এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়ি থেকে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা উদ্ধার
Published: 14th, March 2025 GMT
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) এক প্রকৌশলী কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সদরের চলনবিল গেট এলাকায় তল্লাশির সময় একটি প্রাইভেট কার থেকে এসব টাকা জব্দ করা হয়।
ওই প্রকৌশলীর নাম ছাবিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানা-পুলিশ ও সেনাসদস্যরা যৌথভাবে গতকাল রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের যানবাহন তল্লাশি করছিলেন। রাত ২টার দিকে বগুড়া থেকে নাটোর অভিমুখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির সময় গাড়ির পেছনের ডালায় বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে পান। এ সময় গাড়িতে থাকা আরোহী ছাবিউল ইসলাম নিজেকে গাইবান্ধা জেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয় দেন। তখন ওই ব্যক্তিকে ও তাঁর গাড়ির চালকসহ সিংড়া থানায় নিয়ে যান। এর আগে ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে ইউএনও ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে পুলিশ টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাবিউল ইসলাম জানান, গাড়িতে ৩০ লাখ টাকা আছে। এসব টাকা তাঁর জমি বিক্রির টাকা। তবে টাকাগুলো গুনে দেখা যায়, গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা রয়েছে। এত টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে রাতের আঁধারে গাড়িতে করে কেন নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। পরে জব্দ তালিকা মূলে টাকা ও গাড়ি থানা হেফাজতে রাখা হয়। এ সময় আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাবিউল ইসলাম ও তাঁর চালককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
ছাবিউল পুলিশকে জানিয়েছেন, জব্দ করা এসব অর্থ তাঁর জমি বিক্রি করা টাকা। তিনি টাকাগুলো গাইবান্ধা থেকে নিয়ে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে রাজশাহীতে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, জব্দ করা অর্থের উৎস ও ওই প্রকৌশলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য টাকা, প্রাইভেট কার ও এর বাহককে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও
বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ জেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জালিয়াঘাটাস্থ সরল ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন জেলেরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই ইউপি কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জেলেরা সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে ৬৯১ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি করে ৩৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার ২৬ টন চাল উত্তোলন করে বাকি চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল ইসলাম নামের এক জেলে। রোববার জেলেদের চাল বিতরণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে কয়েকশ জেলে পরিষদে চাল নিতে গেলে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।
জেলে নুরুল ইসলাম জানান, জেলেদের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একবার ৩২ কেজি চাল দিয়ে বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে অনেক জেলে সেই ৩২ কেজিও পাননি। চাল না পেয়ে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সরল ইউনিয়নের জেলে মনির উদ্দিন, মোহাম্মদ তৈয়ব, বাবুল দাশ, আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ হাসানের ভাষ্য, মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও কাউকে কাউকে ২৮ কেজি ও ৩২ কেজি চাল দেন। অধিকাংশ জেলেকে চাল না দিয়ে ফেরত দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফের চাল অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারকে অনিয়ম দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন সরল থেকে বদলি করা ইউপি সচিব হারুন। কিছু দিন অরুণ জয় ধর নামে শীলকূপ ইউনিয়নের সচিবকে সরল ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে রহিম উল্লাহ নামে একজনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও পাসওয়ার্ডসহ পুরো নিয়ন্ত্রণ হারুনের হাতে। সরলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেকে সরকারের একজন সচিবের চাচি বলেও পরিচয় দিচ্ছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার জানান, জেলেদের জন্য তিনি ২৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৮ কেজি করে দিয়েছেন। যেসব জেলে এখনও চাল পাননি, তারাও চাল পাবে। সেলিম নামে একজন ইউপি সদস্য লোকজনকে উস্কে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, সরল ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।