোটি শেয়ার ধারণ করেন এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ৬ জন। এক কোটির বেশি শেয়ার রয়েছে শুধু কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্রামে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনা
  • গাজা সিটির একমাত্র সচল হাসপাতালে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
  • গাজায় এ পর্যন্ত ৩৫টি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ইন্টারনেটের ব্যবহার কম উৎপাদনশীল খাতে
  • হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা