মাত্র চার দিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে ফের ডাকাতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড় টার দিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে যমুনা সেতু পশ্চিম থানার অদূরে সয়দাবাদ গোল চত্বর এলাকায় সাসেক-২ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতারের বেসক্যাম্পে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাউথ এশিয়া রিজিওনাল কর্পোরেশন-২ (সাসেক-২) সংযোগ সড়ক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতারের প্রধান প্রকৌশলী একলাছ উদ্দিন জানান, ৮/১০ জনের ডাকাত দল গতরাত দেড়টার দিকে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে সয়দাবাদে আমাদের প্রকল্প এলাকার বেসক্যাম্পে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে। নিরাপত্তাকর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রকল্পের গাড়ির ব্যাটারি ও মূল্যবান যন্ত্রাংশসহ আড়াই লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমার সিকিউরিটি ইনচার্জ আবুল মাসুদ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। জমা দেওয়ার পর সদর থানার ওসি ফোর্স নিয়ে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে, গত রোববার রাতে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কোনাবাড়ি এলাকায় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা-রাজশাহীগামী জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের মাইক্রেবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে একই মহাসড়কের যাত্রীবাহী দুটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে গত ৫ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এদিকে, গত ৬ মার্চ রাতে ১৪ টন রড বোঝাই একটি ট্রাক ডেমরা থেকে বগুড়ার শেরপুর যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনায় ডাকাতির কবলে পড়ে। ৬/৭ জনের একদল ডাকাত মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গরু বোঝাই ট্রাক নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কামারখন্দে বিকল হলে ডাকাতির কবলে পড়ে। অল্প দিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে যানবাহনে পর পর চারটি ডাকাতি হওয়ায় ঢাকা-উত্তরাঞ্চলের চালক-যাত্রীদের কাছে এই সড়ক এখন আতঙ্কের নাম।
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম দুপুরে বলেন, ঘটনাটি আমার থানার পার্শ্ববর্তী হলেও ভৌগোলিক সীমারেখা সদর থানার মধ্যে পড়েছে। খবর পেয়ে সকালে সেখানে গিয়েছিলাম। সদর থানায় অভিযোগ দিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সদর থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আদালতের ভেতরে পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আটক
পাবনায় আদালতের ভেতরে শুনানি চলাকালে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেওয়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের ফতে মোহাম্মদপুর নিউ কলোনী এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে আওয়াল কবির (৩৮), হাবিবুর রহমানের ছেলে সরোয়ার জাহান শিশির (৩৩), দাশুড়িয়া গ্রামের মৃত আমজাদ খানের ছেলে কালাম খান (৪০), এম এস কলোনী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৩), লোকোসেড গাউছিয়া মসজিদ এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে সবুজ হোসেন (৩৫) এবং ভাঁড়ইমারী বাঁশেরবাদা গ্রামের মৃত আব্দুল গাফফার সরদারের জহুরুল ইসলাম (৩৫)।
তাদের মধ্যে আওয়াল কবির ঈশ্বরদী পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান শিশির পৌর ছাত্রদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী, কালাম খান দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রুবেল হোসেন পৌর ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এবং জহুরুল ইসলাম ডালিম সলিমপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ঈশ্বরদীতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সময় নাশকতা একটি মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় আটককৃতরা হাজিরা দিতে এসেছিলেন। হাজিরা চলা অবস্থায় তারা এজলাসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকেন। এসময় সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য শাহ আলম তাদের ছবি তুলতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন ওইসব নেতাকর্মীরা।
এসময় আদালতের আইনজীবী ও উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করেন এবং হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আদালতের শুনানি শেষে তাদের আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিদর্শক ( কোর্ট ইন্সপেক্টর) রাশেদুল ইসলাম জানান, সঙ্গে সঙ্গে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আইনজীবী মাসুদ খন্দকার বলেন, “আদালতের এসলাসে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়ার মত নয়। বিএনপির কেউ যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শাহীন/এস