দোল পূর্ণিমা বা দোল উৎসবকে রঙের উৎসবও বলা হয়। চেনা-পরিচিতদের মধ্যে রং খেলতে গিয়েও অনেক সময় হেনস্তার শিকার হন নারীরা। পরিচিত হলেই কি অনুমতি ছাড়া কারো শরীরে রং মাখানো যায়? এসব বিষয়ে কথা বলেছেন ভারতীয় কয়েকজন তারকা অভিনেত্রী।

‘চালচিত্র’খ্যাত অভিনেত্রী তানিকা বসু মনে করেন, “রং মাখানোর আগে অবশ্যই অনুমতি নেওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, সেই ব্যক্তি রং খেলায় যোগ দিতে চান কি না, সেটাও আগে জানা উচিত। শুধু রং খেলা নয়। এই দিনে অনেকে জোর করে মাদক খাইয়ে দেয়। গায়ে হাত দেওয়ার মতো এটাও ঘটে থাকে। কোনোটাই ঠিক নয়। ‘বুরা না মানো হোলি হ্যায়’ (কিছু মনে করো না, দোলের দিন এমনটা হয়েই থাকে) এই বিষয়টাই আমি পছন্দ করি না। এই ধারণাটাই বদলানো দরকার।”

বাসে-ট্রেনে বা রাস্তায় প্রায়ই আপত্তিকর স্পর্শের অভিজ্ঞতা রয়েছে অনেক নারীর। অভিনেত্রী তানিকাও ব্যতিক্রম নন। তবে দোলের সময়ে অনুমতি ছাড়া কাউকে রং মাখানোর অনুমতি দেন না। এসব তথ্য উল্লেখ করে তানিকা বলেন, “কলেজে পড়ার সময়ে আমার ইচ্ছে হতো দোল খেলতে। কিন্তু বাবা অনুমতি দিতেন না। পরে বড় হয়ে বুঝেছি, বাবা হয়তো ঠিকই বলতেন। আমারও দোল খেলা নিয়ে আগ্রহ কমতে থাকে। এখন তো অন্য দিনের মতোই দোলের দিনটা কাটাই। বড়জোর বন্ধুরা একসঙ্গে হয়ে সামান্য আবির খেলা হয়।”

আরো পড়ুন:

গল্প ভালো হলে ভিলেনও সিনেমা দাঁড় করাতে পারে: জিৎ

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিনেত্রী

বাবা কেন দোল খেলার অনুমতি দেননি? এ প্রশ্নের জবাবে তানিকা বলেন, “আমি খুবই রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছি। পরিবারেও কাউকে খেলতে দেখিনি। অনেক কিছুতেই আমি অনুমতি পাইনি। হয়তো রং খেলা তেমন নিরাপদ নয় বলেই বাবা নিষেধ করতেন। তবে আমার কোনো আক্ষেপ নেই।”

‘ব্যোমকেশ বক্সি’খ্যাত অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী দোল খেলেন। তবে তার জীবনে কী কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে? জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “দোল খেলতে গিয়ে আমার কোনো অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হয়নি। কারণ আমরা খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা মিলে নিরাপদ পরিসরে রং খেলি। ছোটবেলায় কাদা দিয়ে দোল খেলা হতো। কিন্তু এখন বড় হয়ে সেই প্রশ্ন তো ওঠেই না। তবে রং খেলতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার মুখে অনেক মেয়েই পড়েছেন। সেটা তো একেবারেই অনভিপ্রেত। রং খেলার নাম করে কেউ স্পর্শ করে গেল, এটা তো হতে পারে না।”

রং মাখানোর আগে অবশ্যই অনুমতি প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। তার মতে— “বন্ধু হলেও তাকে অনুমতি নিতে হবে।”

ব্যাখ্যা করে রূপাঞ্জনা মিত্র বলেন, “অনেকেরই রং নিয়ে আতঙ্ক থাকে। একটা সময়ে দোলের দিন রাস্তায় বের হলেই বেলুন ছোড়া হতো। সম্মতির কথা কেউ ভাবত না। তবে সেই সময়টা আমরা পার করে এসেছি। ‘বুরা না মানো হোলি হ্যায়’ বলে রং ছুড়ে দেওয়া যায় না।”

দোল খেলতে অভ্যস্ত রূপাঞ্জনা। অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, “কয়েকটা পার্টিতে গিয়ে দেখেছি, আবহাওয়া তেমন সুস্থ থাকে না। যদিও সরাসরি আমার সঙ্গে কোনো খারাপ ঘটনা ঘটেনি। তবে হোলি পার্টিতে গিয়ে রং খেলার মতো মানুষ আমি নই। বরং এ ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলি।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে প্রবৃদ্ধি কমলেও বৈশ্বিক মন্দার ঝুঁকি নেই: আইএমএফ

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও এ কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে এক পূর্বাভাসে এ কথা জানায়।

আইএমএফ বলেছে, বাণিজ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বব্যাপী শেয়ারের দাম কমেছে। দেশগুলোর আস্থায় ফাটল ধরার বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি।

আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘পূর্বাভাস অনুযায়ী, আমাদের নতুন প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নমুখী হবে। কিন্তু এতে মন্দা দেখা দেবে না।’

গতকাল আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় ‘সব দেশকে অবশ্যই নিজেদের ঘর সামলানোর প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে’।

ইউরোপের উদ্দেশে জর্জিয়েভা বলেন, ‘পরিষেবার বেলায় অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের বিধিনিষেধ’ কমাতে হবে এবং একক বাজারকে ‘গভীর’ করতে হবে।

২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নানা হারে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ন্যূনতম বা সর্বজনীন শুল্ক। এটি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হয়। অন্যদিকে নতুন উচ্চ শুল্ক ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন হঠাৎ তা চীন ছাড়া বিশ্বের বাকি দেশগুলোর জন্য ৯০ দিন মেয়াদে স্থগিত করেন তিনি।

চীনের বিষয়ে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পরামর্শ, দেশটিকে সামাজিক সুরক্ষার জাল বাড়াতে হবে, যাতে মানুষ কম ‘সতর্কতামূলক সঞ্চয়’ করে।

অন্যদিকে মার্কিন সরকারকে ঋণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন জর্জিয়েভা।

২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নানা হারে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ন্যূনতম বা সর্বজনীন শুল্ক। এটি ঘোষণার দিন থেকেই কার্যকর হয়। অন্যদিকে নতুন উচ্চ শুল্ক ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন হঠাৎ তা চীন ছাড়া বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য ৯০ দিন মেয়াদে স্থগিত করেন তিনি। পরে চীনসহ সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার, মুঠোফোনসহ যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানিতে ঘোষিত পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার করে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার সঙ্গে বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস নামে। সে ধস এখনো কাটেনি। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অর্থনীতিবিষয়ক কোনো কোনো সংস্থা। এই অনিশ্চয়তার মুখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যয় ও বিনিয়োগ কমাতে শুরু করেছে। কিছু দেশ নিজেদের মতো করে ট্রাম্পের শুল্ক মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, আমাদের নতুন প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নমুখী হবে। কিন্তু এতে মন্দা দেখা দেবে না। —ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক

গত বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) পূর্বাভাসে বলেছে, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে চলতি বছর বিশ্ববাণিজ্য কমবে।

এরপর যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও একই ধরনের মন্তব্য করে। তারা বলেছে, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ঝুঁকির উপাদান বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এ পরিস্থিতি আর্থিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছে।

গতকাল ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) বলেছে, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে তারা মূল সুদের হার কমিয়েছে।

এসব পূর্বাভাসের তুলনায় আইএমএফের সতর্কতাকে কিছুটা কম ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হয়।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি: মন্দার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শঙ্কাচীনের যেভাবে ট্রাম্পের শুল্কের জবাব দেওয়া উচিতট্রাম্পের শুল্কাঘাত মোকাবিলায় আসিয়ানের যা করা উচিত১৮ ঘণ্টায় কী ঘটেছিল, যা ট্রাম্পকে শুল্কনীতি স্থগিত করতে বাধ্য করেছিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ