ঢাবিতে আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা না হওয়া নিয়ে যা জানা গেল
Published: 14th, March 2025 GMT
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক টানা ৮ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের অনেকে চেয়েছিলেন সেই ক্যাম্পাসে তার অন্তত একটি জানাজা হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাস বা শহীদ মিনারে আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আরেফিন সিদ্দিকের শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক ফাহমিদুল হক ফেসবুকে এক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উপাচার্য ছিলেন। তার ঢাবি ক্যাম্পাসে জানাজা না হওয়া খুব খারাপ দৃষ্টান্ত হলো। ভবিষ্যতে কারও কারও ভাগ্যে একই ঘটনা ঘটবে। ‘পরিবার চায়নি’ একটা চালাকির কথা। পরিবার কেন চায়নি, সেটা বুঝতে পারলে আসল বিষয় বোঝা যাবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘প্রয়াত অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং দুই বারের উপাচার্য। তার জানাজার নামাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হওয়াটাই কাম্য ছিলো। সেখানে ছাত্র-শিক্ষকরা তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। কিসের নিরাপত্তার অভাবে তা করা গেলো না বুঝতে পারছি না। এই পৃথিবীতে তো আরেফিন স্যার আর বিচরণ করবেন না। আল্লাহ সবাইকে সহনশীল হওয়ার তাওফিক দিন।’
এদিকে শুক্রবার গ্রিন রোড এলাকায় বায়তুল আকসা মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, আরেফিন সিদ্দিকের দুটি জানাজার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে না। তবে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বিশেষ দোয়া হবে।
আরেফিন সিদ্দিকের ছোট ভাই সাইফুল্লাহ সিদ্দিক তুহিন বলেন, জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা করার পরিকল্পনা ছিল। ঝুঁকি থাকায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।
রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক। ৬ মার্চ ইফতার কেনার জন্য ঢাকা ক্লাবে (রমনায়) গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার মধ্যেই পড়ে যান এই শিক্ষক। তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা শুরুর পর অধ্যাপক আরেফিনকে নিউরো আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এর পর থেকে তিনি সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
তিনটি জানাজা শেষে শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হলো অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ। বাবা–মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর ফ ন স দ দ ক র উপ চ র য পর ব র মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
হুমকি না থাকলেও বর্ষবরণে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এ উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি না থাকলেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতেও গোয়েন্দা নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র্যাবের সব সদস্য নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন।
সকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, র্যাব সারা দেশে ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট ২৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।”
ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা/এমআর/ইভা